এখন অনেক পুরনো কথা উঠে আসছে: আনারকন্যা!

স্বর্ণ ব্যবসার বিষয়ে আলোচনার নাম করে এমপি মো. আনোয়ারুল আজিম আনারকে বন্ধু গোপালের কলকাতার বাসা থেকে ডেকে নেয় কিলাররা। ঘাতকরা তাকে রিসিভ করে নিয়ে যায় কলকাতা নিউটাউন এলাকার সঞ্জীবা গার্ডেনের ডুপ্লেক্স বাসায়। সেখানেই নৃশংসভাবে হত্যা করা হয় আনারকে। চাঞ্চল্যকর এ হত্যাকাণ্ডের অন্যতম ঘাতক সিয়াম নেপালে এবং মূল মাস্টারমাইন্ড আক্তারুজ্জামান শাহীন ইতোমধ্যে যুক্তরাষ্ট্রে পালিয়েছেন। লাশের অপেক্ষায় রয়েছেন কালীগঞ্জসহ ঝিনাইদহের হাজার হাজার মানুষ। হত্যার ঘটনা নিশ্চিত হওয়ার দুদিন পেরিয়ে গেলেও এখনো তার লাশের সন্ধান না পাওয়ায় হতাশা বাড়ছে স্বজনদের মধ্যে।

শুক্রবার কালীগঞ্জে ভূষণ রোডের বাড়িতে সংবাদ সম্মেলন করছেন তার মেয়ে মুমতারিন ফেরদৌস ডরিন। ডরিন জানান, তিনি ভারতের ভিসা পেয়েছেন। তবে ডিবি অফিস থেকে তাকে বলা হয়েছে, যখন প্রয়োজন হবে তখন ভারতে যেতে হবে।

ডরিন বলেন, ‘আমার বাবাকে যারা হত্যা করেছে তারা প্রি-প্ল্যানিং করে হত্যা করেছে। দীর্ঘদিন ধরে পরিকল্পনা করেই আমার বাবাকে হত্যা করেছে। দুই মাস ধরে পরিকল্পনা করে সাজিয়ে-গুছিয়ে তারা এ কাজটি করেছে। এ হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে অনেকে জড়িত আছে। সুষ্ঠু তদন্ত করলেই বেরিয়ে আসবে কারা এর সঙ্গে জড়িত। যার নাম উঠে এসেছে প্রশাসনকেই তাকে খুঁজে বের করতে হবে। বিদেশ থেকে তাকে দেশে ফিরিয়ে আনতে হবে। কান টানলে মাথা আসবে। তার মাথার উপরে আরও অনেকে থাকতে পারে। আমি আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল, তদন্তের মাধ্যমে যেটাই বেরিয়ে আসুক, সেটা রাজনৈতিক কিংবা অরাজনৈতিক যেটাই হোক, তাদের শাস্তি চাই। আমার বাবা কালীগঞ্জ শহরে দীর্ঘ ৩৫ বছর ধরে রাজনীতি করেছেন, তার শত্রু থাকতেই পারে। রাজনৈতিক বিষয়ে হত্যা কিনা সে বিষয়টি ফেলে দেওয়া যাচ্ছে না।’

এমপিকন্যা বলেন, ‘২০০৪ সালে বাবা যখন আওয়ামী লীগের রাজনীতি করতেন, তখন বিএনপির একটি গ্রুপ তার পেছনে বিভিন্ন হয়রানিমূলক মামলা দিয়েছিল। পরবর্তী সময়ে তার নামে সব মামলা মিথ্যা বলে প্রমাণ করেছেন আদালত।’

তিনি আরও বলেন, ‘আমার বাবার নামে যদি অভিযোগ সত্যি হতো তাহলে তো আর আদালতে মিথ্যা প্রমাণিত হতো না। বাবা একজন নেতা হিসেবে খুবই জনপ্রিয় ছিলেন, এ জন্য তার শত্রুও ছিল। এখন অনেক পুরোনো কথা উঠে আসছে। এসব পুরোনো কথা টেনে সামনে আনার কোনো দরকার নেই। সে যদি বলতেই হয় তাহলে এটাও সামনে আনেন, আমার বাবা দীর্ঘ ১০-১২ বছর ধরে বাড়িতে আসতে পারেনি, আমাদের মুখ দেখতে পারেনি, সেই কষ্টের কথাও তুলে ধরেন আপনারা।’

ডরিন বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী নিজে আমাকে ফোন দিয়েছেন। তিনি আমাকে ধৈর্য ধরতে বলেছেন। তিনি বলেছেন, আমি তোমার সঙ্গে আছি। তুমি আমাকে বলেছ— তোমার বাবাকে খুঁজে দিতে, আমি ইন্ডিয়ান পুলিশকে দিয়ে তোমার বাবাকে খুঁজে দিয়েছি। আর কী চাও আমাকে বলো। এখন পুলিশ তদন্ত করবে, রিপোর্ট এলে আমি ব্যবস্থা নেব। আর কিছু করতে হলে আমাকে জানাও। আমি তখন বলেছি, না আপা, আপনি যা ভালো মনে করেন করবেন, আপনি বিচক্ষণ, আপনিই এর বিচার করবেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রতি আস্থা আছে। তিনি পিতা হত্যার সুষ্ঠু বিচার করবেন বলে আশা করি।’

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *