রিলস দেখার নেশা শুধু টিনএজার জেন জি-দের মধ্যেই সীমাবদ্ধ নয়। এখনকার জেন আলফা অর্থাৎ ৪-৫ বছর বয়সী শিশুরাও যখনই হাতে মোবাইল পায়, তখনই রিলস দেখতে শুরু করে। অনেক সময় বাবা-মা নিজের কাজ সারার সুবিধার জন্য সন্তানকে মোবাইল ধরিয়ে দেন। কিন্তু খেয়াল রাখেন না যে, সেই মোবাইল শিশুর অভ্যাসে কতটা প্রভাব ফেলছে।
বিশেষজ্ঞদের মতে, মোবাইলের প্রতি এই অল্প বয়সেই আসক্ত হয়ে পড়া ভবিষ্যতে ভয়াবহ রূপ নিতে পারে। এমনকি ধূমপান বা অ্যালকোহলের নেশার মতোই ক্ষতিকর হয়ে উঠতে পারে। তাই সন্তানের মোবাইল ব্যবহার, বিশেষ করে রিলস দেখার প্রবণতা নিয়ন্ত্রণে আনা অত্যন্ত জরুরি। চলুন, জেনে নিই কিছু বাস্তবসম্মত উপায়।
স্ক্রিন টাইম ধীরে ধীরে কমান
হঠাৎ করে মোবাইল কেড়ে নিলে শিশু জেদি হয়ে উঠতে পারে বা রেগে যেতে পারে। তাই ধীরে ধীরে স্ক্রিন টাইম কমাতে হবে। আগে থেকেই একটি নির্দিষ্ট সময় বেঁধে দিন। যে সময়ের বাইরে সে মোবাইল ব্যবহার করতে পারবে না।
নিয়মিত এই অভ্যাস গড়ে তুললে আসক্তি কমবে।
আউটডোর গেমে উৎসাহ দিন
মোবাইল থেকে মন সরাতে হলে বিকল্প কিছু দিতে হবে। খেলাধুলার চেয়ে ভালো বিকল্প আর নেই। মাঠে গিয়ে খেললে শিশুদের শারীরিক ও মানসিক বিকাশ হয় এবং মনোযোগও বাড়ে। তাই প্রতিদিন কিছুটা সময় খেলাধুলার জন্য রাখুন।
ছোটখাটো বাড়ির কাজে যুক্ত করুন
যদি বাইরে খেলার সুযোগ না থাকে, তাহলে শিশুকে ঘরের কাজে যুক্ত করুন। যেমন—রান্নায় সাহায্য করা, নিজের খেলনা গোছানো, এক সঙ্গে পছন্দের খাবার বানানো ইত্যাদি। এতে তারা ব্যস্ত থাকবে এবং মোবাইলের দিক থেকে মনোযোগ সরবে।
সৃজনশীল কাজে লাগান
ক্লে মডেলিং, পেইন্টিং, কাগজ দিয়ে কিছু তৈরি এইসব প্রজেক্টে শিশুদের অংশ নিতে দিন। এগুলো শুধু সময় কাটানোর মাধ্যমই নয়, বরং বাচ্চার সৃজনশীলতা বাড়াতে সাহায্য করে। এতে তারা নতুন কিছু শেখে এবং মোবাইলের প্রয়োজন অনুভব করে না।
বই পড়ার অভ্যাস গড়ে তুলুন
শিশুর হাতে মোবাইলের বদলে দিন আকর্ষণীয় গল্পের বই। বয়স অনুযায়ী বই কিনে দিন। রূপকথা, দুঃসাহসিক অভিযান কিংবা মজার চরিত্রের গল্পে তারা মজা পাবে। প্রয়োজনে আপনি নিজেই গল্প পড়ে শোনাতে পারেন। ধীরে ধীরে এই অভ্যাস মোবাইলের প্রতি আকর্ষণ কমাবে।
শিশুর মোবাইল আসক্তি এক দিনে তৈরি হয়নি, কমেও যাবে না এক দিনে। কিন্তু একটু পরিকল্পনা আর ধৈর্য নিয়ে এগোলে তাদের মন মোবাইল থেকে সরিয়ে আরও স্বাস্থ্যকর ও আনন্দদায়ক অভ্যাসে যুক্ত করা সম্ভব। স্মার্ট প্যারেন্টিংই হোক আপনার সবচেয়ে বড় হাতিয়ার।
Leave a Reply