নিজের অজান্তে শরীরে নানা ধরনের রোগ বাসা বাঁধে। এর মধ্যে অন্যতম হেপাটাইটিস ভাইরাস। লিভারের মতো গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ দুর্বল হলে এ সমস্যার শিকার হয়ে থাকেন অনেকে। এটি হচ্ছে এক প্রকার ভাইরাস, যা লিভারের প্রদাহ তৈরির কারণ। এটি হলে ক্লান্তি, পেট ব্যথা, জন্ডিস ও বমি বমি ভাবের মতো লক্ষণ সৃষ্টি করে। যা পরবর্তীতে লিভার সিরোসিস বা ক্যানসারের কারণ হতে পারে।
হেপাটাইটিস ভাইরাস পাঁচ প্রকার, যেমন- এ, বি, সি, ডি, ই। প্রতিটি ভাইরাসের সংক্রমণ পদ্ধতি ও প্রতিরোধের উপায় আলাদা। তবে ভ্যাকসিন, নিরাপদ অভ্যাস ও ব্যক্তিগত স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার মাধ্যমে এই ভাইরাস প্রতিরোধ করা সম্ভব। এ ব্যাপারে ভারতীয় একটি সংবাদমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলেছেন কলকাতার সিএমআরই হাসপাতালের গ্যাস্ট্রোএনটেরোলজিস্ট চিকিৎসক সোমনাথ মুখোপাধ্যায়। তাহলে এ চিকিৎসকের পরামর্শ জেনে নেয়া যাক।
হেপাটাইটিস নিয়ে মানুষের ধারণা:
চিকিৎসকের ভাষ্যমতে―হেপাটাইটিস এমন রোগ, যা ঠিক সময়ে চিকিৎসা করানো হলে অধিকাংশ ক্ষেত্রেই রোগী ঠিক হয়ে যান। পাশাপাশি একটু সচেতন থাকলে এই রোগ প্রতিরোধও করা যায়। প্রতিবছর বিশ্ব হেপাটাইটিস দিবস পালন করা হয় মূলত রোগটি সম্পর্কে মানুষের ভুল ধারণাগুলো ভেঙে ফেলার জন্য। অনেকেই এই রোগ সম্পর্কে সঠিকভাবে কোনো কিছু জানেন না।
হেপাটাইটিসের কারণে কী হতে পারে:
ডা. সোমনাথ জানিয়েছেন, হেপাটাইটিস ‘এ’ থেকে ‘ই’ পর্যন্ত মোট পাঁচ ধরনের হতে পারে। এর মধ্যে হেপাটাইটিস ‘বি’ ও ‘সি’ সংক্রমণ বেশি ছড়ায়। অধিকাংশ সময় রোগ দুটি চুপিসাড়ে মানুষের শরীরে বাসা বাঁধে। যা রোগী বুঝেই উঠতে পারেন না। যে কারণে সঠিক সময় চিকিৎসাও সম্ভব হয় না। আবার এ রোগ শরীরে থেকে গেলে লিভার ফেইলিউর, লিভার ক্যানসার, সিরোসিস অব লিভারের মতো ভয়াবহ রোগ হওয়ার আশঙ্কা থাকে।
হেপাটাইটিস কীভাবে ছড়ায়:
নানাভাবে ছড়িয়ে পড়তে পারে হেপাটাইটিস। তবে সাধারণ কিছু মাধ্যমে এর সংক্রমণের হার বেশি দেখা যায়। এ ব্যাপারে চিকিৎসক সোমনাথ জানিয়েছেন- হেপাটাইটিস রক্তদান, ব্লেড, সূচ ইত্যাদির মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়তে পারে। আবার যৌন মিলন, খাবার বা পানির মাধ্যমেও ছড়াতে পারে। হেপাটাইটিস ‘এ’ ও ‘ই’ এভাবে ছড়ায়। অপরিষ্কার ও অপরিচ্ছন্ন থাকার কারণে হেপাটাইটিসের মতো রোগ হওয়ার সম্ভাবনা থাকে।
হেপাটাইটিসের লক্ষণ:
এ সংক্রমণের মূল লক্ষণগুলো আমাদের শরীরে বাইরের অংশে ফুটে উঠে। সেদিকে একটু নজর রাখলেই স্পষ্টভাবে বোঝা যায়, শরীরে কোনো রোগ বাসা বেঁধেছে কিনা। লক্ষণগুলো হচ্ছে- চোখের মণির সাদা অংশ হলুদ হওয়া, ত্বকের চুলকানি, উদরাংশ স্ফীত হওয়া, ত্বক হলদেটে হওয়া, মলের রং ফ্যাকাশে হওয়া ও প্রস্রাবের রং কলচে হয়ে যায়।
Leave a Reply