নির্বাচনের ঘোষিত সময়সূচি নিয়ে ইতোমধ্যেই প্রধান বিরোধী দল বিএনপি ও সমমনা রাজনৈতিক জোটগুলো আশাবাদ ব্যক্ত করেছে এবং রোডম্যাপ অনুযায়ী প্রস্তুতি শুরু করেছে।
একই ধারায় জামায়াতে ইসলামী, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ, এনসিপি এবং আরও কয়েকটি ইসলামী ও সমমনা দলও নিজেদের কৌশল সাজাচ্ছে। তবে শুধু নির্বাচনের জন্য প্রচার নয়—তারা তফসিল ঘোষণার আগে ‘জুলাই সনদের’ আইনি স্বীকৃতি, আনুপাতিক হারে ভোটের (PR) পদ্ধতি, দৃশ্যমান রাজনৈতিক সংস্কার এবং অতীতের নানা ঘটনার বিচার নিশ্চিতকরণসহ একাধিক ইস্যুতে সোচ্চার রয়েছে।
এসব দাবিতে তারা গোলটেবিল বৈঠক, সংবাদ সম্মেলন, আলোচনা সভা ও জনসংযোগ কর্মসূচি অব্যাহত রেখেছে।সংবাদপত্র সাবস্ক্রিপশন
রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, জামায়াতের পক্ষ থেকে প্রায় সব আসনেই প্রার্থী মনোনয়ন দেওয়া হতে পারে, কিন্তু বিশেষ মনোযোগ থাকবে ১৫-২০টি গুরুত্বপূর্ণ আসনে। কারণ এসব আসনেই দলের শীর্ষস্থানীয় নেতাদের প্রার্থিতা প্রায় নিশ্চিত।
ঢাকা-১৫: ডা. শফিকুর রহমান
রাজধানীর কাফরুল-মিরপুর এলাকা নিয়ে গঠিত ঢাকা-১৫ আসন থেকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন জামায়াতের আমীর ডা. শফিকুর রহমান। তিনি ২০১৮ সালেও একই আসন থেকে নির্বাচন করেছিলেন। এর আগে ১৯৯১ ও ১৯৯৬ সালে মৌলভীবাজার-২ আসনে লড়েছিলেন। তবে জামায়াতের একটি সুত্র জানায় তিনি সিলেটের একটি আসন থেকেও প্রার্থী হতে পারেন।
রাজশাহী-১: অধ্যাপক মুজিবুর রহমান
দলটির নায়েবে আমীর অধ্যাপক মুজিবুর রহমান ১৯৮৬ সালে রাজশাহী-১ আসন থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছিলেন। এবারের নির্বাচনেও তাকে ওই আসনে প্রার্থী করার প্রস্তুতি প্রায় চূড়ান্ত।
কুমিল্লা-১১: ডা. সৈয়দ আবদুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের
২০০১ সালে এই আসন থেকে প্রথমবারের মতো সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছিলেন নায়েবে আমীর ও ছাত্রশিবিরের সাবেক সভাপতি ডা. তাহের। আগামী নির্বাচনে তিনি এখানেই প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন বলে জানা গেছে।
খুলনা-৫: অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার
খুলনার ফুলতলা-ডুমুরিয়া এলাকা নিয়ে গঠিত খুলনা-৫ আসন থেকে ২০০১ সালে প্রথমবারের মতো নির্বাচিত হন জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল অধ্যাপক পরওয়ার। আবারও দাঁড়িপাল্লা প্রতীক নিয়ে তার প্রার্থিতা নিশ্চিত বলে দলীয় সূত্রে জানা গেছে।
কক্সবাজার-২: ড. এএইচএম হামিদুর রহমান আযাদ
২০০৮ সালে এই আসন থেকে নির্বাচিত হন জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল ও ছাত্রশিবিরের সাবেক সভাপতি ড. আযাদ। রাজনৈতিক অঙ্গনে তাকে হেভিওয়েট প্রার্থী হিসেবে ধরা হয়।
সিরাজগঞ্জ-৪: মাওলানা রফিকুল ইসলাম খান
অবিভক্ত ঢাকা মহানগরের সাবেক আমীর এবং বর্তমানে সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল রফিকুল ইসলাম খান সিরাজগঞ্জ-৪ আসনে লড়বেন বলে দলের পক্ষ থেকে নিশ্চিত করা হয়েছে।
রংপুর-২: এটিএম আজহারুল ইসলাম
দীর্ঘ সাড়ে ১৪ বছর কারাভোগের পর ফাঁসির দণ্ড থেকে খালাস পেয়ে রাজনৈতিক মাঠে ফিরে এসেছেন জামায়াতের সিনিয়র নেতা এটিএম আজহারুল ইসলাম। রংপুর-২ আসনে তার প্রার্থিতা নিয়ে স্থানীয়ভাবে ব্যাপক আলোচনা রয়েছে।
চাঁপাইনবাবগঞ্জ-৩: নুরুল ইসলাম বুলবুল
ঢাকা মহানগর দক্ষিণের আমীর এবং ছাত্রশিবিরের সাবেক সভাপতি নুরুল ইসলাম বুলবুল চাঁপাইনবাবগঞ্জ-৩ আসনে দলের শক্ত প্রার্থী হিসেবে প্রস্তুতি নিচ্ছেন।
অন্যান্য আলোচিত প্রার্থী
এছাড়া তরুণ ও আলোচিত প্রার্থীদের মধ্যে রয়েছেন—সিলেট-৬ (মোহাম্মদ সেলিম উদ্দিন), সুনামগঞ্জ-২ (এডভোকেট শিশির মনির), পিরোজপুর-১ (মাসুদ সাঈদী), পিরোজপুর-২ (শামীম সাঈদী), পটুয়াখালী-২ (ড. শফিকুল ইসলাম মাসুদ) এবং কুষ্টিয়া-৩ (মুফতি আমীর হামজা)।
দলীয় সূত্রের দাবি, নির্বাচনের আনুষ্ঠানিক তফসিল ঘোষণার পর প্রার্থীদের তালিকা চূড়ান্ত করা হবে, তবে মাঠ পর্যায়ে নেতাদের প্রচার ও জনসংযোগ ইতোমধ্যেই শুরু হয়ে গেছে। ফলে আসন্ন নির্বাচনে এসব আসনকে ঘিরে রাজনৈতিক উত্তাপ বাড়বে বলেই ধারণা করা হচ্ছে।
Leave a Reply