free tracking

৪০০ নাগরিক নিয়ে নতুন দেশের ঘোষণা, প্রেসিডেন্টের বয়স ২০!

নতুন এক দেশের নাম ‘দ্য ফ্রি রিপাবলিক অব ভারদিস’। দেশটি গড়ে উঠেছে ইউরোপের দানিয়ুব নদীর তীরে ক্রোয়েশিয়া ও সার্বিয়ার মাঝামাঝি ১২৫ একর বিরোধপূর্ণ জঙ্গলঘেরা একটি ভূখণ্ড নিয়ে। ২০ বছর বয়সী অস্ট্রেলিয়ান নাগরিক ড্যানিয়েল জ্যাকসন নিজেকে এই ক্ষুদ্র রাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট হিসেবে ঘোষণা করেছেন। এরইমধ্যে ইন্টারনেটে তার এই দাবি ভাইরাল হয়েছে।

মার্কিন সংবাদমাধ্যম নিউ ইয়র্ক পোস্টের প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে, এই মাইক্রোনেশন বা ক্ষুদ্র রাষ্ট্রটির রয়েছে নিজস্ব পতাকা, মন্ত্রিসভা, মুদ্রা ও প্রায় ৪০০ জন নাগরিক। ২০১৯ সালের ৩০ মে ‘ভারদিস’-এর স্বাধীনতা ঘোষণা করেন জ্যাকসন, যখন তিনি মাত্র ১৮ বছর বয়সী।

জ্যাকসন বলেন, ‘ভারদিস ছিল আমার কল্পনার একটি খেলা, যা শুরু করেছিলাম ১৪ বছর বয়সে বন্ধুদের সঙ্গে। পরে এটিকে বাস্তবে রূপ দিতে থাকি।’ জ্যাকসন পেশায় একজন ডিজিটাল ডিজাইনার।

ভারদিসের আয়তন শূন্য দশমিক ৫ বর্গকিলোমিটার। ক্রোয়েশিয়া ও সার্বিয়ার মধ্যে সীমান্ত বিরোধের কারণে কোনো দেশই ‘পকেট থ্রি’ নামে পরিচিত এই ভূখণ্ডটিকে নিজেদের দাবি করেনি। এই সুযোগে জ্যাকসন সেখানে নিজের রাষ্ট্র গড়ে তোলার দাবি করেন।

রাষ্ট্রটির সরকারি ভাষা ইংরেজি, ক্রোয়েশিয়ান ও সার্বিয়ান। মুদ্রা হিসেবে ব্যবহার করা হয় ইউরো। তবে এই ভূখণ্ডে পৌঁছানো সম্ভব শুধু ক্রোয়েশিয়ার ওসিজেক অঞ্চল থেকে নৌপথে।

তবে জ্যাকসনের রাষ্ট্র গঠনের চেষ্টায় বাধাও এসেছে। ২০২৩ সালের অক্টোবরে ক্রোয়েশিয়ান পুলিশ ভারদিসে প্রবেশের চেষ্টাকালে জ্যাকসনসহ কয়েকজনকে গ্রেপ্তার করে ফেরত পাঠায়। জ্যাকসনকে আজীবনের জন্য ক্রোয়েশিয়া প্রবেশে নিষিদ্ধও করা হয়।

জ্যাকসন বলেন, ‘তারা আমাদের ফেরত পাঠাল কিন্তু কোনো যৌক্তিক কারণ দেখায়নি। শুধু বলল, আমরা নাকি জাতীয় নিরাপত্তার জন্য হুমকি।’

বর্তমানে জ্যাকসন দাবি করছেন, তিনি ভারদিসে নির্বাসিত সরকার পরিচালনা করছেন। তার অভিযোগ, ক্রোয়েশিয়া ভারদিসের তীরে নজরদারি বসিয়েছে যাতে সার্বিয়ার দিক থেকে প্রবেশ আটকে দেওয়া যায়।

জ্যাকসন বলেন, ‘ক্রোয়েশিয়ান কর্তৃপক্ষের সঙ্গে বহু সমস্যার মুখোমুখি হয়েছি, কিন্তু ভবিষ্যতে তাদের সঙ্গে ভালো সম্পর্ক চাই।’

বর্তমানে জ্যাকসন নিয়মিত সার্বিয়ার বেলগ্রেদে যাতায়াত করেন। তিনি দাবি করেন, সার্বিয়ান কর্তৃপক্ষ তার এই উদ্যোগে তুলনামূলকভাবে সহানুভূতিশীল।

নিউইয়র্ক টাইমস জানায়, ভারদিসের নাগরিকদের দেওয়া হয় পাসপোর্টও, যদিও জ্যাকসনের পরামর্শ— কেউ যেন তা আন্তর্জাতিক ভ্রমণের জন্য ব্যবহার না করেন। তবে কিছু নাগরিক এই পাসপোর্ট ব্যবহার করে অন্য দেশে প্রবেশের দাবি করেছেন।

ছোট রাষ্ট্র হওয়ার কারণে ভারদিসের নাগরিকত্ব প্রদানে বেছে নেওয়া হয় শুধুমাত্র দক্ষ পেশাজীবীদের; যেমন চিকিৎসক বা আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর অভিজ্ঞরা অগ্রাধিকার পান।

সব প্রতিকূলতা সত্ত্বেও জ্যাকসনের আশা, একদিন তিনি ও তার নাগরিকেরা আবারও ভারদিসে পা রাখতে পারবেন। তাঁর দাবি, যেহেতু ক্রোয়েশিয়া এই ভূখণ্ড দাবি করে না, তাই তাদের দাবি বৈধ।

সূত্র: এনডিটিভি

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *