চাকরি প্রার্থী ও পোশাক শ্রমিকদের বিক্ষোভের মুখে শিল্পাঞ্চল আশুলিয়ায় অর্ধশতাধিক পোশাক কারখানা ছুটি ঘোষণা করেছে কর্তৃপক্ষ। এছাড়া বেশ কয়েকটি কারখানার সামনে পাহাড়া বসিয়ে ভেতরে উৎপাদন অব্যাহত রেখেছে।
বুধবার সকাল ১০টার দিকে নবীনগর-চন্দ্রা মহাসড়কের এবং বাইপাইল-আব্দুল্লাহপুর সড়কের উভয় পাশে অবস্থিত অরায় অর্ধশতাধিক কারখানা ছুটি ঘোষণা করতে বাধ্য হয় কারখানা কর্তৃপক্ষ।
শিল্পপুলিশ জানায়, সকাল থেকে প্রতিদিনের মত কারখানায় কাজে যোগদান করেন শ্রমিকরা। তবে কারখানায় ঢুকে কাজ না করে বের হয়ে যান। এর পরে তারা মহাসড়কে বিক্ষোভ করেন। শ্রমিকদের দাবি, কারখানায় নারী ও পুরুষ শ্রমিক সমানভাবে নিতে হবে। একটি কারখানায় সব নারীরা চাকরি করবে আর পুরুষ শ্রমিকরা বাহিরে বাহিরে ঘুরবে সেটা হতে দেওয়া যাবে না। এমন দাবিতে আশুলিয়ার গোটা এলাকার মহাসড়ক ও সড়কে যানজট লেগে যায়। তাই কারখানাগুলোতে ছুটি ঘোষণা করা হয়।
এ ব্যাপারে কারখানা কর্তৃপক্ষ জানায়, যতদিন শ্রমিকরা এভাবে বিক্ষোভ করতে থাকবে কারখানা রক্ষার্থে ছুটি দেওয়া ছাড়া কোনো উপায় নাই।
অনেক শ্রমিকরা উৎপাদন বন্ধ রেখে অন্য কারখানার সামনে গিয়ে কারখানা বন্ধ করতে ইট পাটকেল মারতে থাকেন। পরে সেসব কারখানাও ছুটি ঘোষণা করতে বাধ্য হয় কর্তৃপক্ষ। পরে শ্রমিকরা বাইপাইল-আবদুল্লাহপুর সড়কে নেমে অবরোধ করে রাখেন। সকাল সাড়ে ১০টা পর্যন্ত শিল্পাঞ্চল আশুলিয়ায় কমপক্ষে অর্ধশতাধিক কারখানা কারখানা ছুটি ঘোষণা করা হয়।
সকাল ১০টার দিকে আব্দুল্লাহ্পুর-বাইপাইল সড়কের বাইপাইল থেকে জিরাবো পর্যন্ত ঘুরে দেখা যায়, কারখানা ছুটি ঘোষণা করা হলেও বিক্ষিপ্ত অবস্থায় বিভিন্ন পয়েন্টে অবস্থান নেন শ্রমিকরা। এতে করে সড়কটিতে তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়েছে।
এদিকে, নবীনগর-চন্দ্রা মহাসড়কের পলাশবাড়ি, মূজারমিল, জিরানীবাজারসহ বিভিন্ন পয়েন্টে চাকরি প্রার্থী ও বিভিন্ন কারখানার শ্রমিকরা বিক্ষোভ করেন। এতে ওই মহাসড়কে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। এছাড়া চক্রবর্তী এলাকার নরবান কমটেক্স কারখানার সামনে শত শত শ্রমিক বিক্ষোভ করে রাস্তা বন্ধ করে দেন। এসময় বিক্ষুব্ধ শ্রমিকরা একটি প্রাইভেটকার ভাঙচুর করেন। তবে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে কাজ করছে সেনাবাহিনী, বিজিবি ও শিল্পপুলিশ।
এছাড়া জিরানী বাজার, টেংগুরী গোহাইলবাড়ি ও মেশিনপাড় এলাকার বেশ কয়েকটি কারখানার সামনে পাহাড়া বসিয়ে ভেতরে উৎপাদন অব্যাহত রেখেছে।
শিল্পপুলিশ-১-এর পুলিশ সুপার মো. সারোয়ার আলম বলেন, শ্রমিকদের বিক্ষোভের মুখে বাইপাইল-আবদুল্লাহপুর সড়কের জিরাবো এলাকা পর্যন্ত সড়কের উভয় পাশে হামীম, শারমীনসহ অন্তত ৬০টি কারখানা ছুটি ঘোষণা করতে বাধ্য হয়েছে কর্তৃপক্ষ। সকাল সাড়ে ৮টা থেকে শ্রমিকরা উদ্ভুত পরিস্থিতির সৃষ্টি করেন। পরে কর্তৃপক্ষ কারখানা ছুটি ঘোষণা করে। শ্রমিকরা এখনো সড়কে রয়েছেন, আমরা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি।
Leave a Reply