free tracking

সাবেক আইজিপি ক্ষমা পাবেন কি-না, যা জানালেন চিফ প্রসিকিউটর!

আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে দেওয়া জবানবন্দিতে সাবেক পুলিশ মহাপরিদর্শক (আইজিপি) চৌধুরী আবদুল্লাহ আল মামুন স্বীকার করেছেন, আন্দোলন দমন করতে গিয়ে অতিরিক্ত বল প্রয়োগের মাধ্যমে ছাত্র ও সাধারণ মানুষের মৃত্যুর ঘটনায় তিনি লজ্জিত, অনুতপ্ত এবং আদালতের কাছে ক্ষমাপ্রার্থী।

যদিও তিনি ক্ষমা পাবেন কি-না, সে বিষয়ে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের চিফ প্রসিকিউটর গাজী মো. তাজুল ইসলাম। আজ মঙ্গলবার (২ সেপ্টেম্বর) ট্রাইব্যুনালে শুনানি শেষে সাংবাদিকদের তিনি বলেন, ক্ষমা দেওয়া বা না দেওয়ার সিদ্ধান্ত আদালতের এখতিয়ার। এখানে প্রসিকিউশনের কোনো ভূমিকা নেই।

চিফ প্রসিকিউটর আরও বলেন, সাবেক আইজিপি নিজের বিবেকের তাড়নায় অপরাধ স্বীকার করেছেন এবং রাজসাক্ষী হতে আবেদন করেছেন। আদালত বিষয়টি বিচার-বিবেচনা করে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবেন।

তিনি জানান, মামুনের জবানবন্দি অত্যন্ত শক্তিশালী প্রমাণ হিসেবে বিবেচিত হবে এবং তা বিগত ১৫ বছরে দেশে ঘটে যাওয়া গুম-খুনের প্রেক্ষাপটে গুরুত্বপূর্ণ দলিল হিসেবে কাজ করবে। তার ভাষায়, এ সাক্ষ্য অকাট্য, বিশ্বের কোনো আদালতেও এটি দুর্বল করার সুযোগ নেই।

বাংলাদেশের ফৌজদারি কার্যবিধির ৩৩৭ ধারা অনুযায়ী, রাজসাক্ষী হলেন সেই ব্যক্তি, যিনি অপরাধের সঙ্গে জড়িত থাকলেও, সত্য ঘটনা প্রকাশের বিনিময়ে শর্তসাপেক্ষে ক্ষমা পেতে পারেন। তবে, শর্ত হলো—তাকে অবশ্যই অপরাধের প্রকৃত ঘটনা, মূল অপরাধী ও অন্য সহযোগীদের সম্পর্কেও সম্পূর্ণ ও সত্য তথ্য দিতে হবে।

আইন অনুযায়ী, কোনো রাজসাক্ষী যদি মিথ্যা সাক্ষ্য দেন বা তথ্য গোপন করেন, তাহলে তাকে আবার আসামি হিসেবে গণ্য করা হয়। এ ধরনের ক্ষেত্রে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত দেন আদালত। সরকারি কৌঁসুলিও চাইলে রাজসাক্ষীর সেই মর্যাদা প্রত্যাহারের জন্য প্রত্যয়ন করতে পারেন।

আইন বিশেষজ্ঞ গাজী শামসুর রহমান তার ‘ফৌজদারি কার্যবিধির ভাষ্য’ গ্রন্থে লিখেছেন, যদি রাজসাক্ষীর বক্তব্য নির্ভরযোগ্য অন্যান্য প্রমাণ দ্বারা সমর্থিত হয়, তাহলে সেটার ভিত্তিতে অন্য আসামিদের শাস্তি দেওয়া যায়।

উল্লেখ্য, বর্তমানে সাবেক আইজিপি মামুনের স্বীকারোক্তি ও রাজসাক্ষী হওয়ার আবেদন আদালতের বিবেচনাধীন রয়েছে। চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত দেবে আদালতই।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *