free tracking

অল্প বয়সেই যেসব কারণে বাড়ছে কিডনিতে পাথর হওয়ার ঝুঁকি!

আগে মধ্যবয়সীদের রোগ হিসেবে বিবেচিত হলেও এখন তরুণদের মধ্যেও আশঙ্কাজনক হারে বাড়ছে কিডনিতে পাথর জমার প্রবণতা। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, দৈনন্দিন জীবনে তরুণদের অপরিকল্পিত খাদ্যাভ্যাস, পর্যাপ্ত পানি না খাওয়া এবং অতিরিক্ত সাপ্লিমেন্ট গ্রহণের কারণেই মূলত এ ঝুঁকি বাড়ছে।

পানিশূন্যতা: প্রধান কারণ

তরুণ-তরুণীরা, বিশেষ করে শিক্ষার্থী ও অফিসপেশাজীবীরা, দীর্ঘ সময় কম্পিউটার বা মোবাইল স্ক্রিনে কাটান। এই ব্যস্ততার মাঝে অনেকেই প্রয়োজনীয় পরিমাণ পানি পান করেন না। ফলে শরীর পানিশূন্য হয়ে পড়ে, প্রস্রাবের পরিমাণ কমে যায় এবং কিডনিতে ক্যালসিয়াম ও অক্সালেট জাতীয় খনিজ জমে পাথরে রূপ নেয়। তাপমাত্রা বাড়া এবং অনিয়মিত পানি পানের কারণে এই সমস্যা আরও প্রকট হয়ে উঠছে।

ফাস্টফুড ও অতিরিক্ত প্রোটিনের প্রভাব

প্রক্রিয়াজাত খাবার, অতিরিক্ত লবণ, চিনি ও ফাস্টফুড—এই সব খাবারে অভ্যস্ত হয়ে উঠছে বর্তমান প্রজন্ম। এতে প্রস্রাবে অক্সালেট ও ক্যালসিয়ামের পরিমাণ বেড়ে যায়। একই সঙ্গে অতিরিক্ত প্রাণিজ প্রোটিন গ্রহণ প্রস্রাবে সাইট্রেট নামক প্রাকৃতিক ‘অ্যান্টি-স্টোন’ উপাদানের পরিমাণ কমিয়ে দেয়। দীর্ঘদিন এমন খাবার খেলে কিডনিতে পাথর হওয়ার ঝুঁকি বাড়ে।

জিম সাপ্লিমেন্ট ও ওভার দ্য কাউন্টার ওষুধ

চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া ক্যালসিয়াম, ভিটামিন ডি এবং প্রোটিন পাউডার জাতীয় সাপ্লিমেন্ট গ্রহণ তরুণদের মধ্যে ভয়াবহ এক প্রবণতা হয়ে উঠেছে। এসব সাপ্লিমেন্ট অতিরিক্ত গ্রহণ করলে প্রস্রাবে ক্যালসিয়ামের মাত্রা বেড়ে যায়, প্রস্রাবের রাসায়নিক ভারসাম্য নষ্ট হয়—ফলে কিডনিতে পাথর জমে। অনেকেই আবার প্রয়োজনীয় পানি না খেয়ে এসব সাপ্লিমেন্ট খাচ্ছেন, যা বিপদ আরও বাড়ায়।

উপসর্গকে অবহেলা নয়

পিঠের একপাশে হালকা ব্যথা, প্রস্রাবের সময় জ্বালাপোড়া, প্রস্রাবে রক্ত দেখা বা ঘন ঘন ইউরিনারি ইনফেকশন—এমন লক্ষণ দেখা দিলেও অনেকেই গুরুত্ব দেন না। অনেক তরুণ এসব উপসর্গকে স্ট্রেস বা পেশির ব্যথা ভেবে অবহেলা করেন। এতে রোগ ধরা পড়ে দেরিতে এবং জটিলতা বাড়ে।

প্রচলিত কিছু ভুল ধারণা

একটি প্রচলিত ভুল ধারণা হলো, দুধ খেলে কিডনিতে পাথর হয়। বাস্তবে দুধে থাকা ক্যালসিয়াম অন্ত্রে অক্সালেটের সঙ্গে আবদ্ধ হয়ে প্রস্রাবের মাধ্যমে বেরিয়ে যায় এবং পাথর হওয়ার ঝুঁকি কমায়। আরেকটি ভুল ধারণা হলো, কিডনির পাথর কেবল বয়স হলে হয় বা পারিবারিক ইতিহাস থাকলেই হয়। কিন্তু বর্তমান দিনে স্ট্রেস, কম পানি পানের অভ্যাস এবং খাদ্যাভ্যাসের কারণে যে কারও এই সমস্যা হতে পারে।

সূত্র: টাইমস অব ইন্ডিয়া।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *