সেনাসদস্যদের প্রতি দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানিয়ে সেনাপ্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান বলেছেন, “দেশের মানুষ এখন সেনাসদস্যদের দিকে তাকিয়ে আছে। তোমরাই দেশের ভবিষ্যৎ। তাই দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ হতে হবে এবং বাহিনীর চেইন অব কমান্ড অক্ষুণ্ন রাখতে হবে।”
মঙ্গলবার (১৯ আগস্ট) সকালে ঢাকা সেনানিবাসে ‘অফিসার্স অ্যাড্রেস’ অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন। অনুষ্ঠানে পদস্থ কর্মকর্তারা সরাসরি উপস্থিত ছিলেন এবং দেশের সব সেনা স্থাপনার কর্মকর্তারা ভার্চ্যুয়ালি যুক্ত ছিলেন।
সেনাপ্রধান বলেন, “সেনাবাহিনী একটি পেশাদার বাহিনী। মাঠে দায়িত্ব পালনের সময় পেশাদারিত্ব বজায় রাখতে হবে। কোনো প্রতিশোধমূলক কর্মকাণ্ডে জড়ানো যাবে না।”
বাংলাদেশ সেনাবাহিনী নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়ানো বিভিন্ন মন্তব্য প্রসঙ্গে সেনাপ্রধান বলেন, “এসব মন্তব্যে অখুশি হওয়ার কিছু নেই। যারা এসব বলছে, তারা আমাদের সন্তানের বয়সী। তারা বড় হলে নিজেদের ভুল বুঝতে পারবে এবং তখন নিজেরাই লজ্জিত হবে।”
কারো নাম না করে সেনাপ্রধান জানান, একজন সেনাসদস্যের বিরুদ্ধে রাজনৈতিক সংশ্লিষ্টতার অভিযোগ তদন্তাধীন, এবং অভিযোগ প্রমাণিত হলে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। একইভাবে, এক কর্মকর্তার বিরুদ্ধে নারী নির্যাতনের অভিযোগ নিয়েও তদন্ত চলছে।
তিনি বলেন, “নৈতিক স্খলনের বিষয়ে কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না। তবে মিডিয়া ট্রায়ালের ভিত্তিতে কাউকে সাজা দেওয়া হবে না। অভিযোগ প্রমাণিত হলে অবশ্যই ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
সেনাপ্রধান আরও বলেন, “একজন সেনা কর্মকর্তাকে তৈরি করতে রাষ্ট্র বিপুল অর্থ ব্যয় করে। তাই আগেভাগেই নজর রাখতে হবে, কেউ যেন অপরাধে জড়িয়ে না পড়ে। অপরাধে জড়ালে তাকে সরিয়ে দিলে সেটা রাষ্ট্রের অর্থের অপচয়।”
আসন্ন জাতীয় নির্বাচন ঘিরে সেনাবাহিনীর প্রস্তুতির কথা জানিয়ে সেনাপ্রধান বলেন, “দেশ এখন নির্বাচনের দিকে যাচ্ছে। অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন অনুষ্ঠানে সরকারকে সহায়তার জন্য সেনাবাহিনী প্রস্তুত রয়েছে।”
তিনি জানান, এবারের নির্বাচনে সেনাবাহিনী দীর্ঘ সময় মাঠে থাকবে, যা অতীতে খুব একটা দেখা যায়নি। তাই সেনাসদস্যদের স্থানীয় জনগণ এবং প্রশাসনের সঙ্গে ভালো সম্পর্ক বজায় রাখার আহ্বান জানান। “দূরত্ব থাকলে তা দূর করতে হবে,” বলেন তিনি।
Leave a Reply