free tracking

পেটের যেকোনো ব্যথা হালকাভাবে নিচ্ছেন? নারীদের জন্য বিপদ হতে পারে যে ৫ লক্ষণ!

বেশির ভাগ সময়ই নারীরা তাদের পেটের ব্যথাকে স্বাভাবিকভাবে নেন। তারা এটিকে স্বাভাবিক মনে করে গুরুত্ব দিতে চান না। এটিকে হালকা ভাবে নেন, কিংবা সাধারণ সমস্যা, যেমন পিরিয়ডের ব্যথা বা হজমজনিত অস্বস্তি ভেবে এড়িয়ে যান। অথচ বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই অভ্যাস বিপজ্জনক।

ল্যাপারোস্কোপিক সার্জারি বিশেষজ্ঞদের মতে, নারীদের মধ্যে সবচেয়ে সাধারণ অভিযোগগুলোর একটি হলো পেটের ব্যথা। কিন্তু তারা সচরাচর এ ব্যথাকে পাত্তা দেন না। এর ফলেই চিকিৎসা দেরিতে হয়, আর রোগ ধরা পড়ে অ্যাডভান্সড স্টেজে বা জটিল পর্যায়ে।

বিশেষজ্ঞরা নিজেদের অভিজ্ঞতা থেকে জানিয়েছেন, এমন নারী আছেন, যারা মাসের পর মাস পিত্তথলির পাথরের (গলস্টোন) ব্যথা সহ্য করেছেন, ধরে নিয়েছেন সেটা এসিডিটি বা বদহজম।

কিন্তু যখন চিকিৎসকের কাছে এসেছেন, তখন হয়তো একমাত্র উপায় ছিল অস্ত্রোপচার।
আরো পড়ুন

চিকিৎসকরা সতর্ক করে বলেন, ‘পেটে ব্যথা কোনোভাবেই উপেক্ষা করা উচিত নয়, সেটা হালকা, তীব্র বা বারবারই হোক না কেন। দ্রুত রোগ নির্ণয় চিকিৎসাকে সহজ ও সফল করে তোলে।’

সচেতনতার অভাবই বড় বিপদ

চিকিৎসকরা জানান, প্রথমেই সচেতনতা তৈরি করতে হবে যে নারীদের পেটে ব্যথা মানেই তা সাধারণ অস্বস্তি নয়।

এর পেছনে থাকতে পারে গভীর কোনো স্বাস্থ্যঝুঁকি।
পেটের ব্যথার পেছনে লুকিয়ে থাকা ৫ সাধারণ কিন্তু বিপজ্জনক সমস্যা

গলস্টোন : হরমোনজনিত প্রভাব, ওবেসিটি বা মোটা হয়ে যাওয়া ও খাদ্যাভ্যাসের কারণে নারীদের মধ্যে গলস্টোন বেশি দেখা যায়। এতে ডান দিকের ওপরের পেটে তীব্র ব্যথা হয়, বিশেষত তেল-চর্বিযুক্ত খাবারের পর।

অ্যাপেন্ডিসাইটিস : অ্যাপেন্ডিসাইটিস অনেক সময় পিরিয়ডের ব্যথা বা সাধারণ পেটব্যথার মতো মনে হয়। এর ফলে দেরিতে ধরা পড়ে।

ফেটে গেলে এটি জীবনহানিকর জরুরি অবস্থা তৈরি করে।

এন্ডোমেট্রিওসিস : এটি স্ত্রীরোগজনিত হলেও অনেক সময় তীব্র তলপেটের ব্যথা তৈরি করে। প্রায়ই হজমজনিত সমস্যার সঙ্গে গুলিয়ে যায়। রোগ নির্ণয় ও প্রয়োজনে অস্ত্রোপচার প্রয়োজন হতে পারে।

ওভারিতে সিস্ট : পেলভিক অঞ্চলে ফোলা বা হালকা ব্যথাকে অনেক নারী পিরিয়ডজনিত ধরে নেন। কিন্তু বড় সিস্ট ঘুরে যেতে পারে, এক্ষেত্রে জরুরিভিত্তিতে অস্ত্রোপচার ছাড়া উপায় থাকে না।

হার্নিয়া : পেট বা কুঁচকির ফোলাভাব অনেক সময় ওজন বাড়া ভেবে এড়িয়ে যাওয়া হয়। কিন্তু চিকিৎসা না করলে অন্ত্রের জরুরি পরিস্থিতি বা স্ট্রাঙ্গুলেশন হতে পারে, যা নিয়ন্ত্রণে আনতে অস্ত্রোপচার করতেই হয়।

কখন ডাক্তার দেখাবেন

ব্যথা বিশ্রামে কমছে না।
ব্যথার সঙ্গে বমি, জ্বর বা পেটফাঁপা আছে।
হজম বা মলত্যাগের অভ্যাসে পরিবর্তন হচ্ছে।
খাওয়ার পর ব্যথা বাড়ছে।
ব্যথা এতটাই প্রবল যে দৈনন্দিন কাজকর্মে বাধা দিচ্ছে।

গুরুত্বপূর্ণ পরামর্শ

বিশেষজ্ঞরা বলেন, ‘যদি পেটব্যথা অস্বাভাবিক বা দীর্ঘস্থায়ী হয়, তাহলে পেইনকিলার খেয়ে বা এটিকে ‘স্বাভাবিক’ ভেবে এড়িয়ে যাবেন না। একটি সাধারণ আলট্রাসাউন্ড বা ডায়াগনস্টিক ল্যাপারোস্কোপি আপনাকে গুরুতর জটিলতা থেকে রক্ষা করতে পারে।’

অনেক নারী পারিবারিক দায়িত্ব বা পিরিয়ডজনিত বিভ্রান্তির কারণে ব্যথাকে উপেক্ষা করেন এবং ঘরোয়া চিকিৎসা বা ব্যথার ওষুধ ব্যবহার করেন। কিন্তু এটি সমাধান নয়। সময়মতো সঠিক রোগনির্ণয়ই জটিলতা এড়াতে পারে। বর্তমানে ল্যাপারোস্কোপিক সার্জারির মাধ্যমে ন্যূনতম ক্ষত ও দ্রুত সেরে ওঠার সুবিধা পাওয়া যায়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *