free tracking

১০ শীর্ষ কর্মকর্তার পলায়নের নেপথ্যের কাহিনি জানলে চমকে উঠবেন!

“যখনই সেই কালো পোশাক দেখি, আমার মনে হয় যে তারা কালো পোশাকের হায়না, তারা রাক্ষস” – এই কথাগুলো কোনো চলচ্চিত্রের সংলাপ নয়, বরং এক অসহায় কন্যার আর্তনাদ, যার বাবাকে তুলে নিয়ে গিয়েছিল র‍্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‍্যাব)। শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর গঠিত ‘গুম তদন্ত কমিশন’ গুমের শিকার হাজারো পরিবারের মনে বিচারের আশা জাগিয়েছিল, কিন্তু সেই আশা এখন পরিণত হয়েছে এক নির্মম পরিহাসে।

গুম, খুন এবং অকথ্য নির্যাতনের অভিযোগে অভিযুক্ত ১০ জন সেনা কর্মকর্তার বিরুদ্ধে দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা, পাসপোর্ট বাতিল এবং গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হয়েছিল। আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে শেখ হাসিনা এবং অন্যান্যদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারির আদেশও দেখানো হয়। কিন্তু রাষ্ট্রের সবচেয়ে সুরক্ষিত বাহিনীর এই সদস্যরা সকল নিরাপত্তা বেষ্টনী ভেদ করে লাপাত্তা হয়ে গেছেন।

অভিযোগ ও অভিযুক্ত

অভিযোগ রয়েছে, লেফটেন্যান্ট জেনারেল থেকে শুরু করে ওয়ারেন্ট অফিসার পর্যন্ত এই কর্মকর্তারা কেবল সাধারণ অপরাধী ছিলেন না, বরং তারা ছিলেন এক রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাসযন্ত্রের চালক। তাদের নেতৃত্বেই বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড, গুম এবং ‘আয়নাঘরের’ মতো টর্চার সেলে নারকীয় নির্যাতন চালানো হতো। তালিকায় প্রতিরক্ষা গোয়েন্দা মহাপরিদপ্তরের (ডিজিএফআই) সাবেক প্রধানদের নাম থাকায় অপরাধের গভীরতা সহজেই অনুমান করা যায়।

পলাতক কর্মকর্তারা কোথায়?

এই ১০ জন অভিযুক্ত এখন কোথায়, সেই প্রশ্নের উত্তর কারও কাছে নেই। গুম কমিশনের সদস্য নূর খান লিটন ভারতের বিশাল সীমান্ত দিয়ে পালিয়ে যাওয়ার সম্ভাবনার দিকে ইঙ্গিত দিয়েছেন। আবার এমন কথাও শোনা যায় যে, বিমানবন্দরের ইন্টারনেট সংযোগ বন্ধ করে ইমিগ্রেশন পার হয়েছেন তারা। তারা কি প্রতিবেশী দেশে আশ্রয় নিয়েছেন, নাকি ইউরোপ, আমেরিকা বা মধ্যপ্রাচ্যের কোনো দেশে গা ঢাকা দিয়েছেন, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।

বিচার নিয়ে হতাশা

ভুক্তভোগী পরিবারগুলো আজ হতাশ। তারা বিচার চায়, কিন্তু যাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ, তারাই আজ মুক্ত বাতাসে ঘুরে বেড়াচ্ছে। সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবীরা বলছেন, এই বিচার নিশ্চিত করা না গেলে ভবিষ্যতে অন্যরা এমন অপরাধ করতে আরও উৎসাহিত হবে।

এই পলাতক কর্মকর্তারা আজ শুধু বাংলাদেশের বিচার ব্যবস্থাকেই চ্যালেঞ্জ করছেন না, তারা হাজারো মানুষের কান্না আর অপেক্ষাকে উপহাস করছেন। বিচারপ্রার্থী পরিবারগুলোর চোখে এখন কেবলই শুকিয়ে যাওয়া জলের দাগ আর র‍্যাবের গাড়ি দেখলে আঁতকে ওঠার ভয়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *