free tracking

মানুষের শরীরে শূকরের ফুসফুস প্রতিস্থাপন, এরপর যা ঘটল তাতে হতবাক বিজ্ঞানীরা!

চিকিৎসা বিজ্ঞানে এক যুগান্তকারী অগ্রগতি ঘটেছে চীনে। দেশটির চিকিৎসকরা প্রথমবারের মতো মানুষের শরীরে শূকরের ফুসফুস প্রতিস্থাপন করেছেন। ‘নেচার মেডিসিন’ জার্নালে প্রকাশিত এ গবেষণা চিকিৎসা জগতে নতুন সম্ভাবনার দ্বার খুলে দিয়েছে।

২০২৪ সালের মে মাসে গুয়াংজু মেডিক্যাল ইউনিভার্সিটির প্রথম সংযুক্ত হাসপাতালের সার্জনরা এ জটিল অপারেশনটি সম্পন্ন করেন। মস্তিষ্কে গুরুতর রক্তক্ষরণের শিকার হয়ে মস্তিষ্ক-মৃত অবস্থায় থাকা ৩৯ বছর বয়সী এক পুরুষের ফুসফুস প্রতিস্থাপন করা হয় জিনগতভাবে পরিবর্তিত শূকরের ফুসফুস দিয়ে।

গবেষকরা জানিয়েছেন, প্রতিস্থাপনের পর ফুসফুসটি টানা নয় দিন কার্যকরভাবে কাজ করেছে। এ সময় শূকরের ফুসফুস অক্সিজেন ও কার্বন ডাই-অক্সাইডের বিনিময় প্রক্রিয়া সফলভাবে সম্পন্ন করে, যা ফুসফুসের প্রধান কাজ।

কেন এটি বড় অগ্রগতি?

সাধারণত মানুষের শরীরে মানুষের ফুসফুস প্রতিস্থাপনই অত্যন্ত জটিল প্রক্রিয়া। সেখানে শূকরের অঙ্গ প্রতিস্থাপন এক বিশাল চ্যালেঞ্জ। সবচেয়ে বড় ঝুঁকি হলো হাইপার-অ্যাকিউট রিজেকশন, যেখানে প্রতিস্থাপিত অঙ্গ কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই ব্যর্থ হয়ে যায়। কিন্তু জিন-সম্পাদিত শূকরের ফুসফুস মানবদেহে টিকে থেকে সফলভাবে কাজ করেছে, যা বিশেষজ্ঞদের মতে এক বড় অগ্রগতি।

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ম্যাসাচুসেটস জেনারেল হাসপাতালে সার্জন রিচার্ড পিয়ারসন তৃতীয় বলেন, ‘এটি আমাদের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এক সাফল্য। শূকরের ফুসফুস মানুষের শরীরে কীভাবে কাজ করে, সে বিষয়ে মূল্যবান তথ্য পাওয়া গেল।’

এ সাফল্যের আগে জিন-সম্পাদিত শূকরের কিডনি মানুষের শরীরে কয়েক মাস কার্যকরভাবে টিকে থাকার ঘটনা ঘটেছিল। ফলে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, অঙ্গ প্রতিস্থাপনে শূকরের ব্যবহার নিয়ে গবেষণায় একে এক নতুন দিগন্ত হিসেবে দেখা যেতে পারে।

তবে যুক্তরাজ্যের নিউক্যাসল ইউনিভার্সিটির রেসপিরেটরি ট্রান্সপ্লান্ট মেডিসিনের অধ্যাপক অ্যান্ড্রু ফিশার সতর্ক করে বলেন, ‘এটি নিঃসন্দেহে আশাব্যঞ্জক পদক্ষেপ, কিন্তু এখনই বলা যাবে না যে আমরা শূকরের ফুসফুস দিয়ে মানুষের ফুসফুস প্রতিস্থাপনের যুগে প্রবেশ করছি। আরও দীর্ঘ গবেষণা ও উন্নয়ন প্রয়োজন।’

সূত্র: এনডিটিভি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *