free tracking

জামায়াতের সঙ্গে জোট নিয়ে মুখ খুললেনঃ মামুনুল হক!

দেশের ইসলামি রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে বৃহৎ ঐক্য গঠনের আলোচনা চললেও তা বাস্তবে রূপ নেওয়া সহজ হবে না বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। বিশেষ করে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর নেতৃত্বে এ ঐক্যের সম্ভাবনা নিয়ে দেখা দিয়েছে নানা সংশয় ও দ্বিধা।

আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে জামায়াতের পক্ষ থেকে বিভিন্ন ইসলামি দলকে এক ছাতার নিচে আনার চেষ্টা চালানো হচ্ছে। তবে সংশ্লিষ্ট একাধিক দলের নেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, বেশিরভাগ দল জামায়াতের সঙ্গে জোটে যেতে অনিচ্ছুক।

অনেক দলের নেতারা বলছেন, জোট বা সমঝোতার আলোচনা এখনো শুধু টেবিলেই সীমাবদ্ধ, মাঠপর্যায়ে কোনো দৃশ্যমান অগ্রগতি নেই। কেউ প্রকাশ্যে জামায়াতকে না বলতে না চাইলেও তারা পৃথক ইসলামি জোট গঠনের কথাও ভাবছেন।

জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদের সদস্য ও ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সেক্রেটারি শফিকুল ইসলাম মাসুদ বলেন, ‘বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী দেশের সব শ্রেণির মানুষকে সঙ্গে নিয়ে এগিয়ে যেতে চায়। জামায়াতের সঙ্গে দেশের সব শ্রেণির মানুষের পূর্ণ সমর্থন আছে। তিনি বলেন, আগামী নির্বাচনে সব ইসলামি দল নিয়ে এক বৃহৎ জোটের জন্য আমরা কাজ করছি। এ বিষয়ে আলেম-ওলামা ও ইসলামি রাজনীতিকদের ব্যাপক সাড়া পাচ্ছি। নির্বাচন যত কাছে আসবে, আমাদের এ প্রক্রিয়া তত দৃশ্যমান ও সুসংগঠিত হবে।

অনেক ইসলামি দল জামায়াতের সঙ্গে জোটে যেতে চাচ্ছে না-এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমরা চেষ্টা করছি। আরও সময় গেলে আশা করি একটি শক্তিশালী ঐক্য বা সমঝোতা দেখতে পারবেন। আগামী নির্বাচনে ইসলামি দলগুলো মিলে কমপক্ষে এক বাক্স নীতিতে সমঝোতায় আসতেই হবে বলে তিনি আশা করেন।’

এ প্রসঙ্গে বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের আমির মাওলানা মামুনুল হক জানান, ‘ঐক্য প্রক্রিয়ার সঙ্গে প্রথম থেকে থাকলেও জামায়াতে ইসলামীর সঙ্গে জোটে যাচ্ছে না তার দল।’

তিনি বলেন, ‘নির্বাচনি সমঝোতার বিষয়ে আমরা এখনো তেমন কিছু ভাবছি না। ইসলামী আন্দোলনের সঙ্গে নির্বাচনি সমঝোতার বিষয়ে আমাদের একাধিক বৈঠক ও কথাবার্তা হয়েছে। তবে জামায়াতের সঙ্গে নির্বাচনি সমঝোতার বিষয়ে এখনো কোনো অফিশিয়াল আলোচনা আমরা করিনি। জামায়াত এবং আমাদের চিন্তার পার্থক্যটা বিরাট। মাওলানা মওদুদী সাহেবের যে চিন্তাধারা, তার সঙ্গে ঐতিহ্যগতভাবেই আমাদের চিন্তাধারার পার্থক্য রয়েছে। সেটাই মূল পার্থক্য। এছাড়া জামায়াতের সঙ্গে আমাদের বৃহত্তর ইসলামিক উম্মাহর চিন্তার জায়গায় পার্থক্য তো আছেই। এসব পার্থক্যের কারণে এখনো মূলধারার আলেমসমাজ জামায়াতে ইসলামীকে সমর্থন করেননি।’

ইসলামী ঐক্যজোটের মহাসচিব মুফতি সাখাওয়াত হোসেন রাজী বলেন, মাঠপর্যায়ে জামায়াত নিয়ে নেতিবাচক ধারণা আছে। আলেমদের মতামতের বাইরে আমরা যাব না।

অন্যদিকে, চরমোনাই পীরের নেতৃত্বাধীন ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ জামায়াতের সঙ্গে নির্বাচনি সমঝোতার ব্যাপারে এখনো দ্বিধায় থাকলেও, রাজনৈতিক মহলে আলোচনা আছে—দুই দলের মধ্যে সখ্যতা বেড়েছে, বিশেষ করে সাম্প্রতিক পিআর ইস্যুতে অভিন্ন অবস্থানকে কেন্দ্র করে।

ইসলামী আন্দোলনের সহকারী মহাসচিব মাওলানা আহমদ আবদুল কাইয়ুম বলেন, আমরা ঐক্যের পক্ষে, প্রয়োজনে ছাড় দিতে প্রস্তুত। তবে জামায়াতের সঙ্গে এখনো কোনো অফিসিয়াল বৈঠক হয়নি।

বর্তমানে দেশে নিবন্ধিত ১০টি ইসলামি রাজনৈতিক দল রয়েছে। এর বাইরেও বেশ কয়েকটি অনিবন্ধিত ছোট ছোট দল সক্রিয়। অতীতে বহুবার ঐক্য গড়ার চেষ্টায় ব্যর্থ হয়েছে দলগুলো। তবে ৫ আগস্ট পরবর্তী রাজনৈতিক বাস্তবতা ও আগাম নির্বাচন সম্ভাবনার প্রেক্ষাপটে আবারও ঐক্যপ্রক্রিয়ার আলোচনা সামনে এসেছে।

সূত্র: যুগান্তর

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *