বর্তমান সময়ে রান্নার ক্ষেত্রে গ্যাস ও ইলেকট্রিক—এই দুই ধরনের চুলাই আমাদের দৈনন্দিন জীবনে ব্যবহৃত হচ্ছে। শহরের অনেক পরিবার এখনো এলপিজি বা প্রাকৃতিক গ্যাসের উপর নির্ভরশীল, আবার বিদ্যুতের সহজলভ্যতা থাকায় ইলেকট্রিক চুলার ব্যবহারও দ্রুত বাড়ছে। তবে অনেকের মনেই প্রশ্ন—গ্যাসের চুলায় রান্না করলে খরচ কম হয় নাকি ইলেকট্রিক চুলায় রান্না বেশি সাশ্রয়ী?
খরচের দিক থেকে তুলনা
গ্যাসের চুলায় রান্নার ক্ষেত্রে এলপিজি সিলিন্ডার বা লাইন গ্যাস ব্যবহৃত হয়। এক সিলিন্ডারের দাম তুলনামূলকভাবে বেশি হলেও দীর্ঘ সময় ব্যবহার করা যায়। সাধারণত একটি গড়পড়তা পরিবার মাসে ১-২ সিলিন্ডার ব্যবহার করে থাকে। অন্যদিকে, ইলেকট্রিক চুলায় রান্না করার সময় বিদ্যুতের খরচ সরাসরি বাড়ে। চুলার ক্ষমতা কিলোওয়াট (kW)-এ নির্ধারিত হয় এবং রান্নার সময় অনুযায়ী বিদ্যুৎ বিল তৈরি হয়।
উদাহরণ হিসেবে ধরা যাক—একটি ২ কিলোওয়াট ক্ষমতার ইলেকট্রিক চুলায় প্রতিদিন যদি ২ ঘণ্টা রান্না করা হয়, তবে মাসিক বিদ্যুৎ খরচ দাঁড়াবে প্রায় ১২০ ইউনিটের কাছাকাছি। বিদ্যুতের প্রতি ইউনিটের গড় মূল্য হিসেব করলে মাসে খরচ দাঁড়াতে পারে ৯০০–১,০০০ টাকা বা তার বেশি। অন্যদিকে একই পরিবারের জন্য একটি গ্যাস সিলিন্ডারের দাম প্রায় ১,২০০ টাকা হলেও তা পুরো মাস টিকে যায়। অর্থাৎ গ্যাস ও বিদ্যুতের দাম ওঠানামার ওপর ভিত্তি করে কোনটা বেশি খরচ হবে তা নির্ভর করে।
সুবিধা ও অসুবিধা
গ্যাসের চুলায় রান্না দ্রুত হয় এবং খরচ তুলনামূলকভাবে স্থিতিশীল থাকে। তবে গ্যাস সংকট হলে সমস্যায় পড়তে হয়। ইলেকট্রিক চুলা ব্যবহার করলে ধোঁয়া হয় না এবং রান্নাঘর পরিষ্কার থাকে। কিন্তু বিদ্যুৎ বিল বেশি আসে এবং বিদ্যুৎ না থাকলে রান্নায় বাধা পড়ে।
সব মিলিয়ে, খরচের হিসেবে এখনো গ্যাসের চুলা তুলনামূলকভাবে সাশ্রয়ী, বিশেষ করে লাইন গ্যাস ব্যবহারের ক্ষেত্রে। তবে যেখানে বিদ্যুৎ সহজলভ্য এবং গ্যাস পাওয়া কঠিন, সেখানে ইলেকট্রিক চুলা বিকল্প হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে। তাই আপনার অবস্থান, বিদ্যুৎ ও গ্যাসের মূল্য এবং প্রাপ্যতা—সবকিছুর ওপর নির্ভর করেই কোনটা বেশি সাশ্রয়ী হবে তা ঠিক করতে হবে।
Leave a Reply