রান্নার স্বাদ বাড়ানোর পাশাপাশি পেঁয়াজ আমাদের স্বাস্থ্যের জন্যও অনেক উপকারী। বিশেষ করে পেঁয়াজের রস একটি প্রাকৃতিক প্রতিকার হিসেবে বহু যুগ ধরে ব্যবহৃত হয়ে আসছে। আধুনিক গবেষণাও এর গুণাগুণের প্রমাণ দিয়েছে।
পেঁয়াজে রয়েছে অসংখ্য উপকারি উপাদান যেমন- অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট, অ্যান্টি-ইনফ্ল্যামেটরি, অ্যান্টি-ব্যাকটেরিয়াল বৈশিষ্ট্য, যা একে পরিণত করেছে এক ধরনের প্রাকৃতিক ওষুধে।
পুষ্টিগুণ ও উপাদান:
পেঁয়াজের রসে রয়েছে—ভিটামিন সি, ভিটামিন বি-৬, ফোলেট, পটাশিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম, সালফার যৌগ।
এই উপাদানগুলো শরীরে ফ্রি-র্যাডিকেল ধ্বংস করে, যা বিভিন্ন জটিল রোগ প্রতিরোধে সহায়তা করে।
হৃদরোগ প্রতিরোধে:
জার্নাল অব নিউট্রিশন-এ প্রকাশিত গবেষণা অনুযায়ী, পেঁয়াজে থাকা অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট হৃদরোগ প্রতিরোধে সহায়ক।
*এটি সিস্টোলিক রক্তচাপ ও খারাপ কোলেস্টেরলের মাত্রা কমাতে সাহায্য করে।
ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে:
গবেষণায় দেখা গেছে, পেঁয়াজের রসে থাকা Allyl Propyl Disulfide ইনসুলিনের কার্যকারিতা বাড়ায় এবং রক্তে গ্লুকোজ মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখে।
এটি ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য কার্যকর হতে পারে, তবে পরিমাণমতো গ্রহণ জরুরি।
হজমে সহায়ক:
জার্নাল অব ফুড অ্যান্ড ফাংশন জানায়, পেঁয়াজে থাকা প্রো-বায়োটিক ফাইবার অন্ত্রে ভালো ব্যাকটেরিয়া বৃদ্ধি করে।
এর ফলে হজমক্ষমতা বাড়ে এবং কমে: কোষ্ঠকাঠিন্য, ফোলাভাব, বদহজম, গ্যাসের সমস্যা।
রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়:
পেঁয়াজের রসে রয়েছে ভিটামিন সি, জিঙ্ক ও উচ্চমাত্রার অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট, যা শরীরের ইমিউন সিস্টেমকে শক্তিশালী করে।
ঋতু পরিবর্তনের সময় বা ঠান্ডা-কাশির মৌসুমে এটি সংক্রমণ প্রতিরোধে সহায়ক হতে পারে।
যদিও পেঁয়াজের রস স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী, তবুও অতিরিক্ত গ্রহণে কিছু পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হতে পারে। যেমন- অম্বল বা গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা, অতিরিক্ত গন্ধ, কিছু ক্ষেত্রে অ্যালার্জি।
তাই চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া নিয়মিত ও অতিরিক্ত ব্যবহার এড়িয়ে চলাই ভালো।
পেঁয়াজের রস শুধুমাত্র রান্নার উপকরণ নয়, এটি এক শক্তিশালী প্রাকৃতিক উপাদান যা হৃদরোগ, ডায়াবেটিস, হজম ও রোগ প্রতিরোধে কার্যকর ভূমিকা রাখে। তবে সঠিক মাত্রা ও প্রয়োগ জানা থাকলে তবেই আপনি এ থেকে সর্বোচ্চ উপকার পাবেন।
তথ্যসূত্র: বিভিন্ন স্বাস্থ্য বিষয়ক ওয়েবসাইট।
Leave a Reply