বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ব্যানার দিয়ে সারা দেশে জনমানুষকে আন্দোলনকে সম্পৃক্ত করেছিলেন ছাত্ররা। ছাত্র-জনতার আন্দোলনে পদত্যাগ করে দেশ ছাড়েন সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এরপর থেকে আলোচনা শুরু হয়ে তরুণ শিক্ষার্থীরা কি নতুন রাজনৈতিক দল গঠন করবেন কি-না। এ নিয়ে আজ শুক্রবার বার্তা সংস্থা রয়টার্স, আন্দোলনের একাধিক সমন্বয়কের সঙ্গে কথা বলে প্রতিবেদন প্রকাশ করে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, নতুন রাজনৈতিক দল গঠন করতে যাচ্ছে শিক্ষার্থীরা। আগামী এক মাসের মধ্যেই সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
তবে এই মুহূর্তে রাজনৈতিক দল গঠনের পরিকল্পনা নেই বলে জানিয়েছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক নাহিদ হাসান। তিনি অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয় এবং তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টার দায়িত্বে আছেন।
শুক্রবার রাতে এক বিবৃতিতে এ তথ্য জানান নাহিদ। তিনি জানান, এই মুহূর্তে জনগণের সাথে আলোচনা ও সংলাপের মাধ্যমে তারা ভবিষ্যৎ বাংলাদেশের রুপরেখা প্রণয়ন করতে চান।
নাহিদ ইসলাম বলেন, রাজনৈতিক দলগঠন আমাদের গণঅভ্যুত্থানের অভিমুখ না। এই মূহুর্তে প্রয়োজন অভ্যুত্থানে আহত ও শহীদদের পরিবারের পাশে দাঁড়ানো, নতুন করে দেশগঠন-সংস্কার ও অভ্যুত্থানের স্পিরিট ও জাতীয় ঐক্য ধরে রাখা।
ছাত্র-জনতা ও অন্তর্বর্তীকালীন সরকার সে লক্ষ্যে কাজ করবে।
তিনি আরো বলেন, ফ্যাসিবাদী ব্যবস্থার বিলোপ করে নতুন রাজনৈতিক বন্দোবস্ত আমাদের এক দফার অংশ ছিলো। সেজন্য বিস্তর কাজ ও রাজনৈতিক কার্যক্রম প্রয়োজন। জনগণের সাথে আলোচনা ও সংলাপের মাধ্যমে আমরা ভবিষ্যৎ বাংলাদেশের রুপরেখা প্রণয়ন করতে চাই।
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের এই উপদেষ্টা বলেন, এই মূহুর্তে রাজনৈতিক দলগঠনের কোনো পরিকল্পনা আমাদের নাই।
ছাত্র-জনতা অভ্যুত্থানের স্পিরিট রক্ষায় সামাজিক-রাজনৈতিক শক্তি হিসেবে কাজ করবে এবং সরকার জনগণের আকাঙ্ক্ষা অনুযায়ী রাষ্ট্র পুনর্গঠনের লক্ষ্যে কাজ করবে।
এদিকে রয়টার্সে লিয়াজোঁ কমিটির সমন্বয়ক মাহফুজ আলমের বরাত দিয়ে খবর প্রকাশ করা হয়েছে। তবে রয়টার্স এবং বাংলাদেশি মিডিয়ার তার বক্তব্যের ভুল ব্যাখ্যা করছে বলে দাবি করেছেন মাহফুজ আলমের। তিনি বলেন, নতুন কোনো রাজনৈতিক দল খোলার বিষয়ে কোনো কথা হয়নি।
তিনি বলেন, রয়টার্সে আমার বক্তব্য ছিল, আমরা রাজনৈতিক সংগঠন নিয়ে এখনই ভাবছি না। ফ্যাসিবাদী ব্যবস্থার বিলোপ এবং নূতন রাজনৈতিক বন্দোবস্তের জন্য আমরা কাজ করছি। গণ-অভ্যুত্থানের চেতনা ধরে রাখা এবং সরকারকে সংহত করা আমাদের প্রাথমিক লক্ষ্য। রাষ্ট্র ও সমাজের নানা অংশীজনের সাথে কথা বলে আমরা আগামী বাংলাদেশের রূপরেখা নিয়ে ও কাজ করব। এ কাজে অন্তত এক মাস লাগবে। আর, রয়টার্স ও লিখেছে এক মাস পর নির্ধারিত হবে আমরা দল করব কি করব না। তবে, রয়টার্স একটি ভুল করেছে, নাগরিকদের বদলে তারা ভোটার শব্দটি ব্যবহার করেছে। অথচ, নির্বাচনী রাজনীতি নিয়ে আমাদের খুব কমই কথা হয়েছে। কৃষ্ণ কৌশিককে আমি লিখেছি, উনি হয়ত এটা এডিট করে দিবেন।
তিনি আরো জানান, রয়টার্সের সাংবাদিক বারবার জিজ্ঞাসা করসিলেন, দ্বিদলীয়কাঠামো নিয়ে এবং তা উতরে যেতে রাজনৈতিক দল করব কি-না। আমি বলেছি, আমরা দল বা ব্যক্তি নয়, ব্যবস্থার সংস্কার চাচ্ছি। যাতে যে দলই আসুক তাকে জনগণের প্রতি দায়বদ্ধ হতে হয়। কিন্তু, এমনভাবে বলা হল যেন আমি মাইনাস টু চাচ্ছি। যেটা আমার উদ্দেশ্য না অবশ্যই। আমাদের এখনকার লক্ষ্য, রাজনৈতিক লড়াইকে সুনির্দিষ্ট উদ্দেশ্য নিয়ে গঠনমূলক কাজের দিকে চালিত করা। উপযুক্ত সময়ে রাজনৈতিক গঠন/গড়ন কেমন হবে, তা সবাই জানতে পারবেন।
Leave a Reply