শরীরের জন্য পানি খুবই গুরুত্বপূর্ণ উপাদান। সুস্থ-স্বাভাবিক জীবনের জন্য প্রতিদিন পর্যাপ্ত পরিমাণ পানি পানের কথা বলে থাকেন বিশেষজ্ঞরা। প্রায় সবাই প্রতিদিন পানি পান করেন। কেউ হয়তো পর্যাপ্ত পরিমাণ করেন, কারও হয়তো প্রতিদিনের চাহিদা পূরণ হয় না। তবে এটা নিশ্চিত, সবাই পানি পানের গুরুত্ব অনুধাবন করতে পারেন।
পানি খুবই প্রয়োজনীয় হলেও এটি পান করা সবচেয়ে সহজ মনে করি আমরা। সংবামাধ্যম ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসের প্রতিবেদন অনুযায়ী, আমরা যেভাবে পানি পান করি, তাতে কী পার্থক্য থাকে? এ প্রশ্নের পরই বলা হয়েছে, পানি দ্রুত গিলে ফেলা থেকে শুরু করে খাবারের সময় পান করাসহ নানা ভুল হয় আমাদের। পানির ব্যাপারে বিশিষ্ট পুষ্টিবিদ রায়ান ফার্নান্দো বলেছেন, স্বাস্থ্য সর্বোচ্চ ভালো অবস্থানে রাখতে ও শক্তি সঞ্চারে পানি পানের ভুলগুলো করা যাবে না।
ভুলগুলো জেনে নেয়া যাক-
দ্রুত পানি পান:
খুব দ্রুত পানি পান করা ছোট্ট একটি শক পাওয়ার সামিল। দ্রুত পানি পান না করাই ভালো। পানি গিলে ফেলার আগে মাত্র ২-৩ সেকেন্ডের জন্য হলেও মুখের চারপাশে সংকুচিত করা উচিত।
খুব গরম বা ঠান্ডা পানি পান:
অনেকেই শীতের সময় গরম পানি এবং গরমের সময় ঠান্ডা পানি পান করেন। এখানেই মূলত ভুল হয়। সবসময় নিয়মিত তাপমাত্রায় পানি পান করতে হবে। তা না হলে শরীরকে প্রথমে বাসা-বাড়ির স্বাভাবিক তাপমাত্রায় আনতে হবে এবং এটি প্রক্রিয়ার জন্য দ্বিগুণ চেষ্টা চালাতে হবে।
খাবারের সময় পানি পান:
খাবার খাওয়ার সময় পানি পান করার কথা নিষেধ করা হয়। এতে খাবার ভেঙে ফেলা কঠিন হয়ে যায়। খাবার খাওয়ার অন্তত এক ঘণ্টা আগে বা পরে পানি পান করা ভালো।
প্লাস্টিকের বোতলে পানি রাখা:
অনেকেই প্লাস্টিকের বোতলে পানি সংরক্ষণ করেন এবং বোতল থেকে পানি পান করেন। এতে স্বাস্থ্যের ক্ষতি হয়। কেননা, তাপে রাখা প্লাস্টিকের বোতলগুলো মাইক্রোপ্লাস্টিক ছেড়ে দেয়, যা পানির সঙ্গে মিশে যায়।
পানি পানের সময় উল্লেখিত ভুলগুলো নিয়ে আয়ুর্বেদ বিশেষজ্ঞ বিকাশ চাওলা বলেছেন, হালকা গরম পানি অপরিহার্য হলেও বরফ ঠান্ডা পানি এড়ানো উচিত। বরফযুক্ত পানি হজমের ক্ষমতা কমায় এবং পরিপাকতন্ত্রে অসংখ্য সমস্যা সৃষ্টি করে। গরম পানি ত্বক পরিষ্কার করে ও ব্রণ-জিট দূর করে। ত্বক পরিষ্কার, ব্রণের সমস্যা থাকলে নারী ও পুরুষ উভয়ই ব্যবহার করতে পারেন গরম পানি।
তিনি আরও বলেছেন, খাবার খাওয়ার মাঝে পানি পানের অভ্যাস রয়েছে অনেকের, এটি পুরোপুরি এড়িয়ে চলা উচিত। এতে পাচনতন্ত্র প্রভাবিত হয় এবং পেটে অম্বল ও অ্যাসিড হওয়ার সম্ভাবনা থাকে।
এদিকে নয়ডা ইন্টারন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব মেডিকেল সায়েন্সেস অ্যান্ড হসপিটালের অ্যাসোসিয়েট জেনারেল মেডিসিনের প্রফেসর ডক্টর এস এ রেহমান বলেছেন, বিসফেরনল-এ (বিপিএ) ও থ্যালেটসের মতো রাসায়নিকগুলো তাপ বা সূর্যের আলোর সংস্পর্শে আসলে তখন পানিতে ছড়িয়ে পড়ে। বিপিএ, ফ্যাথলেটসসহ এন্ডোক্রাইন বিঘ্নকারীরা বৈজ্ঞানিকভাবে বিকাশ, প্রজনন ও হরমোন ভারসাম্যহীনতার সঙ্গে যুক্ত। মাইক্রোপ্লাস্টিক দ্বারা দূষিত পানি কোষগুলোয় প্রদাহ ও ক্ষতি করতে পারে।
Leave a Reply