free tracking

ডাক্তাররা বলছেন, ত্বকে দেখা দেওয়া এই ৪টি লক্ষণ মানেই লিভারে বড় সমস্যা!

সুস্থ শরীর ও ভালো স্বাস্থ্যের জন্য একটি সুস্থ লিভার অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। লিভার মূলত রক্ত থেকে বিষাক্ত উপাদান ছেঁকে ফেলে, পরিপাকে সহায়ক পিত্তরস উৎপন্ন করে, প্রয়োজনীয় ভিটামিন ও খনিজ পদার্থ সংরক্ষণ করে এবং পুষ্টি উপাদানকে বিপাকক্রিয়ার মাধ্যমে রূপান্তর করে। তবে এটি বিভিন্ন রোগ ও গুরুতর ক্ষতির ঝুঁকিতে থাকে। অস্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস, বসে বসে থাকা জীবনযাপন, অতিরিক্ত মদ্যপান ও কিছু বংশগত রোগ লিভারের সমস্যার আশঙ্কা বাড়িয়ে দেয়—যেমন ফ্যাটি লিভার বা সিরোসিস। তাই লিভারের সমস্যার প্রাথমিক লক্ষণগুলো যত দ্রুত সম্ভব শনাক্ত করা অত্যন্ত জরুরি। সময়মতো রোগ নির্ণয় ও চিকিৎসা গ্রহণ করলে হেপাটাইটিস, সিরোসিস বা লিভার ক্যানসারের মতো গুরুতর অবস্থার ঝুঁকি কমানো যায়।

ফ্যাটি লিভারের কিছু লক্ষণ হলো ক্লান্তিভাব, পেট ফোলা, প্রসাবের রঙ পরিবর্তন, বমিভাব বা বমি। তবে কিছু সূক্ষ্ম লক্ষণ ত্বকেও প্রকাশ পায়। এআইআইএমএস ও হার্ভার্ড প্রশিক্ষিত লিভার ও পরিপাকতন্ত্র বিশেষজ্ঞ ডা. সৌরভ সেঠি ত্বকে দেখা দেওয়া লিভারের সমস্যার এমনই কিছু লক্ষণ তুলে ধরেছেন।

ত্বকে যেসব ৪টি পরিবর্তন লিভারের অসুস্থতার ইঙ্গিত দিতে পারে:

১. ত্বক হলুদ হয়ে যাওয়া

ত্বক ও চোখের সাদা অংশে হলদেটে ভাব দেখা দিলে সেটি জন্ডিস হতে পারে, যা রক্তে বিলিরুবিন নামক উপাদানের মাত্রা বেড়ে যাওয়ার ফলে হয়। ডা. সেঠির ভাষায়, “এটি লিভারের সমস্যার সবচেয়ে প্রচলিত লক্ষণ, কারণ লিভারই বিলিরুবিন প্রসেস করে।”

২. স্পাইডার অ্যাঞ্জিওমা

ত্বকে জালের মতো দেখতে ছোট ছোট লাল রক্তনালির উপস্থিতি, বিশেষ করে মুখ, ঘাড় বা বুকে—যাকে বলা হয় স্পাইডার অ্যাঞ্জিওমা। এটি শরীরে ইস্ট্রোজেন হরমোনের মাত্রা বেড়ে যাওয়ার কারণে দেখা দিতে পারে, যা লিভার সমস্যার সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত।

৩. পামার এরিথিমা

হাতের তালুতে লালচে ভাব, ফোলাভাব ও প্রদাহ দেখা গেলে সেটিকে বলা হয় পামার এরিথিমা। এটি লিভারে রক্তপ্রবাহ ও ইস্ট্রোজেনের মাত্রা বেড়ে যাওয়ার ইঙ্গিত দিতে পারে। ডা. সেঠির মতে, এটি লিভারের কার্যক্ষমতার ব্যাঘাতের লক্ষণ হতে পারে।

৪. চুলকানি

কোনো দৃশ্যমান কারণ ছাড়াই শরীরে চুলকানি হলে এবং সেটি রাতের দিকে বেড়ে গেলে তা লিভারের সমস্যা নির্দেশ করতে পারে। কারণ হিসেবে ডা. সেঠি বলেন, “লিভারের সমস্যায় ত্বকে পিত্তলবণ জমা হয়, যা চুলকানির কারণ হতে পারে।”

লিভার সুস্থ ও কার্যকর রাখার জন্য সচেতন জীবনযাপন প্রয়োজন। এর জন্য—

  • স্বাস্থ্যকর খাদ্য গ্রহণ করুন
  • মদ্যপান সীমিত করুন
  • নিয়মিত শরীরচর্চা করুন
  • বিষাক্ত উপাদান এড়িয়ে চলুন
  • পর্যাপ্ত পানি পান করুন
  • এবং নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষা করান

এই অভ্যাসগুলো লিভারের রোগের ঝুঁকি কমাতে সাহায্য করবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *