free tracking

ঘুমের সময় মুখ দিয়ে কেন লালা পড়ে, প্রতিকারে করণীয় কী!

অনেকেই আছেন যারা ঘুমিয়ে পড়লে মুখ দিয়ে নিজের অজান্তেই লালা পড়তে থাকে। বিষয়টি খুবই বিড়ম্বনার হলেও অজান্তেই হয়ে যায়। এ নিয়ে পরিবারের সদস্য কিংবা বন্ধুমহলে কথা উঠলে লজ্জায় কিছুই বলার থাকে না। কেউ কেউ অবশ্য লালা পড়া বন্ধ করার জন্য বিভিন্ন উপায় খুঁজে বেড়ান।

সাধারণত ঘুমের সময় মুখ থেকে লালা পড়া বন্ধ করার জন্য ঘুমের অভ্যাসে পরিবর্তন এবং কিছু নিয়মকানুন মেনে চললে এই সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়া যায়। এ নিয়ে উইকিহাউ একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। এবার তাহলে প্রতিবেদন অনুযায়ী লালা পড়া বন্ধে করণীয়গুলো জেনে নেয়া যাক।

চিত হয়ে ঘুমানোর অভ্যাস: কাত বা উপুড় হয়ে ঘুমানোর কারণে অভিকর্ষজ টান থেকে মুখ দিয়ে লালা পড়ে থাকে। এতে মুখের গাল গড়িয়ে তা বালিশ এবং অনেক সময় কাঁথা পর্যন্ত পৌঁছে যায়। ফলে বালিশ ও কাঁথা ভিজে দুর্গন্ধ হয়। এই সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্য চিত হয়ে ঘুমানোর অভ্যাস করতে পারেন। আর রাতে যেন কাত বা উপুড় হয়ে না ঘুমিয়ে পড়েন, সেটি নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করুন।

উচু বালিশ ব্যবহার: প্রতিদিনের ঘুমানোর বালিশটি একটু খেয়াল করুন। হয়তো আপনার বালিশটি নিচু। ঘুমানোর সময় মাথা যেন শরীরের সমতল থেকে কিছুটা উচুতে থাকে, সেটি নিশ্চিত করুন। মাথা যদি শরীরের সমতল থেকে কিছুটা উচুতে থাকে, তাহলে মুখ বন্ধ থাকবে এবং স্বাভাবিকভাবেই লালা পড়বে না।

মুখ দিয়ে শ্বাস নেয়া বন্ধ করা: এমন অনেকেই আছেন যারা ঘুমের সময় নাকের পরিবর্তে মুখ দিয়ে শ্বাস নেন। এ কারণেও মুখ দিয়ে লালা পড়ে থাকে। নাকের ন্যাসাল সাইনাস বন্ধ বা আটকা থাকলে মুখ দিয়ে শ্বাস-প্রশ্বাস নেয়ার প্রবণতা বেড়ে যায়। এ জন্য ঘুমের সময় নাক দিয়ে শ্বাস-প্রশ্বাস নেয়ার অভ্যাস করুন। আর যদি নাকে সাইনাসে সমস্যা থাকে তাহলে রাতে ঘুমাতে যাওয়ার আগে ইউক্যালিপটাসের মতো এসেনশিয়াল তেল ব্যবহার করুন। এতে সাইনাস থেকে কিছুটা রক্ষা পাওয়া যায়, ঘুমও ভালো হয়। এছাড়া প্রয়োজনে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।

পার্শ্বপ্রতিক্রিয়াযুক্ত ওষুধের জন্যও লালা পড়ে: কিছু ওষুধ রয়েছে যেগুলোর পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার কারণে লালা তৈরি হয়। ফলে ঘুমের সময় মুখ দিয়ে লালা পড়ে। এ জন্য ওষুধ সেবন করা হলে সেখান থেকে তা নির্ধারণ করার চেষ্টা করুন। সাময়িক সময়ের জন্য ওষুধ হলে তা ওষুধের ডোজ শেষ হলেই ঠিক হয়ে যাবে। তবে এরপরও যদি লালা পড়তে থাকে, তাহলে ডাক্তার দেখাতে হবে।

ঘুমের ব্যাঘাত: স্লিপ অ্যাপনিয়া বা ঘুমে ব্যাঘাত থেকেও ঘুমের সময় লালা পড়ে। এ জন্য ঘুমে ব্যাঘাত হচ্ছে কিনা, সেটি অবশ্যই খেয়াল রাখতে হবে। নাক ডাকা, ঘন ঘন শ্বাস-প্রশ্বাস হওয়া ও লালা পড়া হচ্ছে এই রোগের অন্যতম লক্ষণ। মূলত ধূমপান, উচ্চ রক্তচাপ বা স্ট্রোকের উচ্চ ঝুঁকি থাকলে এই সমস্যা হয়ে থাকে।

ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখা: যুক্তরাষ্ট্রে স্লিপ অ্যাপনিয়া ভোগা ১২ কোটি মানুষের মধ্যে অর্ধেকেরও বেশি মানুষের ওজন স্বাভাবিকের থেকে বেশি। স্বাস্থ্যকর খাবার খাওয়া ও ব্যায়ামের মাধ্যমে ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখতে হবে। কারণ, অতিরিক্ত ওজন শ্বাস-প্রশ্বাসে চাপ সৃষ্টি করে।

প্রয়োজনে সার্জারি: ঘুমের সময় লালা পড়া রোধে প্রচলিত কিছু সার্জারি রয়েছে। ইউপিও, সমনোপ্লাস্টি, ন্যাজাল সার্জারি, ম্যান্ডিবুলার অ্যাভান্সমেন্ট সার্জারি, টনসিলেকটমিসহ বিভিন্ন ধরনের সার্জারি রয়েছে। যদি বিভিন্ন উপায় অবলম্বন করেও লালা পড়া বন্ধ করতে না পারেন, তাহলে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী সার্জারি করাতে পারেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *