অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস জানিয়েছেন, জনগণের ইচ্ছায় তিনি সরকারপ্রধানের দায়িত্ব নিয়েছেন, ব্যক্তিগত ইচ্ছায় নয়। মালয়েশিয়া সফরকালে দেশটির রাষ্ট্রীয় সংবাদ সংস্থা বারনামাকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি এ কথা বলেন।
ড. ইউনূস বলেন, “এটা আমার সিদ্ধান্ত নয়, এটা সেইসব মানুষের দাবি, যারা পরিবর্তন চেয়েছেন। আমি কেবল তাঁদের সহায়তা করছি।” তিনি আরও জানান, দায়িত্ব পালনে নানা বাধা রয়েছে এবং দেশের বাইরে থাকা কিছু রাজনৈতিক উপাদান ইচ্ছাকৃতভাবে পরিস্থিতি অস্থিতিশীল করার চেষ্টা করছে।
ভোটের অপেক্ষায় থাকা তরুণ প্রজন্মের প্রসঙ্গ টেনে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, “গত দেড় দশকে বিপুল সংখ্যক তরুণ ভোটার হয়েছেন। অনেকে ১০ বছর, কেউবা ১৫ বছর ধরে ভোট দেওয়ার সুযোগের অপেক্ষায় আছেন। এবার তাঁরা প্রথমবারের মতো ভোট দেওয়ার সুযোগ পাবেন।”
সাক্ষাৎকারে ড. ইউনূস রোহিঙ্গা সংকট নিয়েও কথা বলেন। তিনি আসিয়ানের সভাপতি দেশ হিসেবে মালয়েশিয়ার কাছে সংকট সমাধানে কার্যকর ভূমিকা রাখার আহ্বান জানান। তাঁর ভাষায়, গত ১৮ মাসে নতুন করে দেড় লাখ রোহিঙ্গা বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছে। এর সঙ্গে আগের ১২ লাখ যুক্ত হয়ে পরিস্থিতি জটিল হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্র তহবিল বন্ধ করে দেওয়ায় সংকট আরও কঠিন হয়ে উঠেছে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
প্রধান উপদেষ্টা আরও জানান, রোহিঙ্গা ইস্যুর স্থায়ী সমাধানে তিনটি আন্তর্জাতিক সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে—আগস্টে কক্সবাজারে, সেপ্টেম্বরে জাতিসংঘ সাধারণ অধিবেশনের ফাঁকে এবং বছরের শেষে দোহায়।
১১ আগস্ট মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী আনোয়ার ইব্রাহিমের আমন্ত্রণে সফরে যান ড. ইউনূস। লালগালিচা সংবর্ধনা, গার্ড অব অনার ও গান স্যালুটের মাধ্যমে তাঁকে অভ্যর্থনা জানানো হয়। তিন দিনের এ সফরে তিনি দ্বিপাক্ষিক বৈঠক ছাড়াও একাধিক আলোচনায় অংশ নেন। এ সময় বাংলাদেশ ও মালয়েশিয়ার মধ্যে প্রতিরক্ষা, জ্বালানি, বাণিজ্য ও গবেষণা প্রতিষ্ঠানসংক্রান্ত পাঁচটি সমঝোতা স্মারক এবং তিনটি নোট বিনিময় হয়।
সফরের দ্বিতীয় দিনে মালয়েশিয়ার ন্যাশনাল বিশ্ববিদ্যালয় ড. ইউনূসকে সম্মানসূচক ডক্টরেট ডিগ্রি প্রদান করে। তিনি ১৪ আগস্ট রাতে দেশে ফেরেন।
Leave a Reply