রাজধানী উত্তরার মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজে বিমান বিধ্বস্তের ঘটনায় চোখের সামনে বন্ধু ফুয়াদকে হারিয়ে ফেলেছে মারুফ সরকার আদিব ও রেজোয়ান আমিন নাবিল। আজ বুধবার (২৩ জুলাই) মাইলস্টোন স্কুলের ফটকের সামনে দেখা যায়— ভেতরে প্রবেশাধিকার সংরক্ষিত থাকায় তারা দুজন কখনো মূল ফটক, কখনোবা দেওয়ালের ওপর দিয়ে উঁকি মারছে। তাদের চোখে-মুখে এখনো আতঙ্ক। বন্ধুর খোঁজ না মেলায় বিষাদে বিবর্ণ তাদের মুখাবয়ব।
চোখের সামনে ঘটে যাওয়া ঘটনার বর্ণনা দিতে গিয়ে আদিব বলছে, ‘বিমানটা যেখানে পড়ছে, সেখানে আমরা দাঁড়িয়ে ছিলাম। খেলা ছিল। ইংলিশ ভার্সনের সঙ্গে ফাইট দিতে গিয়েছিলাম। একটা ফ্রেন্ড ডাক দিসে, আইসা পড়ছি। একটু সামনে গেছি। এক মিনিট বা ৫০ সেকেন্ড হবে। তখনই বিকট আওয়াজে কিছু একটা পড়ছে। পেছনে তাকিয়ে দেখি ধোয়া, আগুন। তখন বন্ধুরা সব পাশেই ছিল। চোখের সামনে দেখলাম ফুয়াদের হাত, এখানে-সেখানে রক্ত।’
মাইলস্টোনের বাংলা ভার্সনের অষ্টম শ্রেণির এ শিক্ষার্থী বলেন, ‘শানকে খুঁজে পাচ্ছিলাম না। তবে পরে জানতে পেরেছি। ও বার্ন ইনস্টিটিউটে আছে। ফুয়াদের খোঁজ এখনো মেলেনি। কোথাও নেই। কেউ বলতে পারে না। অর বাবা-মার নাম নম্বরও জানি না। স্যারদের সঙ্গেও কথা বলতে পারছি না। ওর খবর কেউ বলতে পারেনি।’
আদিব তবু কিছু বলতে পারছে। রেজোয়ান আমিন নাবিলের মুখ থেকে যেন কথাই বের হচ্ছিল না। বন্ধুর খোঁজ না মেলার স্পষ্ট ছাপ তার চোখে মুখে। সে বলেছে, ‘কেউ যদি একটু খোঁজ দিতে পারতো। সেদিন আমাদের সঙ্গেই ছিল ফুয়াদ। ও তো হোস্টেলে থাকতো। তাই বাবা-মা কারো সঙ্গে যোগাযোগ নেই আমাদের। পরিবার সম্পর্কে তেমন কিছু জানিও না।’
সোমবার (২১ জুলাই) বিমানবাহিনীর ফাইটার প্লেন, যেটা প্রশিক্ষণ কার্যক্রমে ব্যবহার হচ্ছিল, হঠাৎ এসে আছড়ে পড়ে মাইলস্টোনের শ্রেণিকক্ষে। মুহূর্তেই বিস্ফোরণে সব তছনছ হয়ে যায়। এ ঘটনায় মারা যান ৩১ জন। আহত হন ১৬৪ জন, যারা বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। অনেক শরীর ৯০ শতাংশের বেশি পুড়ে গেছে।
Leave a Reply