রাশিয়ায় ৮.৮ মাত্রার শক্তিশালী ভূমিকম্পের পর বিশ্বব্যাপী উদ্বেগ ছড়িয়ে পড়েছে। এখন পর্যন্ত অন্তত ১৪টি দেশ ও অঞ্চলে সুনামি সতর্কতা জারি করা হয়েছে। বিশেষ করে প্রশান্ত মহাসাগরীয় রিং অব ফায়ার অঞ্চলের দেশগুলোকে উচ্চ ঝুঁকিতে রাখা হয়েছে।
মার্কিন ভূ-আবহাওয়া সংস্থা ন্যাশনাল ওশানিক অ্যান্ড অ্যাটমসফেরিক অ্যাডমিনিস্ট্রেশন (NOAA) জানিয়েছে, ভূমিকম্পটির কেন্দ্রস্থল ছিল সমুদ্রের গভীরে, যার অভিঘাত ছড়িয়ে পড়তে পারে একাধিক মহাদেশজুড়ে।
NOAA জানিয়েছে, ওশেনিয়ার পাপুয়া নিউ গিনি, সলোমন দ্বীপপুঞ্জ ও ভানুয়াতু সবচেয়ে বেশি ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে। এসব অঞ্চলে ১০ মিটার বা তার বেশি উচ্চতার সুনামি ঢেউ আছড়ে পড়তে পারে।
পাপুয়া নিউ গিনিতে নিযুক্ত যুক্তরাষ্ট্রের দূতাবাস নাগরিকদের উদ্দেশে কঠোর সতর্কবার্তা দিয়েছে। বিবৃতিতে বলা হয়:
“সমুদ্র উপকূলে অবস্থানরত কেউ যদি অস্বাভাবিক ঢেউ, স্রোত অথবা দীর্ঘস্থায়ী কম্পন অনুভব করেন, সঙ্গে সঙ্গে নিরাপদ ও উঁচু স্থানে আশ্রয় নিন।”
পাশাপাশি বলা হয়—বাসিন্দাদের উপকূলবর্তী অঞ্চল, সৈকত বা নদীতীরে না যাওয়ার অনুরোধ জানানো হচ্ছে এবং নিজের পরিবারের জন্য খাবার, বিশুদ্ধ পানি, ওষুধ ও গুরুত্বপূর্ণ কাগজপত্র প্রস্তুত রাখতে বলা হয়েছে।
সতর্কতা জারি করা দেশ ও অঞ্চলসমূহ:
এশিয়া: রাশিয়া, জাপান, চীন, তাইওয়ান, ফিলিপাইন
ওশেনিয়া: পাপুয়া নিউ গিনি, সলোমন দ্বীপপুঞ্জ, ভানুয়াতু
উত্তর আমেরিকা: হাওয়াই, গুয়াম, ক্যালিফোর্নিয়া, আলাস্কা, ওরেগন, ওয়াশিংটন
দক্ষিণ আমেরিকা: মেক্সিকো, পেরু, ইকুয়েডর
অস্ট্রেলেশিয়া: নিউজিল্যান্ড
কানাডা: ব্রিটিশ কলাম্বিয়া
ভূকম্পন বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই মাত্রার ভূমিকম্প ‘মারাত্মক’ ক্যাটাগরিতে পড়ে। এর ফলে বিপজ্জনক উচ্চতার ঢেউ সৃষ্টি হতে পারে, যা উপকূলীয় জনপদে ব্যাপক ধ্বংসযজ্ঞ চালাতে সক্ষম।
বিশ্ব ইতিহাসে এমন শক্তিশালী ভূমিকম্পের পরিণতি ভয়াবহ হতে দেখা গেছে। উদাহরণস্বরূপ, ২০০৪ সালে ইন্দোনেশিয়ার ৯.১ মাত্রার ভূমিকম্পে সৃষ্ট সুনামিতে প্রাণ হারিয়েছিল দুই লক্ষাধিক মানুষ।
সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ ও বিশেষজ্ঞরা জনগণকে সতর্কবার্তা অবহেলা না করার আহ্বান জানিয়েছেন। উপকূলীয় অঞ্চলের বাসিন্দাদের প্রতি বারবার অনুরোধ করা হচ্ছে—গুজবে কান না দিয়ে সরকারি নির্দেশনা অনুসরণ করুন এবং দ্রুত নিরাপদ আশ্রয়ে চলে যান।
Leave a Reply