free tracking

হাসিনা পালানোর পর শিক্ষক দম্পতির কর্মকাণ্ড ঘিরে বিতর্ক!

মাদারীপুরের ডাসার উপজেলার শশিকর শহীদ স্মৃতি মহাবিদ্যালয়ের অধ্যক্ষ দুর্লভানন্দ বাড়ৈ এবং তার স্ত্রী, সমাজকর্ম বিভাগের প্রভাষক চম্পা রানী মন্ডলের বিরুদ্ধে গুরুতর অভিযোগ উঠেছে। অভিযোগ মতে, তারা বছরের অধিকাংশ সময় ভারতের পশ্চিমবঙ্গে বসবাস করেও কলেজ থেকে নিয়মিত বেতন-ভাতা উত্তোলন করছেন।

স্থানীয়দের দাবি, এই শিক্ষক দম্পতি ভারতের পশ্চিমবঙ্গের কল্যাণীতে একটি বাড়ি কিনেছেন এবং সেখানেই দীর্ঘ সময় ধরে বসবাস করছেন। স্বৈরাচার হাসিনার পতনের পর অধ্যক্ষ ও তার স্ত্রী ভারতে চলে যান। কিছুদিন পর অধ্যক্ষ দুর্লভানন্দ বাড়ৈ দেশে ফিরলেও তার স্ত্রী এখনো ভারতেই অবস্থান করছেন। যাওয়ার আগে চম্পা মন্ডল চেকে স্বাক্ষর করে রেখে যান, যার মাধ্যমে পরবর্তীতে নিয়মিত বেতন-ভাতা উত্তোলন করা হচ্ছে।

তবে অধ্যক্ষ দুর্লভানন্দ বাড়ৈ এসব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। তিনি জানিয়েছেন, তার স্ত্রী বর্তমানে মেডিকেল ছুটিতে ভারতে রয়েছেন এবং দুই দফায় তিনি ৬ মাস ছুটি নিয়েছেন। তার দাবি, সবকিছুই নিয়ম অনুযায়ী চলছে।

সংশ্লিষ্ট একাধিক সূত্রে জানা গেছে, অনিয়ম, নিয়োগ বাণিজ্য ও প্রশাসনিক দুর্নীতির অভিযোগে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের তদন্তে সত্যতা পাওয়ায় গত ১৮ মার্চ মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তর (মাউশি) থেকে উভয়ের এমপিও (মান্থলি পে অর্ডার) বাতিল করা হয়। আদেশে স্বাক্ষর করেন মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের সিনিয়র সহকারী সচিব দীপায়ন দাস শুভ। অধ্যক্ষ দুর্লভানন্দ বাড়ৈ ভারতে থাকাকালীন কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন বিমল পান্ডে।

কলেজের কয়েকজন শিক্ষক জানিয়েছেন, এই দম্পতি কলেজ গভর্নিং বডি ও প্রশাসনিক মহলের সঙ্গে সম্পর্ক গড়ে তুলে দীর্ঘদিন ধরে অনিয়ম চালিয়ে যাচ্ছেন। তাদের এই কার্যক্রমে অফিস সহায়ক সজল সরকার সহযোগিতা করছেন বলেও অভিযোগ উঠেছে।

নবগ্রাম ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি ও স্থানীয় বাসিন্দা প্রেমান্দ সরকার বলেন, দুর্লভানন্দ বাড়ৈ চাকরি নিয়েছেন অনিয়ম করে। তিনি ভারতের কল্যাণীতে বাড়ি করেছেন। সেখানেই তার স্ত্রী সন্তানরা রয়েছে। অথচ বেতন তুলছেন বাংলাদেশে। নাম মাত্র মেডিকেল ছুটি নিয়েছেন। বেসরকারি কলেজে এক মাসের বেশি ছুটি হয় না। অথচ তিনি ছুটি নিয়েছেন ৬ মাসের।

ডাসার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সাইফ-উল আরেফীন জানিয়েছেন, তদন্ত করে অভিযোগ প্রমাণিত হলে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এই ঘটনা দেশের শিক্ষা খাতের স্বচ্ছতা এবং জবাবদিহিতা নিয়ে নতুন করে প্রশ্ন তুলেছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *