সাবেক অর্থ সচিব জাকির আহমেদ খানকে সভাপতি করে ২৩ সদস্য বিশিষ্ট জাতীয় বেতন কমিশন ২০২৫ গঠন করে প্রজ্ঞাপন জারি করেছে সরকার। অর্থ মন্ত্রণালয়ের সচিব খায়েরুজ্জামান মজুমদার স্বাক্ষরিত এক প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে নতুন এ কমিটি গঠন করা হয়।
প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, সরকারি চাকরি আইন, ২০১৮ এর ধারা ১৫ এ প্রদত্ত ক্ষমতাবলে জাতীয় বেতনস্কেলের আওতাভুক্ত প্রজাতন্ত্রের সব শ্রেণির কর্মকর্তা-কর্মচারীদের জন্য জাতীয় বেতন কমিশন গঠনার্থে সরকার কর্তৃক গৃহীত সিদ্ধান্ত অনুসারে নিম্নরূপভাবে জাতীয় বেতন কমিশন, ২০২৫ করা হলো।
কমিটির সদস্যরা হলেন (পূর্ণকালীন) সাবেক সচিব ড. মোহাম্মদ আলী খান, সাবেক হিসাব মহানিয়ন্ত্রক মো. মোসলেম উদ্দীন, সাবেক রাষ্ট্রদূত মো. ফজলুল করিম।
সদস্য (খণ্ডকালীন) রয়েছেন সাবেক মহা হিসাব নিরীক্ষক ও নিয়ন্ত্রক আহমেদ আতাউল হাকিম, সাবেক সরকারি কর্মকর্তা ড. মোহাম্মদ জাহিদ হোসাইন, সাবেক সচিব ড. জিশান আরা আরাফুন্নেসা, মেজর জেনারেল (অব.) এ আই এম মোস্তফা রেজা নূর, বাংলাদেশ ব্যাংকের ডেপুটি গভর্নর, ড. মো. হাবিবুর রহমান, সাবেক গ্রেড-১ কর্মকর্তা মিস তহমিনা বেগম, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের একাউন্টিং বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক মো. মাকছুদুর রহমান সরকার , বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রফেসর ড. শামসুল আলম ভূঁইয়া, বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের(বুয়েট) প্রফেসর ড. এ কে এম মাসুদ, বাংলাদেশ মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক সৈয়দ আতিকুল হক, বাংলাদেশ উন্নয়ন গবেষণা প্রতিষ্ঠানের মহাপরিচালক অধ্যাপক একে এনামুল হক, প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় কর্তৃক মনোনীত সশস্ত্র বাহিনীর একজন প্রতিনিধি, আইন, বিচারও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয় কর্তৃক মনোনীত একজন প্রতিনিধি, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের একজন প্রতিনিধি, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জন নিরাপত্তা বিভাগের একজন প্রতিনিধি, বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অফ চার্টার অ্যাকাউন্টস প্রেসিডেন্ট, ফেডারেশন অফ বাংলাদেশ চেম্বার্স অফ কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রির প্রেসিডেন্ট, অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থ বিভাগের প্রবিধি বাস্তবায়ন আইন ও রাষ্ট্রায়াত্ত প্রতিষ্ঠান বিভাগের একজন অতিরিক্ত সচিব, অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থ বিভাগের বাস্তবায়ন শাখার অতিরিক্ত সচিব ।
প্রজ্ঞাপনে বলা হয় সরকারের জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় কর্তৃক নিয়োগ প্রাপ্ত একজন অতিরিক্ত সচিব অথবা সচিব এই বেতন কমিশনের সদস্য সচিব হিসেবে পূর্ণকালীন নিয়োগপ্রাপ্ত হবেন।
প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, কমিশন প্রয়োজনে খণ্ডকালীন সদস্য কো-অপ্ট করতে পারবেন।
এ কমিশনের কার্যপরিধি হবে হলো: (১) সরকারি, আধাসরকারি, স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠান, রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান, সরকারি মজুরিপ্রাপ্ত বিশ্ববিদ্যালয় এবং রাষ্ট্রায়ত্ত শিল্প প্রতিষ্ঠানসমূহের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বর্ণিত (শ্রমিক ব্যতীত) বিদ্যমান বেতন ভাতা ও অন্যান্য সুবিধা পর্যালোচনাপূর্বক কমিশন নিম্নবর্ণিত বিষয়ে সুপারিশমালা প্রণয়ন করবেন।
(ক) কর্মকর্তা কর্মচারীদের জন্য একটি সময়োপযোগী ও যথোপযুক্ত বেতন কাঠামো নির্ধারণ।
খ) বিশেষায়িত চাকরিধারীদের বেতন কাঠামো নির্ধারণ (গ) বেতন-ভাতার উপর আরোপযোগ্য কর (আয়কর) জাতীয় বেতন স্কেলের আওতাভুক্ত কর্মকর্তা ও কর্মচারী কর্তৃক সরাসরি পরিশোধ করার ক্ষেত্রে বেতন কাঠামো স্থিরীকরণ।
(ঘ) বেতন-বহির্ভূত অন্যান্য সুবিধা, যেমন- বাড়িভাড়া/চিকিৎসা/যাতায়াত/আপ্যায়ন/প্রেষণ কার্যভার। মহার্ঘ,উৎসব এবং বিনোদন ইত্যাদি ভাতা নিরূপণ: (৫) মূল্যস্ফীতির সাথে সামঞ্জস্য রেখে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বেতন সমন্বয়ের পদ্ধতি নিরূপণ, (চ) যথোপযুক্ত সময়োপযোগী পেনশনসহ অবসর সুবিধাদি নির্ধারণ, (ছ) কর্মকর্তা-কর্মচারীগণের কাজের মান ( নিরূপণ মূল্যায়নপূর্বক বেতন-ভাতা কাঠামোয় প্রতিফলন। এর রেশন সুবিধা যৌক্তিকীকরণ এবং (জ) সরাসরি সেবা (টেলিফোন, গাড়ি, মোবাইল ফোন ইত্যাদি) সংক্রান্ত প্রাধিকারসমূহ আর্থিক সুবিধায় নগদায়ন (ক) উচ্চতর গ্রেড ও ইনক্রিমেন্ট প্রাপ্তিতে বেতনক্রম নিরীক্ষাক্রমে কোনো অসংগতি পরিলক্ষিত হলে তা দূরীকরণের সুপারিশ প্রণয়ন।
সুপারিশ প্রণয়নকালে কমিশন নিম্নোক্ত বিষয়সমূহ বিবেচনা করবেন। (ক) পিতা-মাতাসহ অনূর্ধ্ব ছয় জনের একটি পরিবারের জীবন-যাত্রার ব্যয়, (খ) অনূর্ধ্ব দুই সন্তানের শিক্ষা ও স্বাস্থ্য খাতে ব্যয়। (গ) দেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি, সরকারের সম্পদ পরিস্থিতি, প্রশাসনিক ও নিরাপত্তা ব্যবস্থার জন্য সম্পদের প্রয়োজনীয়তা। (ঘ) সংশ্লিষ্ট সংস্থা/প্রতিষ্ঠানসমূহের আয়-ব্যয়ের অবস্থা। (ঙ) দারিদ্র্য নিরসনের উদ্দেশ্যে প্রয়োজনীয় সম্পদ জোগান ও সমন্বয়ে অনির্ভরতা অর্জনের উপায়। জনপ্রশাসনে মেধাবী ও দক্ষ কর্মকর্তা নিয়োগ। এবং কর্মকর্তা কর্মচারীগণের দক্ষতা ও কর্মোদ্যোগ বৃদ্ধি করে সেবার মান উন্নয়ন।
প্রজ্ঞাপনে বলা হয় ,কমিশন এর প্রথম সভা অনুষ্ঠিত হওয়ার তারিখ হতে ৬ (ছয়) মাসের মধ্যে সরকারের নিকট প্রতিবেদন উপস্থাপন করবেন।
Leave a Reply