free tracking

নিহতের সংখ্যা নিয়ে নতুন তথ্য সামনে আনলেন মাইলস্টোনের শিক্ষিকা পূর্ণিমা দাস!

অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের প্রেস সচিব শফিকুল আলম আজ বুধবার (২৩ জুলাই) নিজের ফেসবুকে মাইলস্টোন স্কুল ও কলেজের শিক্ষক পূর্ণিমা দাসের একটি স্ট্যাটাস শেয়ার করেছেন। ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী এই শিক্ষিকা নিজের ফেসবুক পোস্টে লিখেছেন, ‘ভুল তথ্য ছড়াবেন না।’

নিচে শিক্ষক পূর্ণিমা দাসের ফেসবুক পোস্টটি হুবহু তুলে ধরা হলো- 

#sky_Cloud_section_milestone
আমি মাইলস্টোনের হায়দার আলী ভবনের একজন শিক্ষিকা। আপনাদের কে দুইহাত জোর করে বলছি ভুল তথ্য ছড়াবেন না। আমিও আগুনের মধ্যে আটকা পড়েছিলাম আমার চেয়ে বেশি আপনারা ফেসবুকবাসী জানবেন না তাইনা?
স্কুল ছুটি হয় দুপুর ১ টায়, আমি ঠিক তার এক থেকে দুই মিনিটে স্কাই সেকশনে ঢুকে দেখি ওখানে শুধু একটা বাচ্চা দাঁড়ানো। কেউ ছিলোনা সবাই চলে গেছিলো। আপনারা জানেন না ছুটির সময় হলে বাচ্চারা তিন চার মিনিট আগে থেকেই কিভাবে ব্যাগ কাঁধে নিয়ে ব্যস্ত হয়ে পড়ে বাসায় যাওয়ার জন্য এবং আমি চলে আসার পর অভিভাবক আসেনি বলে আবার স্কাই এ কিছু বাচ্চা ঢুকেছিলো তাদেরকেও আমাদের আরেকজন টিচার ক্লাস থেকে নিয়ে অন্য সেকশনে বসায়।

এরপরেও আবার কয়েকজন (৫ -৬ জন) ঢুকেছিলো তাদেরকেই আমরা হারিয়ে ফেলেছি। বা যারা করিডোরে, দোলনায় খেলছিলো বা সিঁড়িঘরে ছোটাছুটি করছিলো। বা ওই মুহুর্তে ওই জায়গায় কাকতালীয় ভাবে ছিলো। (এদের সংখ্যা অনিশ্চিত)

এরপর আসেন #cloud এ ওখানে বাচ্চার সংখ্যা (৮-১০) স্কাই এর চেয়ে বেশি ছিলো। আমার ধারনা মাহরীন মিস,মাসুকা মিস ও মাহ্ফুজা মিস ওখান থেকেই বাচ্চা বের করার চেষ্টা করছিলো।এবং তাদের বের করতে করতে নিজেরা ঝলসে যায়। যারমধ্যে মাহরীন মিস এবং মাসুকা মিস কে আমরা হারিয়ে ফেলেছি। মাহফুজা মিসের অবস্থা এখন গুরুতর উনি লাইফ সাপোর্টে আছেন। উনার জন্য আপনারা দোয়া করবেন।
cloud এর পাশের রুম #mayna এখানে কিছু বাচ্চা ইনজিউরড্ কেউ মারা যায় নি।
mayna এর পাশে #doyel এই ক্লাসের একটা বাচ্চা আর নেই।
doyel এর পাশে #tuberose এবং #waterlily এখানেও সবাই সেফ আছে।
দ্বিতীয় তলার বাচ্চারদের ও ঘটনা একই।দুইটা ক্লাসরুম একটা টিচার্স রুম পুড়েছে। ওখানেও ১৫-২০ জন ছিলো।

১
প্রেস সচিব শফিকুল আলমের ফেসবুক পোস্ট

হায়দার আলী ভবনের মুখে, দোলনায় এবং করিডোরের হাঁটাহাঁটি করা বাচ্চার সংখ্যা এভাবে বলতে পারা যায় না। অনুমান ও করা কঠিন।তারমধ্যে অনেকের শরীর পুড়ে ছাই হয়ে গেছে যে লাশগুলো খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। এরমধ্যে আছে ওখানকার আয়া রাও।এখান থেকেই বেশিরভাগ আহত। আহতের সংখ্যাও ঠিকভাবে বলা যায় না।

তাই ভুল তথ্য ছড়াবেন না। আপনারা যত মৃতের সংখ্যা বলছেন সেটা একেবারে সম্ভব না। তারমধ্য আমরা যারা দুই কর্নারে ছিলাম তারা তো অক্ষত অবস্থায় ফিরে এসছি।
আর লাশ গুম করার কথা যারা বললেন, আপনাদের কতখানি মাথায় সমস্যা আমার জানা নেই। কারন একটা বাচ্চা যাকে আমরা বাঁচাতে পারিনি তার লাশটাতো অন্তত আমরা তার বাবা মায়ের কাছে পৌঁছানোর সর্বাত্মক চেষ্টা টা করবো। তাইনা? আমরা টিচার, রাজনীতিবিদ নই।

আপনাদের কোনো ধারণা নেই এই শিক্ষক শিক্ষিকাগুলো কিভাবে বাচ্চাদেরকে সারাদিন আগলে রাখে। ছুটি হওয়ার সময় মাহরীন মিস গেটের সামনে দাঁড়িয়ে থাকে প্রতদিন বাচ্চাদেরকে অভিভাবকদের হাতে বুঝিয়ে দেয়। যতক্ষণ একটা বাচ্চারও অভিভাবক থাকে উনি গেট থেকে নড়েন না।
তাই হাত জোর করে বলছি। ভুল তথ্য ছড়াবেন না। মানুষের ইমোশন নিয়ে খেলবেন না।
নিহতের সংখ্যা সামনে বাড়বে আপনাদের বাড়াতে হবেনা,আসেন আমরা প্রার্থনা করি প্রতিটা ফুলের জন্য যারা অকালে ঝড়ে গেলো। আমাদের শিক্ষক শিক্ষিকা স্টাফ আর ছোট ছোট বাচ্চা গুলোর জন্য আসেন আজ প্রার্থনা করি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *