সরকারি চাকরি আইন, ২০১৮ এর দ্বিতীয় সংশোধিত অধ্যাদেশ জারি করেছে সরকার। সংশোধিত এই অধ্যাদেশে সরকারি কর্মচারীদের আন্দোলনে অংশগ্রহণকে গুরুতর অসদাচরণ হিসেবে গণ্য করা হয়েছে। ফলে, আন্দোলনে যুক্ত হলেই তাদের বাধ্যতামূলক অবসর, পদাবনতি, এমনকি চাকরি থেকে বরখাস্ত করার বিধান রাখা হয়েছে।
বুধবার (২৩ জুলাই) আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের লেজিসলেটিভ ও সংসদ বিষয়ক বিভাগের সচিব ড. হাফিজ আহমেদ চৌধুরী স্বাক্ষরিত গেজেট প্রকাশের মাধ্যমে এ অধ্যাদেশ কার্যকর হয়।
কী আছে সংশোধিত অধ্যাদেশে?নতুন সরকারি চাকরি (দ্বিতীয় সংশোধন) অধ্যাদেশ, ২০২৫ অনুযায়ী–যদি কোনো সরকারি কর্মচারী:
নিজের কর্মবিরতির মাধ্যমে আন্দোলনে অংশ নেন,
অন্য সরকারি কর্মচারীদের কর্মে বাধা দেন বা অনুপস্থিত থাকতে প্ররোচিত করেন,
সরকারের আইনগত আদেশ অমান্য করেন,
তবে তাকে নিচের যেকোনো তিনটি শাস্তির মুখোমুখি হতে হবে:১. পদ বা বেতন গ্রেডে অবনমিত করা২. বাধ্যতামূলক অবসর দেওয়া৩. চাকরি থেকে বরখাস্ত করা
এছাড়া সংশ্লিষ্ট কর্মচারীর বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হলে, ৭ দিনের মধ্যে কারণ দর্শানোর নোটিশ দিতে হবে। তিনি চাইলে ব্যক্তিগতভাবে শুনানিতে অংশ নিতে পারবেন।
আপিলের সুযোগ থাকছে নাঅধ্যাদেশে উল্লেখ করা হয়েছে, রাষ্ট্রপতির আদেশের বিরুদ্ধে কোনো আপিল করা যাবে না। তবে কর্মচারী চাইলে ৩০ কার্যদিবসের মধ্যে রিভিউ আবেদন করতে পারবেন এবং রাষ্ট্রপতি তা পর্যালোচনা করে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত দেবেন। এই রিভিউয়ের আদেশকেও চূড়ান্ত বলে গণ্য করা হবে।
আইনজীবীদের মত কী?অধ্যাদেশে আন্দোলন শব্দটি সরাসরি উল্লেখ না করা হলেও, ইঙ্গিতপূর্ণভাবে যেভাবে “কর্মবিরতি”, “প্ররোচনা” ও “অবাধ্যতা” বিষয়গুলো উল্লেখ করা হয়েছে— তাতে স্পষ্ট যে এটি সরকারি কর্মচারীদের আন্দোলন দমনেই একটি কঠোর পদক্ষেপ।
পটভূমিতে রাজনৈতিক ও সামাজিক চাপ?সম্প্রতি বিভিন্ন সেক্টরে সরকারি কর্মচারীদের অসন্তোষ ও কর্মবিরতি চর্চা বেড়েছে। বিশেষ করে চিকিৎসক, শিক্ষক, ব্যাংক কর্মকর্তা ও মাঠ প্রশাসনের কিছু অংশ দাবি আদায়ে কর্মবিরতির পথ বেছে নিচ্ছিলেন। নতুন এই আইন কার্যকর হওয়ায় এখন থেকে এসব কর্মসূচিতে অংশ নিলে চাকরি হারানোর ঝুঁকি তৈরি হবে।
Leave a Reply