বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় হাসপাতালে নিয়ে আসা কিছু মরদেহ এখনো মর্গে পড়ে আছে। এসব মরদেহের কোনো দাবিদার পাচ্ছে না হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। গত সোমবার রাজধানীর শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে গিয়ে জানা যায়, প্রতিদিন কেউ না কেউ হাসপাতালে আসছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে এসে হারিয়ে যাওয়া মানুষ শেষ পর্যন্ত লাশঘরে আছে কি না, তা খুঁজতে। অন্যদিকে সেখানকার মর্গে এখনো পড়ে আছে তিনটি মরদেহ।
এ ছাড়া ঢাকা মেডিকেল কলেজের মর্গে আটটি মরদেহ পড়ে আছে বলে জানা গেছে। যাদের নাম–পরিচয় জানা যায়নি।
শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজের মর্গে পড়ে থাকা মরদেহগুলো হাসপাতালে এসেছে গত ১৬ জুলাই থেকে ৬ আগস্টের মধ্যে।
মরদেহ নিতে কেউ না আসায় হাসপাতালের পরিচালক মো. শফিউর রহমান একটি বিজ্ঞপ্তি দিয়েছেন। এতে বলা হয়েছে, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলমান অবস্থায় পরিচয়বিহীন কিছু ব্যক্তির মরদেহ হাসপাতালের হিমঘরে রাখা আছে। এসব মরদেহের কোনো পরিচয়, ঠিকানা বা দাবিদার পাওয়া যায়নি। এমনকি পুলিশ প্রশাসনের পক্ষ থেকেও কোনো সহযোগিতা পায়নি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।
বিজ্ঞপ্তির শেষ অংশে বলা হয়েছে, সৎকারের প্রয়োজনে ওই বেওয়ারিশ মরদেহ গ্রহণে আগ্রহী ব্যক্তি, প্রতিষ্ঠান বা সংস্থাকে স্বাগত জানাচ্ছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।
এ রকম দুটি বিজ্ঞপ্তি দেখা যায় একটি পরিচালকের কার্যালয়ের নোটিশ বোর্ডে, অন্যটি লাশঘরের দরজায়।
কর্তৃপক্ষের দেয়া তথ্য অনুয়ায়ী, আন্দোলনকে ঘিরে সংঘর্ষ–সংঘাতের ঘটনায় ৩০টির মতো মরদেহ ১৮ থেকে ২২ জুলাইয়ের মধ্যে হাসপাতালে আনা হয়। এর মধ্যে ২১টি মরদেহ নথিভুক্ত করা হয়। ৮-৯টি মরদেহ নথিভুক্ত করা সম্ভব হয়নি। আবার ৪ থেকে ৬ আগস্টের মধ্যে ২০টি মরদেহ হাসপাতালে আসে। তাদের প্রত্যেকের শরীরে গুলির চিহ্ন ছিল। সব মিলিয়ে এই হাসপাতালে অর্ধশতাধিক মরদেহ এসেছে।
গতকাল মঙ্গলবার হাসপাতালের পরিচালক মো. শফিউর রহমান বলেন, ‘কয়েকটি মরদেহ মর্গে আছে। কেউ নিচ্ছেন না। আমরা একধরনের বিপদে আছি। মরদেহগুলো নষ্ট হওয়ার ঝুঁকি আছে।’
লাশঘরের দায়িত্বে থাকা একজন ডোম জানান, পাঁচটি মরদেহ ছিল। দুই দিনে দুটি মরদেহ স্বজনেরা নিয়ে গেছেন। তিনটি মরদেহ আছে। তাদের মধে একজনের বয়স ৩৫ বছরের মতো। অন্য দুজনের বয়স ১৮–১৯ বছর।
Leave a Reply