free tracking

সকালে ঘুম থেকে উঠেই গোড়ালি ব্যথা! কেন হয়, করণীয় কী

ঘুম থেকে ওঠার পর বিছানা থেকে নামতেই হঠাৎ করে গোড়ালিতে তীব্র ব্যথা—এ অভিজ্ঞতা অনেকেরই হয়। চিকিৎসকেরা জানাচ্ছেন, এটি আসলে প্ল্যান্টার ফ্যাসাইটিস নামে পরিচিত একটি সমস্যা। পায়ের পাতার নিচে থাকা মোটা পর্দা বা ‘প্ল্যান্টার ফ্যাসিয়া’তে প্রদাহ হলে এ ব্যথা দেখা দেয়। সাধারণত কিছুক্ষণ হাঁটাহাঁটির পর ব্যথা কমে আসে, তবে অনেকের ক্ষেত্রে তা দীর্ঘস্থায়ী হয়।

কারা বেশি ঝুঁকিতে
বিশেষজ্ঞদের মতে, সাধারণত ৪০ থেকে ৬০ বছর বয়সীদের মধ্যে এ রোগ বেশি দেখা যায়। দীর্ঘ সময় দাঁড়িয়ে কাজ করা শিক্ষক, কারখানার শ্রমিক, খেলোয়াড় বা নৃত্যশিল্পীরাও ঝুঁকির মধ্যে থাকেন। অতিরিক্ত ওজন বা স্থূলতা গোড়ালির ওপর বাড়তি চাপ সৃষ্টি করে, যা ব্যথার অন্যতম কারণ। কারও কারও পায়ের বাঁক (আর্চ) অস্বাভাবিক হলে তারাও এ সমস্যায় ভুগতে পারেন।

এছাড়া, খালি পায়ে শক্ত মেঝেতে হাঁটা বা দৌড়ানো, ভুল মাপের শক্ত জুতা পরাও ঝুঁকি বাড়ায়। বিশেষজ্ঞরা জানান, সকালে ঘুম থেকে ওঠার পর টিস্যু হঠাৎ প্রসারিত হয় বলেই ব্যথা সবচেয়ে বেশি অনুভূত হয়।

শুধু প্ল্যান্টার ফ্যাসাইটিসই নয়, সকালের গোড়ালি ব্যথা বা শক্ত হয়ে যাওয়ার পেছনে আরও কিছু কারণ থাকতে পারে। যেমন—

আর্থ্রাইটিস: গাঁটে প্রদাহ বা ক্ষয়জনিত ব্যথা।
টেন্ডনাইটিস: অ্যাচিলিস টেন্ডনে প্রদাহ হলে সকালে হাঁটা শুরু করতে ব্যথা হয়।
আঘাত বা স্প্রেইন: পুরোনো চোটের প্রভাব দীর্ঘস্থায়ী ব্যথার কারণ হতে পারে।

করণীয় কী
চিকিৎসকেরা বলছেন, প্রাথমিক পর্যায়ে কিছু সহজ পদক্ষেপেই এ সমস্যা অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে রাখা যায়—

প্রতিদিন কিছুক্ষণ পা উঁচু করে রাখা।
বড় ফিতা বা তোয়ালে দিয়ে পায়ের পাতায় স্ট্রেচ করা।
দিনে কয়েকবার বরফ সেঁক দেওয়া।
সকালে ও রাতে কুসুম গরম পানিতে পা ভিজিয়ে রাখা।
আরামদায়ক ও সাপোর্টিভ জুতা ব্যবহার করা, হাই হিল এড়িয়ে চলা।
ওজন নিয়ন্ত্রণে আনা।
সাঁতার বা হালকা ব্যায়ামের মাধ্যমে শরীর সচল রাখা।
প্রয়োজনে প্যারাসিটামল বা আইবুপ্রোফেনজাতীয় ব্যথানাশক খাওয়া যেতে পারে। তবে দীর্ঘস্থায়ী ক্ষেত্রে ফিজিওথেরাপি, নাইট স্প্লিন্ট, এমনকি স্টেরয়েড ইনজেকশন বা বিশেষ চিকিৎসার প্রয়োজন হতে পারে।

বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ
চিকিৎসকেরা বলছেন, সকালে নিয়মিত স্ট্রেচিং ও আরামদায়ক জুতা ব্যবহার করলে বেশিরভাগ মানুষ এ ব্যথা থেকে মুক্তি পান। তবে দীর্ঘদিনেও যদি উন্নতি না হয়, তাহলে অবশ্যই বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া জরুরি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *