free tracking

স্যালুট দেওয়ার কারণ জানালেন সেই রিকশাচালক সুজন!

বাংলাদেশের ইতিহাসে স্মরণীয় হয়ে থাকবে সেই সময়—যখন শিক্ষার্থীদের শান্তিপূর্ণ দাবি ও প্রতিবাদ রূপ নেয় ছাত্রজনতার এক দুর্দমনীয় আন্দোলনে। গোটা দেশজুড়ে ছড়িয়ে পড়ে সেই আন্দোলনের স্ফুলিঙ্গ। আর সেই আন্দোলনের অন্যতম প্রতীক হয়ে ওঠে একটি মুহূর্ত, একটি স্যালুট।

সেই ঐতিহাসিক স্যালুটের পেছনের কাহিনি নিয়ে কথা বলেন আন্দোলনের সময়কার সক্রিয় কর্মী সুজন । এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন,

“এই স্যালুটটা আমার কষ্টের স্যালুট। এটা কোনো বিজয়ের সেলিব্রেশন ছিল না, এটা ছিল হৃদয়ের গভীর বেদনার প্রকাশ। আমরা নিজের চোখে দেখেছি রক্ত, অপমান, অসম্মান। নিজের দেশের পতাকা যারা অসম্মান করে, তাদের বিরুদ্ধে দাঁড়াতেই আমাদের স্যালুট।”

তিনি বলেন,

“শুধু ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নয়, এই স্যালুট ছিল পুরো বাংলাদেশের প্রতি সম্মান জানানোর জন্য। এটা ছিল একটা বার্তা—ঘরে বসে মোবাইল দেখার সময় নয়, এখন মাঠে নামার সময়। এই স্যালুটের ২০ মিনিটের মধ্যেই রিকশাওয়ালারা পর্যন্ত রাস্তায় নেমে এসেছিল।”

সুজন স্পষ্ট করে দেন, “আমরা আন্দোলনে ছিলাম, রক্ত দেখেছি, ছাত্রদের পাশে ছিলাম। তখন যারা ঘরে বসে টিভিতে শুধু দেখছিলেন, তাদের উদ্দেশ্যেই বলেছিলাম—আপনারা ঘরে বসে থাকবেন না, রাস্তায় নামুন। কারণ এই আন্দোলন কেবল ছাত্রদের না, এই আন্দোলন ছিল দেশের জন্য, মানুষের জন্য।”

তিনি আক্ষেপ করে বলেন, “আজও আমরা বিচার পাইনি। একটা বছর পেরিয়ে গেছে, কিন্তু যারা সেদিন ফ্যাসিবাদী আচরণ করেছিল, যারা ছাত্রদের রাজাকার বলেছিল, তারা এখনো ঘুরে বেড়াচ্ছে। তাদের অনেকেই রাজনৈতিক দলের ছায়ায় ঢুকে পড়েছে।”

সাক্ষাৎকারে সুজন প্রশ্ন তোলেন, “যে নিজে দেশের বাইরে থেকে এসেছে, যে কখনো মুক্তিযুদ্ধ দেখেনি, সে কিভাবে ছাত্রদের রাজাকার বলতে পারে? ছাত্ররা তো এই দেশের ভবিষ্যৎ—তারা ডাক্তার হবে, বিসিএস ক্যাডার হবে, দেশের জন্য কাজ করবে। তাদের রাজাকার বলা জাতির অপমান, এরাই আসল মুক্তিযুদ্ধার নাতি। ”

শেষে তিনি বলেন, “এই স্যালুট সম্মানের প্রতীক। যারা আন্দোলনে ছিলেন, যারা সামনে গিয়ে লড়েছেন, যারা শহীদ হয়েছেন—তাদের প্রতি সম্মান। এবং যারা এখনো বিচার চাইছেন, প্রতিবাদে মুখর—তাদের প্রতি সম্মান। আন্দোলন এখনো শেষ হয়নি। আমরা বিচার না পাওয়া পর্যন্ত থামবো না।”

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *