ভারতের ডম্বুর ও গজলডোবা বাঁধ খুলে দেয়ার প্রতিবাদে ভারতীয় হাইকমিশনের সামনে অবস্থান নিয়েছে শিক্ষার্থীরা। বৃহস্পতিবার (২২ আগস্ট) কয়েকশ শিক্ষার্থী বারিধারায় ভারতীয় হাইকমিশনের সামনের রাস্তায় অবস্থান নেয়।
শিক্ষার্থীরা জানায়, ভারত উদ্দেশ্যপ্রণোদিত হয়ে বাঁধ হয়ে খুলে দিয়েছে। এর ফলে দেশে বন্যায় মানুষ বিপদে পড়েছে। এটি ভারতের নতুন খেলা, কারণ বাংলাদেশে নতুন যেই সরকার এসেছে তাদেরকে বিপর্যস্ত করতেই এই খেলা।
তারা আরও জানায়, বাংলাদেশের সাথে ভারতের আন্তর্জাতিক নদীর পানির যেই ন্যায্য হিস্যা আছে সেটি সমাধান করতে হবে। বাঁধ খুলে দেয়ার কারণে বাংলাদেশের মানুষ অমানবিক পরিস্থিতির মধ্যে পড়েছে। এছাড়া শিক্ষার্থীদের ৬ সদস্য প্রতিনিধি দল হাইকমিশনে যাবেন বলেও জানান তার।
এদিকে বন্যা পরিস্থিতি নিয়ে ভারতের হাই কমিশনার প্রণয় ভার্মা সঙ্গে বৈঠক করেছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস।প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম বলেন, বৈঠকে প্রধান উপদেষ্টা বন্যা বিষয়ে দুই দেশের মধ্যে একটি উচ্চতর কমিটি করার ব্যাপারে প্রণয় ভার্মাকে বলেছেন। যাতে আগ থেকে সতর্কতা ও তথ্য পাওয়া যায়। এছাড়া পানির ন্যায্য হিস্যা সমাধানে দুই পক্ষের আলোচনা করে পদক্ষেপের ব্যাপারেও তাকে জানানো হয়।
এর আগে দুপুরে রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনার সামনে এক সংবাদ ব্রিফিংয়ে প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে ভারতীয় হাইকমিশনারের বৈঠকের তথ্য জানান পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন ও পানি উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান।
তিনি বলেন, এমন ভয়াবহ বন্যায় কী ধরনের আগাম সতর্কতা আমরা পেতে পারি, আমাদের আগাম সতর্ক করা হয়েছিল কি না, ভবিষ্যতে এমন পরিস্থিতি মোকাবিলায় রাষ্ট্রগুলো কী কী পদক্ষেপ নিতে পারে, সে বিষয়ে কথা বলতে প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে ভারতীয় হাইকমিশনারের একটি বৈঠক হবে।
এছাড়া দুপুরে সচিবালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে দুর্যোগ ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব কে এম আলী রেজা জানান, চলমান বন্যায় এখন পর্যন্ত দেশের আট জেলার ২৯ লাখ ৪ হাজার ৯৬৪ জন মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। ক্ষতিগ্রস্ত এসব জনগণের জন্য জেলা ভিত্তিক বিভিন্ন কর্মসূচি হাতে নিয়েছে দুর্যোগ মন্ত্রণালয়।
তিনি বলেন, ফেনী, কুমিল্লা, চট্টগ্রাম, খাগড়াছড়ি, নোয়াখালী, মৌলভীবাজার, হবিগঞ্জ ও ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা বন্যা কবলিত হয়েছে। আট জেলায় মোট ৪ লাখ ৪০ হাজার ৮৪০ টি পরিবার পানিবন্দী হয়ে পড়েছে।
অতিরিক্ত সচিব জানান, পানিবন্দী ও ক্ষতিগ্রস্ত লোকদের আশ্রয় দিতে মোট এক হাজার ৫৩৪টি আশ্রয় কেন্দ্র খোলা হয়েছে এবং আশ্রয় কেন্দ্রগুলোতে মোট ৭৫ হাজার ৬৬৮ জন লোক এবং ৭ হাজার ৪৫৯টি গবাদিপশুকে আশ্রয় দেয়া হয়েছে।
Leave a Reply