free tracking

মেয়েকে আনতে গিয়ে লাশ হয়ে ফিরলেন উম্মে হাবিবা রজনী!

মেয়েকে স্কুল থেকে আনতে গিয়েছিলেন মেহেরপুরের গাংনী উপজেলার মেয়ে উম্মে হাবিবা রজনী। কিন্তু ঢাকার দিয়াবাড়িতে মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজে বিমান বিধ্বস্তের ঘটনায় বাড়ি ফিরেছেন তিনি নিথর দেহ হয়ে।

মঙ্গলবার (২২ জুলাই) ভোর ৪টার দিকে হাবিবার মরদেহ যখন বাবার বাড়ি—গাংনীর মটমুড়া ইউনিয়নের বাওট গ্রামের স্কুলপাড়ায় পৌঁছায়, চারদিক ভরে ওঠে কান্নার রোল ও শোকের ভারে। পরিবার-পরিজন ও প্রতিবেশীদের আহাজারিতে ভারি হয়ে ওঠে পুরো এলাকা।

শিক্ষার্থীদের আইডি কার্ডে অভিভাবকের নম্বর যুক্ত করা ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে অগ্নিনির্বাপক ব্যবস্থা নিশ্চিত করার নির্দেশ হাইকোর্টের
পরে সকাল ৯টার দিকে কুষ্টিয়ার দৌলতপুর উপজেলার সাজিপুর গ্রামে স্বামীর বাড়িতে তাকে দাফন করা হয় বলে জানান স্বামী জহুরুল ইসলাম।

৩৭ বছর বয়সী উম্মে হাবিবা ছিলেন মটমুড়া ইউনিয়ন বিএনপির নেতা আবদুল হামিদের মেয়ে। স্বামী জহুরুল ইসলামের সঙ্গে তিনি উত্তরার ৪ নম্বর সেক্টরের একটি ভাড়া বাসায় বসবাস করতেন। জহুরুল একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে চাকরির পাশাপাশি টাইলসের ব্যবসা করেন।

তাদের একমাত্র সন্তান, ১২ বছর বয়সী ঝুমঝুম খাতুন মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজের পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থী।

ঘটনার দিন সম্পর্কে জহুরুল ইসলাম বলেন, “রান্না শেষে মেয়েকে আনতে রওনা হওয়ার আগে হাবিবা বলেছিল, ‘ফিরে এসে একসঙ্গে খাবো’। প্রতিদিনের মতো সেদিনও আমাদের একসঙ্গে দুপুরের খাবার খাওয়ার কথা ছিল। কিন্তু সে আর ফিরল না… মেয়েকে নিয়ে ফিরতে গিয়েও সে নিজেই আর ফিরল না।”

“স্কুলে পৌঁছে মেয়েকে নেয়ার জন্য অপেক্ষা করছিল হাবিবা। ঠিক তখনই হঠাৎ করে একটি প্রশিক্ষণ বিমান ভেঙে পড়ে স্কুল ভবনের ওপর। আগুনে মারাত্মকভাবে দগ্ধ হন তিনি। দ্রুত সিএমএইচের বার্ন ইউনিটে নেয়া হলে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যু হয় তার। এখন আমাদের ডাইনিং টেবিলে শুধু হাহাকার।”

তিনি আরও জানান, “মেয়ে ঝুমঝুমও গুরুতর আহত হয়েছিল। তবে সৌভাগ্যক্রমে প্রাণে বেঁচে গেছে। তাকে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে।”

হাবিবার মৃত্যুতে বাওট গ্রামে নেমে এসেছে শোকের ছায়া। প্রতিবেশীরা বলছেন, রজনী ছিলেন অমায়িক, স্নেহশীলা ও সদালাপী। তার এমন মর্মান্তিক মৃত্যু পুরো এলাকাবাসীকে স্তব্ধ করে দিয়েছে।

গাংনী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) বনি ইসরাফিল জানান, ঢাকার মর্মান্তিক বিমান দুর্ঘটনায় নিহত এক ছাত্রীর মায়ের মরদেহ অ্যাম্বুলেন্সে করে গ্রামে আনা হলে শান্তিপূর্ণ জানাজার জন্য অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *