সুগভীর চক্রান্ত ও দেশি-বিদেশি ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে অবৈধ পন্থায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকারকে হটানো হয়েছে বলে দাবি করেছেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানক। সারাদেশে চলমান রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতা ও নৈরাজ্য নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন তিনি।
বুধবার গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে এসব কথা বলেন জাহাঙ্গীর কবির নানক।
নানক বলেন, গত ৫ আগস্ট দেশি-বিদেশি সুগভীর চক্রান্ত ও ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে অবৈধ পন্থায় বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনার নেতৃত্বে পরিচালিত সরকারকে হটানো হয়েছে। এরপর সমগ্র বাংলাদেশে নিবির্চারে হামলা, ভাঙচুর, লুটপাট, অগ্নিসংযোগ ও নারকীয় হত্যাযজ্ঞের মাধ্যমে ভয় ও ত্রাসের রাজস্ব সৃষ্টি করা হয়। স্থিতিশীল ও গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র ব্যবস্থাকে কুক্ষিগত করে নৈরাজ্যবাদীরা। সারাদেশে পুলিশের থানাগুলোতে হামলা, ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ ও পুলিশ বাহিনীর সদস্যদের হত্যার মাধ্যমে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি বিনষ্ট করে এক অরাজক পরিস্থিতি সৃষ্টি করা হয়।
তিনি আরো বলেন, পুলিশ বাহিনীর সদস্যদের মনোবল ভেঙে দেওয়া হয়। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি শূন্য পর্যায়ে নামিয়ে এনে ইতিহাসের ভয়াবহতম সন্ত্রাসের বিস্তার ঘাটানো হয় এবং সেটাকে নৈতিক বৈধতা দেয় সন্ত্রাসভিত্তিক রাজনৈতিক অপশক্তি। তাদের ন্যক্কারজনক কর্মকাণ্ডের শিকার হয় আওয়ামী লীগের নেতাকর্মী ও সনাতনী ধর্মবিলম্বী জনগোষ্ঠীসহ দেশের সাধারণ মানুষ। এতে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীসহ সহস্রাধিক মানুষ প্রাণ হারায়, অগণিত মানুষ আহত হয়। আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের বাড়িঘর, অফিস ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে হামলার পাশাপাশি অগ্নিসংযোগ করা হয়।
সহিংসতায় জড়িতদের প্রতি ক্ষোভ প্রকাশ করে আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য বলেন, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয় ও সভাপতির রাজনৈতিক কার্যালয়সহ সারাদেশে ১০ হাজারের মতো দলীয় স্থাপনায় হামলা, ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ ও লুটপাট করা হয়েছে। বাংলাদেশের স্বাধীনতার স্মৃতি বিজড়িত জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ঐতিহাসিক বাসভবন ধানমন্ডির ৩২ নম্বরের বাড়িতে অগ্নিসংযোগ করে ভস্মীভূত করা হয়েছে। বঙ্গবন্ধুর শেষ স্মৃতি চিহ্নটুকুও মুছে ফেলা হয়েছে।
বিবৃতিতে তিনি বলেন, গত ৫ আগস্টের ঘটনার পরে একে একে বাংলাদেশের ঐতিহ্য, কৃষ্টি ও সংস্কৃতির উপর আঘাত হানা হচ্ছে। স্বাধীনতা যুদ্ধের অন্যতম স্মৃতি মেহেরপুরের আম্রকানন মুজিব নগর যাদুঘর, জাতির পিতার ভাস্কর্য, প্রতিমূর্তি, জয়নুল আবেদীনের ভাস্কর্য ভাঙ্গার পাশাপাশি দেশের বিভিন্ন স্থানে ভাস্কর্য ভাঙচুর করা হয়েছে। এ ধরনের হীন অপচেষ্টা বাঙালির ঐতিহ্য ও চেতনার মূলে আঘাত, যা বাংলাদেশের ইতিহাস, ঐতিহ্য ও স্বাধীনতার চেতনায় বিশ্বাসী সবাইকে ব্যথিত ও মর্মাহিত করেছে।
আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে এ ধরনের ন্যাক্কারজনক কর্মকাণ্ডের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানান জাহাঙ্গীর কবির নানক।
Leave a Reply