free tracking

গোপলগঞ্জে হামলার গোপন কারণ জানালেন মির্জা গালিব!

জুলাই অভ্যুত্থানের মাধ্যমে ক্ষমতাচ্যুত ফ্যাসিবাদী শক্তির বিচার ও জবাবদিহি নিশ্চিত করা না গেলে তারা আবারও ফিরে আসবে এবং সম্প্রতি গোপালগঞ্জে ঘটে যাওয়া সহিংসতার পুনরাবৃত্তি সারা দেশে ঘটাবে বলে তীব্র আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন হাওয়ার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী অধ্যাপক ও রাজনৈতিক বিশ্লেষক মির্জা গালিব। তিনি বলেছেন, “এই ফ্যাসিবাদ যারা তৈরি করেছিল, তাদের যদি আমরা একটি ন্যায়বিচারের মধ্য দিয়ে না নিতে পারি, তাদের জবাবদিহি যদি নিশ্চিত করতে না পারি, তাহলে তারা আজকে গোপালগঞ্জে যা করেছে, সারা বাংলাদেশকে আগামী দিনে গোপালগঞ্জ বানিয়ে ফেলবে।”

জাতীয় প্রেসক্লাবে জুলাই অভ্যুত্থানের প্রথম বর্ষপূর্তি ও শহীদ আবু সাঈদের প্রথম শাহাদাতবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে তিনি এই মন্তব্য করেন।

মির্জা গালিব বলেন, ক্ষমতাচ্যুত রাজনৈতিক শক্তির মধ্যে কোনো অনুশোচনা বা সমঝোতার মনোভাব দেখা যাচ্ছে না। তিনি গণমাধ্যমের ভূমিকার সমালোচনা করে বলেন, গোপালগঞ্জের হামলার খবর এমনভাবে প্রকাশ করা হচ্ছে যেখানে হামলাকারী কারা, তা স্পষ্ট করা হচ্ছে না। তিনি একটি পত্রিকার শিরোনামের উদাহরণ দিয়ে বলেন, “হেডলাইনে লেখা হয়েছে, ‘এনসিপি নেতাকর্মীদের ঘিরে হামলা’। কিন্তু কারা হামলা করেছে, সেই কর্তা বা সাবজেক্ট সেখানে অনুপস্থিত। এই আড়াল করার রাজনীতির মধ্য দিয়েই গত ১৬ বছরে দেশে ফ্যাসিবাদ তৈরি হয়েছে।”

জুলাই অভ্যুত্থানের এক বছর পূর্তিতে হতাশা প্রকাশ করে মির্জা গালিব বলেন, “আমরা হাজারো মানুষের রক্তের বিনিময়ে যে স্বাধীনতা পেয়েছি, সেই স্বাধীনতার এক বছর পেরিয়ে গেলেও এখন পর্যন্ত শহীদ ও আহতদের পূর্ণাঙ্গ তালিকা হয়নি, জুলাইয়ের ঘোষণাপত্র চূড়ান্ত হয়নি এবং বিচার প্রক্রিয়াও খুব বেশি এগোয়নি।”

তিনি আরও বলেন, গণঅভ্যুত্থানের পর দুটি প্রধান লক্ষ্য ছিল— একটি হলো সুষ্ঠু নির্বাচনের মাধ্যমে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার এবং অপরটি হলো ফ্যাসিবাদী সিস্টেমের কাঠামোগত সংস্কার। তিনি আশঙ্কা প্রকাশ করে বলেন, “রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে সংস্কার নিয়ে অনৈক্য দেখা যাচ্ছে। সংসদের উচ্চকক্ষ বা আনুপাতিক প্রতিনিধিত্বের মতো গুরুত্বপূর্ণ সংস্কারের প্রশ্নে মতবিরোধের কারণে জাতীয় ঐক্য ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।”

তিনি সতর্ক করে বলেন, “যদি জাতীয় স্বার্থকে সবকিছুর ঊর্ধ্বে স্থান না দেওয়া হয়, তাহলে গণঅভ্যুত্থানের স্বপ্ন ব্যর্থ হবে।” তিনি ফ্যাসিবাদী ব্যবস্থার পুরোপুরি অবসানের জন্য সাংবিধানিক ও প্রাতিষ্ঠানিক সংস্কারের উপর জোর দেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *