লাইফস্টাইল ডেস্ক : বর্তমানে দিনের বড় একটি অংশই কাটে স্মার্টফোনের সঙ্গে। ঘুম থেকে ওঠার পর থেকে শুরু করে রাতে চোখ বন্ধ করার আগ পর্যন্ত ফোন হাতে নানান কাজে ব্যস্ত থাকেন অনেকেই—চ্যাটিং, অনলাইন শপিং, টিকিট বুকিং, সিনেমা দেখা, বিল পরিশোধসহ আরও অনেক কিছুই সেরে ফেলেন একটি ফোনেই।
তবে স্মার্টফোনের এই অতিনির্ভরতা শরীর ও মন—দুয়ের ওপরই ফেলছে নেতিবাচক প্রভাব, বিশেষ করে ঘুমের সময় যদি ফোনটি রাখেন বালিশের নিচে বা পাশে।
বিশেষজ্ঞদের মতে, ঘুমানোর সময় স্মার্টফোনকে নিজের কাছাকাছি রাখা উচিত নয়। কারণ, এই অভ্যাস ঘুমের গুণগত মান কমিয়ে দেয় এবং দীর্ঘমেয়াদে শরীরের জন্য ভয়াবহ হতে পারে।
স্মার্টফোনের স্ক্রিন থেকে নির্গত নীল আলো দেহে মেলাটোনিন নামক ঘুম-নিয়ন্ত্রণকারী হরমোনের ক্ষরণ ব্যাহত করে। ফলে ঘুম আসতে দেরি হয়, ঘুমও হয় হালকা ও অশান্ত। এতে করে ঘুমের ঘাটতি, ক্লান্তি, মন খারাপ থাকা বা মানসিক অবসাদ—এসবের ঝুঁকি বাড়ে।
অথচ রাতে ঘুম ভালো না হলে দিনভর তার প্রভাব পড়ে কাজে, মেজাজে এবং স্বাস্থ্যে। তাছাড়া, ফোনে আসা নানা রকম নোটিফিকেশন ও অ্যালার্টও ঘুমের মধ্যে বিঘ্ন ঘটায়।
এছাড়া স্মার্টফোন থেকে নির্গত রেডিও ফ্রিকোয়েন্সি (RF) রেডিয়েশন দীর্ঘসময় শরীরের সংস্পর্শে থাকলে তা মস্তিষ্ক এবং হরমোন ব্যবস্থার ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে। হতে পারে হরমোনের ভারসাম্যহীনতা, এমনকি দীর্ঘমেয়াদে জটিল স্বাস্থ্যঝুঁকিও।
তাই বিশেষজ্ঞরা পরামর্শ দেন, ঘুমানোর সময় স্মার্টফোনকে কমপক্ষে ৩ থেকে ৪ ফুট দূরে রাখা উচিত। ফোন থেকে বের হওয়া আলো, গরম এবং রেডিয়েশন যেন শরীরের ওপর প্রভাব ফেলতে না পারে, সেটা নিশ্চিত করাই সবচেয়ে নিরাপদ অভ্যাস।
স্মার্টফোনের সর্বব্যাপী ব্যবহার যেমন সময় বাঁচাচ্ছে, তেমনি ভুল অভ্যাস আমাদের স্বাস্থ্যও ক্ষতিগ্রস্ত করছে। তাই প্রযুক্তির সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলার পাশাপাশি সঠিক ব্যবহার নিশ্চিত করাও জরুরি।
Leave a Reply