দেশের ১০টি ব্যাংক দেউলিয়া হওয়ার পথে। বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আহসান এইচ মনসুর বলেন, কেন্দ্রীয় ব্যাংক গ্রাহকদের স্বার্থকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দেবে। তিনি আরও বলেন, কোনো ব্যাঙ্ক দেউলিয়া হয়ে গেলে এই তহবিল থেকে গ্রাহক সর্বোচ্চ কত টাকা পাবেন। রোববার (৮ সেপ্টেম্বর) বিকেলে সংবাদ সম্মেলনে গভর্নর এসব কথা বলেন।
বিশিষ্ট এই অর্থনীতিবিদ বলেন, কেন্দ্রীয় ব্যাংকের পক্ষ থেকে কোন ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের অ্যাকাউন্ট ফ্রিজ করা হয়নি। যেকোনো ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠান হোক– তাদের কার্যক্রম স্বাভাবিক অবস্থানে চলবে। তাদের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বেতনভাতা দিবে। কেউ কেউ এই বিষয়গুলো নিয়ে অপপ্রচার চালিয়েছে, হতে পারে কোন ব্যাংক নিজ থেকে অতি-উৎসাহিত হয়ে করেছে।
তিনি আরও বলেন, এখন পর্যন্ত কোনো এস আলম, বেক্সিমকোসহ কোনো ব্যবসায়িক হিসাব বন্ধ করা হয়নি। এর মূল কারণ আমরা চাই সব প্রতিষ্ঠান সচল থাকুক। এছাড়া কেউ এস আলমের সম্পদ কিনলে নিজ দায়িত্ব কেনার পরামর্শ দেন তিনি।
গভর্নর বলেন, দেশের ১০টি ব্যাংক ইতোমধ্যে দুর্বল অবস্থায় আছে। গ্রাহকদের স্বার্থকে আমরা সর্বোচ্চ গুরুত্ব দেব। আমাদের চেষ্টা থাকবে দুর্বল পর্যায়ে থাকা ব্যাংকগুলো যেন ঘুরে দাঁড়াতে পারে, আমরা সেই চেষ্টা করব। ব্যাংকগুলোকে টেকনিক্যাল, অ্যাডভাইজারি ও লিকুউডিটি সুবিধা দেব।
আমরা চাই না কোনো ব্যাংক বন্ধ হোক। যেকারণে কেন্দ্রীয় ব্যাংক সব ব্যাংকের পাশে দাঁড়িয়েছে। এরই মধ্যে ১০টি ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদ ভেঙে পুনর্গঠন করা হয়েছে। এসব ব্যাংককে সব ধরনের সহায়তা দেওয়া হচ্ছে। আমরা আশা করি দ্রুত ব্যাংকগুলো ঘুরে দাঁড়াবে – আরও বলেন তিনি।
গভর্নর বলেন, আমানত বীমা তহবিল থেকে ফেরতের পরিমাণ বাড়িয়ে দ্বিগুণ করা হচ্ছে। কোনো ব্যাংক দেউলিয়া হলে এ তহবিল থেকে গ্রাহক সর্বোচ্চ দুই লাখ টাকা ফেরত পাবেন। এর ফলে ৯৪ দশমিক ৬০ শতাংশ আমানত হিসাব সুরক্ষিত হবে। এতদিন এ তহবিল থেকে সর্বোচ্চ ১ লাখ টাকা ফেরত দেওয়ার বিধান ছিল।
তিনি আরও বলেন, এসএমই ঋণের জন্য বাংলাদেশ ব্যাংকের কাছে টাকা আছে। কিন্তু ক্ষুদ্র উদ্যোক্তাদের দিতে পারছি না। শুধু তাই নয়, বিশ্বব্যাংক ও আইএমএফ ক্ষুদ্র উদ্যোক্তাদের জন্য বিনিয়োগ করতে চায়। কিন্তু ব্যাংকগুলো এসব ফান্ড থেকে টাকা নিয়ে বিতরণ করছে না। আমরা ব্যাংকগুলোকে লিখিতভাবে এই সমস্যা কারণ এবং সমাধান জানাতে বলেছি। খুব শিগগিরই ক্ষুদ্রঋণের প্রবাহ ব্যাপকভাবে বাড়বে বলে আশাবাদী তিনি।
তিনি বলেন, টাস্কফোর্সের মাধ্যমে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের আগের সকল নীতিমালা, গাইডলাইনগুলো পর্যালোচনা করা হবে। যদি দেখা যায় যে কোন নীতিমালা শুধু গুটিকয়েক ব্যবসায়ীর জন্য করা হয়েছে– তাহলে সেটা বাতিল হবে। আর যদি প্রয়োজন হয়, তাহলে নতুন করে সেট করা হবে। একইসঙ্গে ব্যাংক খাতের পরিবারতন্ত্রও ভাঙ্গা হবে।
Leave a Reply