free tracking

তেলাপিয়া মাছকে কেন ‘জান্নাতি’ বলা হয়? বিজ্ঞানীরা দিলেন নতুন তথ্য!

এক সময় অবহেলিত মাছ ছিল তেলাপিয়া। সাধারণ ও সস্তা মাছ হিসেবে পরিচিত এই প্রজাতিটি এখন শুধু আমাদের খাবারের প্লেটে নয়, জায়গা করে নিয়েছে গবেষণাগারেও। ধর্মীয় পরিপ্রেক্ষিতে একে অনেকে ‘জান্নাতি মাছ’ বলে থাকেন, কারণ এটি ইতিহাসের অন্যতম দুটি গুরুত্বপূর্ণ নদী—ফুরাত ও নীলনদের সঙ্গে জড়িত। তবে এবার বিজ্ঞানীরা তেলাপিয়া মাছ নিয়ে যে তথ্য দিয়েছেন, তা আরও চমকপ্রদ।

কেন বলা হয় ‘জান্নাতি মাছ’?

তেলাপিয়া মাছ মধ্যপ্রাচ্যের ঐতিহাসিক নদীগুলোর সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে সম্পর্কযুক্ত। বিশেষ করে ফুরাত ও নীলনদের বিশুদ্ধ জলের মাছ হিসেবে একে ধর্মীয়ভাবেও মূল্যায়ন করা হয়। ইসলামি সংস্কৃতিতে এসব নদী জান্নাতের সাথে তুলনীয় হওয়ায়, সেখানকার প্রাকৃতিক মাছ তেলাপিয়াকেও অনেকে ‘জান্নাতি মাছ’ হিসেবে অভিহিত করেন।

নতুন গবেষণায় চমক

সম্প্রতি একাধিক আন্তর্জাতিক গবেষণায় উঠে এসেছে যে, তেলাপিয়া মাছ শুধু সস্তা ও সহজলভ্যই নয়, এটি স্বাস্থ্যের জন্যও অত্যন্ত উপকারী। বিশেষ করে নারীদের প্রজনন ক্ষমতা বাড়াতে এবং শিশুদের উচ্চতা বৃদ্ধিতে এটি কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারে।

১. প্রজনন ক্ষমতায় সহায়ক

তেলাপিয়া মাছের মধ্যে এমন কিছু প্রাকৃতিক উপাদান রয়েছে যা মানবদেহের প্রজনন কোষ তৈরিতে সহায়ক। ফলে যেসব নারীর সন্তান ধারণে সমস্যা রয়েছে, তাদের জন্য এটি উপকারী হতে পারে।

২. শিশুদের উচ্চতা বৃদ্ধি

ওমেগা–৩ ফ্যাটি অ্যাসিড, ক্যালসিয়াম ও ভিটামিন ডি—এই তিনটি উপাদান শিশুদের বেড়ে ওঠার জন্য অত্যন্ত প্রয়োজনীয়। তেলাপিয়া মাছে এসব উপাদান প্রচুর পরিমাণে থাকায় এটি শিশুদের দেহের গঠন ও উচ্চতা বৃদ্ধিতে সহায়ক।

গর্ভবতী নারীদের জন্য সতর্কতা

তবে খামারজাত তেলাপিয়া মাছ নিয়ে কিছু সতর্কতা জানাচ্ছেন চিকিৎসক ও পুষ্টিবিদরা। কারণ:

  • অনেক খামারে তেলাপিয়া মাছ অস্বাস্থ্যকর পানিতে চাষ করা হয়।
  • মাছের খাদ্যে ব্যবহৃত রাসায়নিক ও ভারী ধাতু জমে গিয়ে তা মা ও গর্ভস্থ শিশুর স্বাস্থ্যে প্রভাব ফেলতে পারে।

পরামর্শ:
গর্ভবতী নারীরা যেন পরিমিত পরিমাণে তেলাপিয়া খান এবং অবশ্যই নিরাপদ উৎস থেকে সংগ্রহ করেন।

পুষ্টিগুণ ও স্বাস্থ্য উপকারিতা

তেলাপিয়া মাছের প্রতি ১০০ গ্রাম মাংসে যা থাকে:

  • প্রোটিন: ২৬ গ্রাম
  • ফ্যাট: ২–৩ গ্রাম (কম মাত্রার স্যাচুরেটেড ফ্যাট)
  • ওমেগা–৩: হৃদরোগ প্রতিরোধে সহায়ক
  • ক্যালসিয়াম ও ফসফরাস: হাড় মজবুত করতে সহায়ক
  • ভিটামিন ডি ও বি১২: রোগ প্রতিরোধ ও স্নায়ু সচল রাখতে কার্যকর

পরিবেশের উপর প্রভাব

তেলাপিয়া মাছ চাষের ক্ষেত্রে পানি ও পরিবেশের মান বজায় রাখা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কারণ খারাপ পানির মাছ মানুষের শরীরে বিষাক্ত উপাদান প্রবেশ করাতে পারে। তাই সরকার ও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের উচিত তেলাপিয়া চাষের মান নিয়ন্ত্রণ করা।

বাজারদর ও সহজলভ্যতা

বাংলাদেশে তেলাপিয়া মাছ সবজায়গাতেই পাওয়া যায় এবং দামও তুলনামূলকভাবে কম। এই কারণে এটি সব শ্রেণির মানুষের খাবারে জায়গা করে নিয়েছে। স্বাস্থ্যগুণ বিবেচনায় এ মাছের চাহিদা আগামী দিনে আরও বাড়বে বলেই ধারণা করা হচ্ছে।

https://inews.zoombangla.com/oneplus-new-smartphone/

তেলাপিয়া মাছ শুধু ধর্মীয় কারণে নয়, পুষ্টিগুণ ও স্বাস্থ্য উপকারিতার দিক থেকেও একে ‘জান্নাতি মাছ’ বলা মোটেও অমূলক নয়। তবে এর প্রকৃত উপকার পেতে চাইলে প্রয়োজন নিরাপদ উৎপাদন ও সঠিক সচেতনতা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *