যুগ যুগ ধরে মানুষ চেয়েছে অমরত্বের ছোঁয়া পেতে, বেঁচে থাকতে হাজার বছর পর্যন্ত। আর সেই স্বপ্ন আজ আর শুধু কাল্পনিক গল্প নয়, বাস্তবতার পথে ধাপে ধাপে এগোচ্ছে। বর্তমান বিশ্বে মানুষের গড় আয়ু যেখানে মাত্র ৭৩.৫ বছর, সেখানে বিজ্ঞানীরা দাবি করছেন ২০৫০ সালের মধ্যেই মানুষের গড় আয়ু পৌঁছাতে পারে ১০০০ বছর পর্যন্ত।
বিশেষজ্ঞদের মতে, চিকিৎসা প্রযুক্তি ও কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার অভাবনীয় অগ্রগতি মানুষের জীবনধারা বদলে দিচ্ছে। কম্পিউটার বিজ্ঞানী ও ভবিষ্যৎ চিন্তাবিদ রে কারোজোয়াইল আশা প্রকাশ করেছেন যে ২০২৯ সালের মধ্যে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা এমন এক পর্যায়ে পৌঁছাবে যা মানুষের বুদ্ধিমত্তাকেও ছাপিয়ে যাবে। এই অবস্থা ‘সিঙ্গুলারিটি’ নামে পরিচিত, যা মানুষের সঙ্গে মেশিনকে একত্রিত করে এক নতুন যুগের সূচনা করবে।
তারপর ২০৪৫ সালের মধ্যেই মানুষের মস্তিষ্কে সংযুক্ত হবে ব্রেন কম্পিউটার ইন্টারফেস, তৈরি হবে ক্লাউড ভিত্তিক সচেতনতা। ন্যানোবট নামের অতি ক্ষুদ্র রোবট শরীরে প্রবেশ করে জটিল রোগ সারাতে সক্ষম হবে। এর ফলে শুধু মানুষের আয়ু নয়, মন ও চেতনা পর্যন্ত হতে পারে কার্যত অমর।
তবে এই ভবিষ্যৎবাণীতে বিতর্ক ও প্রশ্নও রয়েছে। অনেক গবেষক মনে করেন, প্রযুক্তি কেবল একটি অংশ হতে পারে সামাজিক সমস্যার সমাধানে, তবে তা একমাত্র পথ নয়। এছাড়া এই প্রযুক্তি প্রথমে কে ভোগ করবে সেটাও বড় প্রশ্ন। ব্রিটিশ বিজ্ঞানী ইয়ান পিয়ারসন মনে করেন প্রথমে ধনী শ্রেণিই এই সুবিধা পাবে, তবে ধীরে ধীরে মধ্যবিত্তের কাছে পৌঁছাবে।
একজন বায়োমেডিকেল জেরোনোটোলজিস্ট বার্ধক্যকে একটি চিকিৎসাযোগ্য রোগ হিসেবে দেখেন এবং বিশ্বাস করেন ২০৫০ সালের মধ্যেই বার্ধক্যকে পুরোপুরি প্রতিরোধ করা সম্ভব হবে। তিনি আরও বলেন, দীর্ঘজীবন মানুষকে অলস ও নিরুৎসাহী করবে এমন ধারণা ভুল।
যদি এই প্রযুক্তির ভবিষ্যৎ প্রতিশ্রুতি সত্যি হয়, তাহলে আগামী প্রজন্ম হতে পারে ইতিহাসের প্রথম ‘অমর প্রজন্ম’।
Leave a Reply