দ্বাদশ সংসদে হবিগঞ্জ-৪ আসন থেকে নির্বাচিত সৈয়দ সায়েদুল হক সবচেয়ে দামি গাড়ি এনেছেন।
কাস্টমসের শুল্কায়নের নথি অনুযায়ী, গাড়িটির আমদানিমূল্য দেখানো হয় ১ লাখ ১১ হাজার ডলার বা ১ কোটি ২৬ লাখ টাকা। কাস্টমস শুল্কায়নমূল্য (যে দাম ধরে শুল্ক আরোপ করা হয়) নির্ধারণ করে ১ কোটি ২৮ লাখ টাকা। এ ধরনের গাড়ির শুল্কহার ৮২৬ দশমিক ৬০ শতাংশ। এ হিসাবে শুল্ককর আসে ১০ কোটি টাকার বেশি।
জাপানের ক্রস কনটিনেন্ট করপোরেশন থেকে গাড়িটি আমদানি করা হয়। এটি ২০২৪ সালে তৈরি। সিলিন্ডার ক্যাপাসিটি (সিসি বা ইঞ্জিন–ক্ষমতা) ৩ হাজার ৩৪৫।
সাবেক সংসদ সদস্য সৈয়দ সায়েদুল হক সুমন একটি সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছেন, ‘শুল্কমুক্ত সুবিধা থাকলেও ছয় লাখ টাকা অগ্রিম আয়কর (এআইটি) দিয়েছি। দ্বাদশ সংসদের মেয়াদের সময় গত ২০ জুন গাড়িটি খালাস করেছি। তবে এখনো নিবন্ধন করিনি। কারণ আমার পুরোনো গাড়িটি বিক্রির পর মালিকানা বদলের প্রক্রিয়া শেষ হয়নি। আমি একটি গাড়িই রাখব।’
দ্বিতীয় সর্বোচ্চ দামি গাড়ি এনেছেন মাগুরা-১ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ও ক্রিকেটার সাকিব আল হাসান। গত ৩০ জুলাই তিনি গাড়িটি খালাস করেন। তিনি গাড়ি এনেছেন সিঙ্গাপুরের টয়োটা টুশো এশিয়া প্যাসিফিক প্রাইভেট লিমিটেড থেকে। তার গাড়ির ব্র্যান্ডও টয়োটা এলসি স্টেশন ওয়াগন জিআর-এস। গাড়িটির সিলিন্ডার ক্যাপাসিটি ৩ হাজার ৩৪৬।
সাকিব আল হাসানের গাড়িটির আমদানিমূল্য দেখানো হয় ১ কোটি ১৪ লাখ জাপানি ইয়েন বা ১ কোটি ৬ লাখ টাকা। এই গাড়িরও শুল্কহার ৮২৬ দশমিক ৬০ শতাংশ। গাড়িটির শুল্কায়ন মূল্য প্রায় ১ কোটি ৮ লাখ টাকা। এ হিসাবে গাড়িটির শুল্ককর আসে ৮ কোটি ৯২ লাখ টাকা। সংসদ সদস্য হিসেবে শুল্কমুক্ত সুবিধা পেয়েছেন সাকিব আল হাসান। শুধু অগ্রিম কর বাবদ ৫ লাখ ৩৯ হাজার টাকা পরিশোধ করতে হয়েছে।
সব মিলিয়ে খালাস হওয়া ছয়টি গাড়িতে সাড়ে ৫১ কোটি টাকা শুল্কসুবিধা পেয়েছেন সাবেক সংসদ সদস্যরা।
কাস্টমস সূত্র জানায়, চট্টগ্রাম বন্দর দিয়ে আমদানি হাওয়ার পরও আটকে যাওয়া ৪ গাড়ির মধ্যে বগুড়া-৫ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য মজিবুর রহমান মজনু ও সিরাজগঞ্জ-২ সাবেক সংসদ সদস্য জান্নাত আরা হেনরির গাড়ির শুল্কায়নও শেষ হয়েছে। তবে তারা খালাস করতে পারেননি। আবার ময়মনসিংহ-৭ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য এ বি এম আনিসুজ্জামান এবং টাঙ্গাইল-৮ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য অনুপম শাহজাহানের দুটি গাড়ি শুল্কায়ন শেষ হওয়ার আগেই দ্বাদশ সংসদ ভেঙে দেওয়া হয়। এতে এই দুই গাড়িও আটকে গেছে।
চট্টগ্রাম কাস্টমস কমিশনার মোহাম্মদ ফাইজুর রহমান জানিয়েছেন, দ্বাদশ জাতীয় সংসদের মেয়াদের সময় যেসব গাড়ি শুল্কায়ন হয়েছে, সেগুলো খালাস হয়েছে।
দ্বাদশ সংসদ ভেঙে দেওয়ার পর যেসব গাড়ি আমদানি হচ্ছে, সেগুলো শুল্কমুক্ত খালাসের সুযোগ নেই। তবে দ্বাদশ সংসদের মেয়াদের সময় আমদানি হলেও খালাস হয়নি, এ রকম চারটি গাড়ি আটকে দেওয়া হয়েছে। এ বিষয়ে সিদ্ধান্তের জন্য জাতীয় রাজস্ব বোর্ডে (এনবিআর) চিঠি দেওয়া হয়েছে।
Leave a Reply