free tracking

কিডনি বিকল হওয়ার আগে শরীর যে ৭টি সতর্ক সংকেত দেয়!

কিডনি আমাদের শরীরের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ, যা রক্ত পরিশোধন করে বর্জ্য পদার্থ ও অতিরিক্ত পানি বের করে দেয়। কিডনি যখন ধীরে ধীরে তার কার্যক্ষমতা হারায়, তখন শরীর কিছু সতর্ক সংকেত দিতে শুরু করে। এই লক্ষণগুলো প্রায়শই সাধারণ সমস্যার মতো মনে হলেও, এগুলো কিডনি বিকল হওয়ার প্রাথমিক ইঙ্গিত হতে পারে।

এখানে এমন ৭টি সতর্ক সংকেত আলোচনা করা হলো যা আপনার কিডনি বিকল হওয়ার আগে শরীর দিয়ে থাকে:

১. প্রস্রাবের পরিবর্তন
কিডনি রোগের এটি একটি প্রধান লক্ষণ। কিডনি সঠিকভাবে কাজ না করলে প্রস্রাবের পরিমাণ, রং, বা ফ্রিকোয়েন্সি পরিবর্তন হতে পারে। যেমন:

ঘন ঘন প্রস্রাব হওয়া, বিশেষ করে রাতে।

প্রস্রাবের পরিমাণ কমে যাওয়া বা বেড়ে যাওয়া।

প্রস্রাবের রং গাঢ় হওয়া বা প্রস্রাবের সঙ্গে রক্ত যাওয়া।

প্রস্রাবে অতিরিক্ত ফেনা দেখা যাওয়া, যা প্রোটিন লিকের লক্ষণ।

২. ক্লান্তি ও দুর্বলতা
কিডনি একটি হরমোন (এরিথ্রোপোয়েটিন) তৈরি করে, যা লোহিত রক্তকণিকা উৎপাদনে সাহায্য করে। কিডনি বিকল হলে এই হরমোন উৎপাদন কমে যায়, যার ফলে রক্তাল্পতা দেখা দেয়। রক্তে অক্সিজেনের অভাব হলে আপনি চরম ক্লান্তি ও দুর্বলতা অনুভব করতে পারেন।

৩. শরীর ফুলে যাওয়া
সুস্থ কিডনি শরীর থেকে অতিরিক্ত লবণ ও পানি বের করে দেয়। কিডনি বিকল হলে শরীরে অতিরিক্ত তরল জমতে শুরু করে, যাকে ইডিমা বলা হয়। এই কারণে প্রথমে পা, গোড়ালি ও চোখের চারপাশ ফুলে যায়। আপনার জুতা আঁটসাঁট লাগতে পারে বা আঙুল ফুলে আংটি ছোট মনে হতে পারে।

৪. ত্বকের সমস্যা
কিডনির কার্যকারিতা কমে গেলে রক্তে বর্জ্য পদার্থ জমা হতে থাকে, যা ত্বককে প্রভাবিত করে। এর ফলে ত্বকে প্রচণ্ড চুলকানি, শুষ্কতা, এবং র‍্যাশ দেখা দিতে পারে। ত্বকের রঙে পরিবর্তন আসাও এর একটি লক্ষণ।

৫. ক্ষুধামন্দা ও বমিভাব
রক্তে বিষাক্ত বর্জ্য পদার্থ জমার কারণে আপনার খাবারের স্বাদ বিকৃত হতে পারে, যা ক্ষুধামন্দার কারণ। এছাড়া প্রায়শই বমি বমি ভাব বা বমিও হতে পারে।

৬. পিঠে বা কোমরে ব্যথা
কিডনি বিকল হলে কোমরের নিচের দিকে, পিঠের দুই পাশে বা তলপেটে ব্যথা অনুভূত হতে পারে। এই ব্যথা সব সময় কিডনির সমস্যার জন্য না হলেও, অন্যান্য লক্ষণের সাথে এটি থাকলে তা কিডনি রোগের ইঙ্গিত হতে পারে।

৭. পেশীর টান
কিডনির সমস্যা হলে শরীরের ইলেক্ট্রোলাইট ভারসাম্য নষ্ট হয়ে যায়, বিশেষ করে ক্যালসিয়াম ও পটাসিয়ামের মাত্রা ওঠানামা করে। এর ফলে পেশীতে ঘন ঘন ব্যথা বা টান (muscle cramps) হতে পারে।

যদি আপনি উপরের যেকোনো একটি বা একাধিক লক্ষণ নিয়মিত অনুভব করেন, তাহলে দ্রুত একজন কিডনি বিশেষজ্ঞের (নেফ্রোলজিস্ট) সাথে পরামর্শ করা জরুরি। সঠিক সময়ে রোগ নির্ণয় এবং চিকিৎসা শুরু করলে কিডনি বিকল হওয়া প্রতিরোধ করা সম্ভব।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *