free tracking

হাত-পা জানিয়ে দেবে লিভারের অসুখ, বিশেষজ্ঞদের সতর্কতা!

মানবদেহের সবচেয়ে বড় গ্রন্থি হলো লিভার, যা পেটের ডান পাশের ওপরের অংশে পাঁজরের নিচে অবস্থিত। রক্ত পরিশোধন, পুষ্টি উপাদান বিপাক, পিত্ত উৎপাদন এবং ভিটামিন সংরক্ষণের মতো গুরুত্বপূর্ণ কাজ করে এই অঙ্গটি। লিভারে কোনো ক্ষতি হলে তার প্রভাব শরীরের নানা অংশে দৃশ্যমান হয়, যার মধ্যে হাত ও পা অন্যতম। এসব উপসর্গ দ্রুত শনাক্ত করা গেলে সময়মতো চিকিৎসা নেওয়া সম্ভব হয়। বিশেষজ্ঞরা জানাচ্ছেন, লিভারের ক্ষতির ৫টি লক্ষণ হাত ও পায়ে প্রকাশ পেতে পারে-

১. হাতের তালু লাল হয়ে যাওয়া (পালমার এরিথেমা):
পালমার এরিথেমা বা হাতের তালুতে অস্বাভাবিক লালচে ভাব দেখা দেওয়া লিভারের অসুস্থতার একটি পরিচিত লক্ষণ। সাধারণত বুড়ো আঙুল ও কনিষ্ঠ আঙুলের নিচের অংশে এই লালচে দাগ বেশি দেখা যায়। লিভার ক্ষতিগ্রস্ত হলে রক্তপ্রবাহ ও হরমোনের পরিবর্তনের ফলে এই অবস্থা সৃষ্টি হয়। দুই হাতেই সমানভাবে এই পরিবর্তন দেখা দেয় এবং এতে ব্যথা বা চুলকানি থাকে না। তবে লিভারের অন্যান্য উপসর্গের সঙ্গে এটি দেখা দিলে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া জরুরি।

২. মাকড়সার জালের মতো শিরা (স্পাইডার ভেইন):
স্পাইডার ভেইন বা স্পাইডার অ্যানজিওমা হলো ত্বকের নিচে লাল বা বেগুনি রঙের ক্ষুদ্র রক্তনালীর নেটওয়ার্ক। লিভার রোগে হরমোনের ভারসাম্যহীনতা ও রক্ত জমাট বাঁধার সমস্যার কারণে এটি দেখা দিতে পারে। সাধারণত হাত ও পায়ে এগুলো বেশি দেখা যায়। সিরোসিস ও দীর্ঘস্থায়ী লিভারের অসুস্থতায় স্পাইডার ভেইন হওয়ার ঝুঁকি বেশি। এতে শারীরিক অস্বস্তি না থাকলেও এটি লিভারের কার্যকারিতা হ্রাসের দৃশ্যমান সংকেত।

৩. আঙুল ও পায়ের আঙুল মোটা ও বাঁকানো হওয়া (ক্লাবিং):
ক্লাবিং অবস্থায় আঙুল ও পায়ের আঙুল মোটা হয়ে যায়, ডগা ফুলে ওঠে এবং নখ নিচের দিকে বাঁকিয়ে যায়। এই পরিবর্তন ধীরে ধীরে ঘটে এবং সাধারণত লিভারের অসুস্থতা, রক্তে অক্সিজেনের মাত্রা পরিবর্তন ও রক্ত সঞ্চালন সমস্যার সঙ্গে সম্পর্কিত। জন্ডিস বা অবসাদের মতো লিভারের অন্যান্য লক্ষণের সঙ্গে ক্লাবিং দেখা দিলে অবিলম্বে চিকিৎসা নেওয়া উচিত।

৪. হাত ও পায়ে ফুলে যাওয়া (ইডিমা):
লিভারের গুরুতর অসুস্থতায় হাত ও পায়ে ফুলে যাওয়া একটি সাধারণ লক্ষণ। লিভার পর্যাপ্ত অ্যালবুমিন প্রোটিন উৎপাদন করতে না পারলে রক্তনালীগুলোতে তরল জমা হয় এবং তা টিস্যুতে লিক হয়ে ফুলে যায়। এই সময় ওজন বেড়ে যাওয়া, পেট ফুলে যাওয়া ও অবসাদের মতো উপসর্গও দেখা দিতে পারে। এটি লিভারের রোগের অবনতির একটি স্পষ্ট ইঙ্গিত।

বিশেষজ্ঞদের মতে, এসব লক্ষণ উপেক্ষা না করে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নিলে লিভারের জটিলতা কমানো সম্ভব।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *