“অন্তর্বর্তী সরকার গঠনের ঘোষণাকে আমরা স্বাগত জানাই এবং আমরা আহ্বান করছি যে কোনো ক্ষমতা হস্তান্তর প্রক্রিয়া যেন বাংলাদেশের আইন অনুযায়ী হয়।”
আন্দোলনের মুখে শেখ হাসিনা সরকারের পতনের প্রেক্ষাপটে বাংলাদেশের সবপক্ষকে সংযমী হওয়ার আহ্বানের পাশাপাশি অন্তর্বর্তী সরকার গঠনের ঘোষণাকে স্বাগত জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র।
সোমবার রাতে দৈনিক ব্রিফিংয়ে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র ম্যাথু মিলার বলেন, “প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পদত্যাগ ও দেশ ছাড়ার ঘোষণা আমরা দেখেছি।
“আমি পরিস্থিতি সতর্কতার সঙ্গে পর্যবেক্ষণ করছি। বাংলাদেশের জনগণের পাশে দাঁড়াচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র। পরবর্তী কোনো সহিংসতা থেকে বিরত থাকতে আমরা সবপক্ষের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি।”
তিনি বলেন, “গত কয়েক সপ্তাহে অনেক প্রাণ ঝরেছে। এবং আগামী দিনগুলোতে শান্ত ও সংযমের আহ্বান আমরা করছি।
“অন্তর্বর্তী সরকার গঠনের ঘোষণাকে আমরা স্বাগত জানাই এবং আমরা আহ্বান করছি যে কোনো ক্ষমতা হস্তান্তর প্রক্রিয়া যেন বাংলাদেশের আইন অনুযায়ী হয়।”
ম্যাথু মিলার বলেন, গত সপ্তাহগুলোতে ‘মানবাধিকার লঙ্ঘন ও হতাহতের’ ঘটনায় যুক্তরাষ্ট্র ‘গভীরভাবে মর্মাহত’। যারা প্রিয়জন হারিয়েছে এবং যারা এখনো ভুগছে, তাদের সঙ্গে শোক ভাগাভাগি করে নিচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র।
এক প্রশ্নে তিনি বলেন, “আমরা এখন সহিংসতা বন্ধ এবং জবাবদিহিতার উপর গুরুত্ব দিচ্ছি। অন্তর্বর্তী সরকারের বিষয়ে সব সিদ্ধান্ত গণতান্ত্রিক মূলনীতিসমূহ, আইনের শাসন এবং বাংলাদেশিদের জনআকাঙ্ক্ষা মেনে নিতে হবে।”
সেনাবাহিনীর মাধ্যমে তত্ত্বাবধায়ক সরকার গঠনকে যুক্তরাষ্ট্র সমর্থন করে কি-না, এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, “আমরা দেখতে চাই, বাংলাদেশের জনগণই তাদের দেশের সরকারের ভবিষ্যৎ নিয়ে সিদ্ধান্ত নেবে।”
সেনাবাহিনীর ভূমিকার বিষয়ে এক প্রশ্নে ম্যাথু মিলার বলেন, “বিক্ষোভকারীদের ওপর সেনাবাহিনীর ক্র্যাকডাউন চালাতে অনীহা প্রকাশ করেছে, খবর আমরা দেখেছি। এবং এই প্রতিবেদনগুলো যদি সত্য হয়, এটাকে আমরা উৎসাহিত করি।
“আমরা বলে আসছি, বিক্ষোভ এবং শান্তিপূর্ণ সমাবেশের আইনি অধিকার জনগণের রয়েছে এবং যে কোনো ধরনের সহিংসা, দমন-পীড়নের বিরোধিতা করি আমরা। সুতরাং, যদি আসলে সত্যি হয় যে, সেনাবাহিনী বিক্ষোভকারীদের উপর ক্র্যাকডাউন চালাতে অনীহা প্রকাশ করেছে, তা এটা ইতিবাচক দিক।”
তিনি বলেন, এখান আমরা কোন দিকে যাচ্ছি, সেই বিষয়ে কথা হচ্ছে- আমরা গণতান্ত্রিক শৃঙ্খলা দেখতে চাই। আমরা দেখতে চাই বাংলাদেশের জনগণের তাদের নিজেদের সরকারকে বাছাই করছে এবং আগামী দিন ও সপ্তাহগুলোতে আমরা সেটার প্রতীক্ষায় থাকব।”
সরকার পতনের প্রেক্ষাপটে সংখ্যালঘুসহ অন্যদের ওপর হামলার বিষয়ে এক প্রশ্নে মুখপাত্র বলেন, “আমরা যে আহ্বান জানাচ্ছি তা হল, সব ধরনের সহিংসতা বন্ধ করতে হবে এবং জবাবদিহি নিশ্চিত করতে হবে।
“এখন, জবাবদিহিতার ধরণটা কেমন হবে, সেটা বাংলাদেশি আইনে হতে হবে। যারা সহিংসতা করেছে, আইন ভেঙেছে, তাদেরকে অবশ্যই জবাবদিহির আওতায় আনতে হবে।”
Leave a Reply