পূর্ণিমা রাত—আকাশভরা আলোর এক অপার সৌন্দর্য। শত শত বছর আগে, যখন বিদ্যুতের আলো ছিল না, তখন রাতের আকাশে এই উজ্জ্বল চাঁদই ছিল মানুষের একমাত্র আলোর উৎস। আজকের এই পূর্ণিমায় চাঁদের সঙ্গে যুক্ত হয়েছে এক বিরল মহাজাগতিক ঘটনা—পূর্ণ চন্দ্রগ্রহণ। এবারের গ্রহণটিকে বলা হচ্ছে ‘সুপার ব্লাড মুন’, যা বাংলাদেশ থেকে খালি চোখেই দেখা যাবে।
বাংলাদেশে স্থানীয় সময় অনুসারে- চাঁদের পেনুম্ব্রাল গ্রহণ শুরু হবে আজ রোববার (৭ সেপ্টেম্বর) দিবাগত রাত ৯টা ২৮ মিনিট ২৫ সেকেন্ড থেকে। এরপর আংশিক চন্দ্রগ্রহণ শুরু একইদিন রাত ১০টা ২৭ মিনিটি ০৯ সেকেন্ডে।
চন্দ্রগ্রহণ কী?
চন্দ্রগ্রহণ তখনই ঘটে, যখন সূর্য ও চাঁদের মাঝখানে পৃথিবী এসে পড়ে এবং পৃথিবীর ছায়া চাঁদের ওপর পড়ে। এ সময় সূর্য দর্শকের পেছনে অবস্থান করে, ফলে চাঁদ ঢেকে যায় পৃথিবীর ছায়ায়। যদি চাঁদ পুরোপুরি ছায়ার মধ্যে ঢুকে পড়ে, তখন সেটিকে বলা হয় পূর্ণ চন্দ্রগ্রহণ।
কেন বলা হয় ‘সুপার ব্লাড মুন’?
‘সুপার মুন’ তখনই হয়, যখন চাঁদ পৃথিবীর সবচেয়ে কাছাকাছি অবস্থানে থাকে, ফলে এটি স্বাভাবিক চাঁদের তুলনায় ৭ শতাংশ বড় এবং ১৫ শতাংশ বেশি উজ্জ্বল দেখা যায়। অন্যদিকে, গ্রহণের সময় চাঁদের রঙ রক্তিম আভা ধারণ করে, যাকে বলা হয় ‘ব্লাড মুন’। এই দুইয়ের মিলনে চাঁদ হয়ে ওঠে ‘সুপার ব্লাড মুন’।
কখন দেখা যাবে বাংলাদেশে?
বাংলাদেশ সময় অনুযায়ী আজ (রোববার) রাত ৯টা ২৮ মিনিট ২৫ সেকেন্ডে পেনামব্রাল গ্রহণ শুরু হবে, যা-
পেনামব্রাল গ্রহণ শুরু: রাত ৯টা ২৮ মিনিট ২৫ সেকেন্ড
আংশিক গ্রহণ শুরু: রাত ১০টা ২৭ মিনিট ৯ সেকেন্ড
পূর্ণ গ্রহণ শুরু: রাত ১১টা ৩০ মিনিট ৪৮ সেকেন্ড
সর্বোচ্চ গ্রহণ: রাত ১২টা ১১ মিনিট ৪৭ সেকেন্ড
পূর্ণ গ্রহণ শেষ: রাত ১২টা ৫২ মিনিট ৫১ সেকেন্ড
আংশিক গ্রহণ শেষ: রাত ১টা ৫৬ মিনিট ৩১ সেকেন্ড
পেনামব্রাল গ্রহণ শেষ: রাত ২টা ৫৫ মিনিট ৮ সেকেন্ড
গ্রহণ নিয়ে মানুষের কৌতূহল
প্রকৃতির এই অনন্য দৃশ্য ঘিরে মানুষের কৌতূহলের অন্ত নেই। বহু প্রাচীনকাল থেকেই চন্দ্রগ্রহণকে ঘিরে গড়ে উঠেছে নানা পৌরাণিক কাহিনী ও সংস্কার। যদিও আধুনিক বিজ্ঞান এই ঘটনাকে একটি স্বাভাবিক জ্যোতির্বৈজ্ঞানিক ঘটনা হিসেবে ব্যাখ্যা করে।
উল্লেখ্য, আজ রাতের আকাশে তাকিয়ে দেখুন প্রকৃতির এই অপূর্ব আয়োজন— ‘সুপার ব্লাড মুন’।
Leave a Reply