ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে সরকার পতনের পর বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদের খতিব মাওলানা মুফতি রুহুল আমীন ‘আত্মগোপনে’ চলে যান। এরপর থেকে তিনি কর্মস্থলে আর আসেননি। ফলে গত ৫ আগস্ট থেকে জাতীয় মসজিদে জুমার নামাজে ইমামতির জন্য দু’জন সরকারি কর্মকর্তাসহ চারজনকে দায়িত্ব দিয়েছে ইসলামিক ফাউন্ডেশন।
২০২২ সালের ৩১ মার্চ নিয়োগ পাওয়া খতিব মুফতি রুহুল আমীনের বাড়ি গোপালগঞ্জে। তিনি ২০১৮ সালের নির্বাচনে নড়াইল-১ আসন থেকে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন চেয়েছিলেন। ছাত্র জনতার গণঅভ্যুত্থান চলাকালে গত ২৬ জুলাই থেকে তিনি কর্মস্থলে অনুপস্থিত। কর্মস্থলে অনুপস্থিতির কারণ জানতে চেয়ে গত ২৯ আগস্ট তাকে নোটিশ দিয়েছে ইসলামিক ফাউন্ডেশন। তার বিরুদ্ধে কেন ব্যবস্থা নেওয়া হবে না তা জানতে ৭ দিন সময় দেওয়া হয় নোটিশে। যার সময়সীমা গত ৫ সেপ্টেম্বর শেষ হয়েছে। কিন্তু খতিবের দিক থেকে জবাব আসেনি। গতকাল শুক্রবার জুমার নামাজে তিনি আসেননি।
জানা যায়, খতিব রহুল আমিন বর্তমানে গোপালগঞ্জে রয়েছেন। তিনি সেখানকার গওহরডাঙ্গা মাদ্রাসার মহাপরিচালকও। কয়েক দফা চেষ্টা করেও তার সঙ্গে যোগাযোগ করা যায়নি। মাদ্রাসার শিক্ষক ও খতিবের ঘনিষ্ঠজন সূত্রে জানা গেছে, খতিব অসুস্থ। তিনি পরিপূর্ণ বিশ্রামে রয়েছেন।
জানা গেছে, হাফেজ মাওলানা ড. মুফতি ওয়ালিয়ুর রহমান খান বিগত দুই জুমাতেও খতিবের দায়িত্ব পালন করেছেন। তিনি ইসলামিক ফাউন্ডেশন বাংলাদেশের মুহাদ্দিস (৫ম গ্রেড) পদে ১৮ বছর ধরে কর্মরত। ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় (কুষ্টিয়া) থেকে পিএইচডি ডিগ্রি অর্জন করেছেন তিনি।
ড. মুফতি ওয়ালিয়ুর রহমান খান বাংলাদেশ কওমি মাদ্রাসা শিক্ষাবোর্ড বেফাকের সাবেক মহাসচিব ও আজীবন সহসভাপতি, ফরিদাবাদ জামিয়া ও দারুল উলুম মিরপুর-৬ মাদ্রাসার অধ্যক্ষ এবং জামিয়া ইমদাদিয়ার সাবেক উপাধ্যক্ষ সাবেক জাতীয় সংসদ সদস্য হজরত মাওলানা আতাউর রহমান খানের দ্বিতীয় ছেলে। তিনি হিফজুল কোরআন থেকে শুরু করে কওমি মাদ্রাসার সর্বোচ্চ স্তর দাওরায়ে হাদিস পর্যন্ত কিশোরগঞ্জের জামিয়া ইমদাদিয়াতে পড়াশোনা করেছেন।
এছাড়া, ঢাকা নেসারিয়া কামিল মাদ্রাসা থেকে কৃতিত্বের সঙ্গে কামিল পাস করেন। একটি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতকোত্তর (এমএ) ডিগ্রি নেন। দেশের অন্যতম শীর্ষ কওমি মাদ্রাসা রাজধানী ঢাকার জামিয়া হুসাইনিয়া আরজাবাদ মাদ্রাসা থেকে ইফতা (মুফতি) সনদ লাভ করেন।
সৌদি আরবের ৪৩তম বাদশাহ আবদুল আজিজ আন্তর্জাতিক হিফজুল কোরআন ও তাফসির প্রতিযোগিতায় ড. মুফতি ওয়ালিয়ুর রহমান খান বিচারক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। এছাড়া, ওআইসি যুব কেরাত প্রতিযোগিতার বিভিন্ন অধিবেশনে এবং জাতীয় শিশু-কিশোর কোরআন প্রতিযোগিতায় তিনি বিচারক হিসেবে সংশ্লিষ্ট সবার আস্থা অর্জন করেছেন।
Leave a Reply