free tracking

বয়স বাড়লে খিটখিটে মেজাজ? মহিলাদের রাগের কারণ জানালেন গবেষকেরা!

সাধারণ কথাবার্তাতেই অনেকে রেগে যান হঠাৎ, আর বয়স বাড়ার সঙ্গে সেই রাগ যেন আরও তীব্র হয়ে ওঠে—বিশেষ করে মহিলাদের ক্ষেত্রে এমন প্রবণতা বেশি দেখা যায়। যুক্তরাষ্ট্রের সিয়াটেলের ইউনিভার্সিটি অফ ওয়াশিংটনের স্কুল অফ নার্সিং-এর গবেষকেরা জানিয়েছেন, নারীদের রাগ হওয়ার প্রবণতা পুরুষদের তুলনায় বেশি, এবং বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে মেজাজে খিটখিটে ভাবও যুক্ত হয়।

গবেষণায় দেখা গেছে, বিশেষ করে রজোনিবৃত্তির সময় নারীদের মধ্যে আচরণগত ও মানসিক পরিবর্তন ঘটে, যার পেছনে অন্যতম বড় কারণ হল হরমোন ইস্ট্রোজেনের ওঠানামা। এ সময় অনেকেই অতিরিক্ত অস্থির হয়ে পড়েন এবং তুচ্ছ বিষয়েও তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখান।

তবে শুধু হরমোন নয়, রাগের পেছনে আরও বেশ কিছু সামাজিক ও মানসিক কারণও দায়ী। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, পারিবারিক দায়িত্ব, কর্মক্ষেত্রের চাপ, নিজের ইচ্ছা ও চাহিদা পূরণে ব্যর্থতা থেকে হতাশা জন্মায়। ক্লান্তি ও দুশ্চিন্তা মিলেই মন খারাপ বা রাগের কারণ হতে পারে। বিশেষ করে পরিবারের বয়স্ক সদস্যদের নিয়ে দুশ্চিন্তা, সন্তানের ভবিষ্যৎ নিয়ে উদ্বেগ এবং নিজের জন্য সময় না পাওয়াটাও একে আরও বাড়িয়ে তোলে।

মনোবিদদের মতে, সময়মতো রাগ নিয়ন্ত্রণ না করা গেলে তা মানসিক ও শারীরিক স্বাস্থ্যে নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে। বিশেষ করে রাগের কারণে উচ্চ রক্তচাপ, অনিদ্রা বা হজমের সমস্যাও দেখা দিতে পারে।

তাই মনোবিদ্যার ভাষায় ‘অ্যাঙ্গার ম্যানেজমেন্ট’ বা রাগ নিয়ন্ত্রণ শেখা খুব জরুরি। এর জন্য কিছু কার্যকর উপায় উল্লেখ করেছেন বিশেষজ্ঞরা—

রাগের কারণ চিহ্নিত করুন: কী কী পরিস্থিতিতে আপনি বেশি রেগে যান, তা খতিয়ে দেখুন।

রাগ জমিয়ে না রেখে প্রকাশ করুন: নিজের মনের কথা বলা প্রয়োজনে কাউন্সেলরের সাহায্য নেওয়াও কার্যকর হতে পারে।

রাগের পরিস্থিতি এড়িয়ে চলুন: যদি দেখেন কোনও পরিস্থিতি আপনার রাগ বাড়িয়ে তুলছে, সেখান থেকে নিজেকে সরিয়ে ফেলুন।

নিজের জন্য সময় রাখুন: প্রতিদিন কিছুটা সময় একান্ত নিজের জন্য রাখুন, যা মানসিক প্রশান্তি আনবে।

শরীরচর্চা ও ধ্যান: নিয়মিত হাঁটাহাঁটি, যোগব্যায়াম বা ধ্যান রাগ নিয়ন্ত্রণে সহায়ক।

সমস্যার সমাধানে মনোযোগ দিন: কীভাবে সমস্যার সমাধান হবে, তা ভাবুন। অকারণে অভিযোগ বা সমালোচনা না করে নিজের পছন্দ-অপছন্দ স্পষ্টভাবে জানানো ভালো।

মনোবিদদের মতে, রাগের সমস্যা মানেই দুর্বলতা নয়। বরং তা বুঝে ও সঠিক পদ্ধতিতে মোকাবিলা করাই হলো মানসিক পরিপক্কতার চিহ্ন। বিশেষ করে নারীদের ক্ষেত্রে এই সচেতনতা তাদের ব্যক্তিগত ও পারিবারিক জীবনে ইতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে।

সূত্র: আনন্দবাজার।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *