free tracking

বদল আসছে সরকারি চাকরির নিয়মে!

বাংলাদেশে বর্তমানে সরকারি নারী কর্মচারীরা ছয় মাসের মাতৃত্বকালীন ছুটির সুযোগ পেলেও পুরুষদের জন্য কোনো পিতৃত্বকালীন ছুটি নেই। অথচ সন্তান জন্মের পর মা ও নবজাতকের সঠিক পরিচর্যা ও মানসিক সহায়তায় বাবার সক্রিয় অংশগ্রহণ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় সরকারি চাকরিজীবী পুরুষদের জন্য ১৫ দিনের পিতৃত্বকালীন ছুটি প্রস্তাব করেছে। প্রস্তাব অনুযায়ী, সন্তান জন্মের সম্ভাব্য তারিখ থেকে পরবর্তী ছয় মাসের মধ্যে যেকোনো সময় একটানা ১৫ দিন ছুটি নেওয়া যাবে, এবং চাকরি জীবনে দুইবার এ সুবিধা পাওয়া যাবে। এ ছুটি গড় বেতনে দেওয়ার কথা বলা হয়েছে।

প্রস্তাবের সূত্রপাত হয় ২০২৪ সালের জেলা প্রশাসক সম্মেলনে, যেখানে তৎকালীন টাঙ্গাইলের ডিসি মো. মাহবুব হোসেন এই ছুটির প্রয়োজনীয়তার কথা তুলে ধরেন। এরপর জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় প্রস্তাবটি নিয়ে আলোচনা করে সেটিকে মধ্যমেয়াদি সিদ্ধান্ত হিসেবে গ্রহণ করে এবং প্রধান উপদেষ্টার অনুমোদনের জন্য একটি সারসংক্ষেপ পাঠায়। মন্ত্রণালয়ের মতে, অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে শিশুর জন্মের হার বর্তমানে বেশি হওয়ায়, মায়েরা শারীরিক ও মানসিকভাবে দুর্বল অবস্থায় থাকেন। এ সময়ে বাবার সহায়তা নবজাতক ও মায়ের স্বাস্থ্যের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কিন্তু ছুটির সুযোগ না থাকায় অনেক কর্মজীবী বাবাকে অসুস্থ স্ত্রী ও সন্তানকে বাসায় রেখে অফিস করতে হয়, যা মানসিক চাপ ও পরিবারের ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলে।

এছাড়া, আন্তর্জাতিকভাবে পিতৃত্বকালীন ছুটি এখন একটি স্বীকৃত সামাজিক ও মানবিক অধিকার হিসেবে বিবেচিত। বিশ্বের অন্তত ৭৮টি দেশে এই ছুটির বিধান রয়েছে। যেমন, ভারতে সরকারি কর্মচারীরা ১৫ দিনের পিতৃত্বকালীন ছুটি পান, পাকিস্তানে এক মাস করে তিনবার, ভুটানে ১০ দিন, এবং স্পেনে ১২ সপ্তাহের পিতৃত্বকালীন ছুটি পূর্ণ বেতনে প্রদান করা হয়। এসব দেশগুলোর নজির তুলে ধরে বাংলাদেশেও এ ধরনের ছুটি চালুর প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরা হয়েছে। তবে এ বিধান কার্যকর করতে হলে বাংলাদেশ সার্ভিস রুলস (পার্ট-১)-এর ১৯৭ নম্বর রুল সংশোধন করতে হবে, যেখানে বর্তমানে কেবল মাতৃত্বকালীন ছুটির কথা উল্লেখ রয়েছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *