free tracking

খালেদা জিয়াকে বিদেশ নিতে দেরি কেন? জানালেন ব্যক্তিগত চিকিৎসক জাহিদ হোসেন!

দ্রুততম সময়ের মধ্যেই খালেদা জিয়াকে বিদেশে পাঠানোর বিষয়টি পর্যালোচনা করছে মেডিকেল বোর্ড। বৃহস্পতিবার (১২ সেপ্টেম্বর) দুপুরে নয়াপল্টনে কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে বিএনপি চেয়ারপারসনের ব্যক্তিগত চিকিৎসক অধ্যাপক এজেডএম জাহিদ হোসেন একথা বলেন।

তিনি বলেন, ম্যাডাম গত সাড়ে চার বছর যাবৎ বিভিন্ন সময়ে এভারকেয়ার হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন। আমরা উনাকে গত ২১ আগস্ট রিলিজড করে বাসায় নিয়ে এসেছিলাম, আবার বুধবার (১১ সেপ্টেম্বর) দিবাগত রাতে উনাকে ভর্তি করতে হয়েছে। অনেকে বলতে পারেন, তাহলে উনাকে (খালেদা জিয়াকে) দেশের বাইরে নিচ্ছেন না কেনো? কিন্তু একজনকে বাইরে নিতে হলে শারীরিক সুস্থতা প্রয়োজন। প্লেনে উঠতে হলে নেগেটিভ প্রেসার সহ্য করার মতো সুস্থতা থাকতে হয়। ফ্লাই করার জন্য নেগেটিভ প্রেসার আছে সেটা কতটুকু? ল্যান্ড করার সময়ে কতটুকু উনি সহ্য করতে পারবেন। সেটি একাডেমিক, প্রফেশনাল ও সায়েন্টিফিক বিষয়।

মেডিকেল বোর্ড সেই বিষয়গুলো বিবেচনায় নিয়ে দেশি-বিদেশি সদস্যরা আলোচনা করছেন এবং শারীরিকভাবে উনি একটু সুস্থ হলেই যত দ্রুত দেশের বাইরে নেয়া হবে উন্নত সেন্টারে ফলোআপের জন্য। কেনো উন্নত সেন্টারে নেয়া জরুরি সে বিষয় উল্লেখ করে অধ্যাপক জাহিদ বলেন, উনার (খালেদা জিয়া) কিছু রোগের সৃষ্টি হয়েছে যেগুলো সত্যিকার অর্থে বাইরের আধুনিক সেন্টারে নিয়ে দেখানো ছাড়া এবং তাদের (বিশেষজ্ঞ ডাক্তারদের) পরামর্শ নেয়া ছাড়া আর কোনো উপায় নেই। ম্যাডামের জন্য আপনারা সবাই দোয়া করবেন। উনি আাপনাদের মাধ্যমে দেশবাসীর কাছে সুস্থতার জন্য দোয়া চেয়েছেন।

তিনি বলেন, শেখ হাসিনার সরকার ম্যাডামকে জেলে নেয়ার পর একাকীত্ব, উনার চিকিৎসা না করানো এবং ‍উনাকে আস্তে আস্তে সংকটাপন্ন একটা অবস্থায় নেয়া বিগত সরকারের সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনার অংশ ছিল। তাকে বিএসএমএমইউতে ভর্তি করানো হয়েছিলো। কিন্তু সেখানে যে চিকিৎসা হওয়া উচিত ছিলো তা সঠিকভাবে হয়নি। যার কারণে ম্যাডামের শারীরিক অবস্থা এই পর্যায়ে পৌঁছেছে যে, উনাকে কয়েকদিন পরপরই হাসপাতালে নিতে হচ্ছে।

এদিকে বুধবার (১১ সেপ্টেম্বর) দিবাগত রাতে অর্থাৎ রাত ২ টায় গুলশানের বাসা ‘ফিরোজা’ থেকে বিএনপি চেয়ারপারসনকে এভারকেয়ার হাসপাতালে নিয়ে ভর্তি করা হয়। জাহিদ জানান, মেডিকেল বোর্ডের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী রাতে ম্যাডামকে এভারকেয়ার হাসপাতালে ম্যাডামকে ভর্তি করা হয়েছে। উনি কেবিনে আছে। মেডিকেল বোর্ড উনার বেশ কিছু পরীক্ষা-নিরীক্ষার দিয়েছেন। সেগুলোর কাজ চলছে।

অধ্যাপক শাহাবুদ্দিন তালুদারের নেতৃত্বে একটি মেডিকেল বোর্ডের অধীনে চিকিৎসাধীন আছেন খালেদা জিয়া। ৭৯ বছর বয়সী খালেদা জিয়া দীর্ঘদিন লিভার সিরোসিস, ‍হৃদরোগ, ফুসফুস ও কিডন জটিলতা, আর্থ্রাইটিস, ডায়াবেটিসসহ বিভিন্ন জটিলতায় ভুগছেন।

গত বছরের লিভার সিরোসিসে আক্রান্ত বিএনপির চেয়ারপারসনের রক্তনালিতে অস্ত্রোপচার করা হয় গত বছরের ২৭ অক্টোবর। যুক্তরাষ্ট্র থেকে তিনজন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক এনে খালেদা জিয়ার রক্তনালিতে অস্ত্রোপচার করা হয়েছিল। তার স্বাস্থ্য কিছুটা স্থিতিশীল হলে পাঁচ মাসের বেশি সময় হাসপাতালে তাকে টানা চিকিৎসা নিতে হয়েছিল। গত ২৫ জুন এভারকেয়ার হাসপাতালে খালেদা জিয়ার ‍হৃদযন্ত্রে পেসমেকার বাসানো হয়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *