free tracking

শিক্ষিকা মাহেরীনকে নিয়ে অবাক করা তথ্য দিলেন তার সহপাঠী!

সোমবার ঢাকার উত্তরায় মাইলস্টোন স্কুল ও কলেজের ওপর বিমান বিধ্বস্তের মর্মান্তিক ঘটনায় নিহত হয়েছেন সাবেক রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের ভাতিজি মাহেরীন আহমেদ। তিনি ওই স্কুলের দিয়াবাড়ি ক্যাম্পাসের একজন সিনিয়র শিক্ষিকা হিসেবে কর্মরত ছিলেন। তার এই অকাল মৃত্যুতে শোকাহত পরিবার, বন্ধু ও সহকর্মীরা। মাহেরীনের একজন সহপাঠী ও প্রতিবেশী আলী আহমেদ মাহরুর তার ফেসবুক পোস্টে মাহেরীনকে নিয়ে আবেগঘন স্মৃতিচারণ করেছেন, যা থেকে তার জীবন সম্পর্কে অনেক অজানা তথ্য জানা যায়।

আলী আহমেদ মাহরুর জানান, মাহেরীন আহমেদ তার মানারাত বিশ্ববিদ্যালয়ের সহপাঠী ছিলেন। বয়সে কিছুটা সিনিয়র হলেও তিনি অত্যন্ত সাধারণ ও সাদামাটা জীবনযাপন করতেন। তার বাবা, এম আর চৌধুরী, ছিলেন সাবেক রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের আপন চাচাতো ভাই। কিন্তু মাহেরীন বা তার পরিবার কেউই তাদের এই রাজনৈতিক পরিচয়কে ব্যবহার করে কোনো সুবিধা নেওয়ার মানসিকতা পোষণ করতেন না। এমনকি ফ্যাসিবাদী শাসনামলে যখন বিএনপি চেয়ারপারসনের গুলশান কার্যালয় বা বাসভবনে যাওয়া ঝুঁকিপূর্ণ ছিল, তখন মাহেরীন গোপনে তাদের জন্য খাবার ও প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র নিয়ে যেতেন। কিন্তু এই বিষয়টিও তিনি গোপন রাখতেন।

মাহেরীন আহমেদ দীর্ঘদিন ধরে মাইলস্টোন প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। তিনি বিভিন্ন সময়ে প্রতিষ্ঠানের বিভিন্ন শাখায় দায়িত্ব পালন করেছেন এবং দিয়াবাড়ি শাখায় সিনিয়র শিক্ষিকা হিসেবে কর্মরত ছিলেন। দুর্ঘটনার দিনেও তিনি তার স্বভাবসুলভ মাতৃস্নেহে শিক্ষার্থীদের আগলে রেখেছিলেন। জানা যায়, তিনি প্রায় ২০ জনেরও বেশি ছাত্রছাত্রীকে আগুনের হাত থেকে বাঁচিয়েছিলেন, কিন্তু দুর্ভাগ্যবশত তিনি নিজে বের হতে পারেননি। তার স্বামী জানান, মৃত্যুর রাতেও মাহেরীন তার কথা স্মরণ করেছিলেন।

মাহেরীন ছিলেন তার পরিবারের বড় সন্তান। গত কয়েক বছরে তিনি প্রথমে তার বাবা এবং পরে মাকে হারান। এরপর থেকে তিনি পরিবারের বড় সন্তান হিসেবে সব ভাইবোনদের অভিভাবকের দায়িত্ব পালন করতেন। তার দুটি সন্তান রয়েছে, যারা এখন অনেকটাই বড় হয়েছে।

এই মর্মান্তিক মৃত্যুর পর মাহেরীনের লাশ এতটাই পুড়ে গিয়েছিল যে তা চেনার উপায় ছিল না। তার এই আত্মত্যাগ ও সাহসিকতার কথা স্মরণ করে তার সহপাঠী ও শুভানুধ্যায়ীরা গভীর শোক প্রকাশ করেছেন এবং তার আত্মার মাগফিরাত কামনা করেছেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *