মানুষের আস্থা তৈরিতে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসসহ উপদেষ্টা পরিষদের সব সদস্য ও সমপদমর্যাদাসম্পন্ন সব ব্যক্তির সম্পদের হিসাব বিবরণী প্রকাশ করা হবে। বৃহস্পতিবার (১৯ সেপ্টেম্বর) উপদেষ্টা পরিষদের সভায় এ-সংক্রান্ত খসড়া নীতিমালা অনুমোদন হতে পারে বলে জানিয়েছেন বিষয়টি সম্পর্কে অবগত কর্মকর্তারা।
সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানান, খসড়া নীতিমালায় প্রধান উপদেষ্টা, সব উপদেষ্টা ও উপদেষ্টার মর্যাদায় নিয়োগপ্রাপ্ত অন্যান্য ব্যক্তিদের স্থায়ী ও অস্থায়ী সম্পদের হিসাব বিবরণী প্রতি বছর প্রকাশ করা হবে।
পুকুরের পানি সেচে লুট হওয়া অস্ত্র উদ্ধার
প্রধান উপদেষ্টার দায়িত্ব গ্রহণের পর জাতির উদ্দেশে দেয়া প্রথম ভাষণে ড. মুহাম্মদ ইউনূস সব উপদেষ্টার সম্পদ বিবরণী প্রকাশের অঙ্গীকার করার পর এ নীতিমালা প্রণয়নের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। ড. ইউনূস বলেছিলেন, বর্তমান সরকার দুর্নীতির বিরুদ্ধে স্পষ্ট অবস্থান গ্রহণ করেছে। আমাদের সকল উপদেষ্টা দ্রুততম সময়ের মধ্যে তাদের সম্পদের হিসাব বিবরণ প্রকাশ করবেন। পর্যায়ক্রমে এটি সকল সরকারি কর্মকর্তাদের ক্ষেত্রেও নিয়মিত ও বাধ্যতামূলক করা হবে। রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে দুর্নীতির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণে ন্যায়পাল নিয়োগ অধ্যাদেশ প্রণয়ন করা হবে।
এর আগে গত ৮ আগস্ট ড. ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তীকালীন সরকার দায়িত্ব গ্রহণের পর সকল সরকারি চাকরিজীবীদের সম্পদ বিবরণ দাখিল করা বাধ্যতামুলক করা হয়েছে। চাকরিজীবীদের সম্পদ বিবরণী প্রকাশ করার আগেই উপদেষ্টা পরিষদের সকল সদস্য ও সমমর্যাদা সম্পন্নদের সম্পদ বিবরণী প্রকাশ করতে আগ্রহী অন্তর্বর্তীকালীন সরকার।
রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে দুর্নীতি প্রতিরোধে দীর্ঘদিন ধরেই সরকারের মন্ত্রী, এমপি ও সরকারি চাকরিজীবীদের সম্পদের হিসাব বিবরণী প্রকাশের জন্য বিভিন্ন মহল থেকে দাবি উঠলেও সরকারগুলো তা বাস্তবায়ন করেনি। ২০০৮ সালের নির্বাচনি ইশতেহারে আওয়ামী লীগ মন্ত্রী-এমপিদের সম্পদের হিসাব প্রকাশের অঙ্গীকার করলেও তা পালন করেনি। গত কয়েকটি জাতীয় সংসদ ও উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে প্রার্থীদের দেয়া হলফনামায় বিভিন্ন মন্ত্রী, এমপি ও রাজনীতিবিদের সম্পদ কয়েকশগুণ পর্যন্ত বৃদ্ধির তথ্য উঠে এসেছে।
এর মধ্যে সাবেক আইজিপি বেনজীর আহমেদ, এনবিআরের সাবেক সদস্য মতিউর রহমানসহ বিভিন্ন সরকারি চাকরিজীবীর বিরুদ্ধেও ক্ষমতার অপব্যবহার করে ও দুর্নীতির মাধ্যমে অঢেল সম্পত্তির মালিক হওয়ার তথ্য পেয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
এসব সমস্যার সমাধানে রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে দুর্নীতি প্রতিরোধে উপদেষ্টাদের সম্পদের হিসাব প্রকাশের পাশাপাশি সরকারি চাকরিজীবীদের সম্পদের বিবরণী সরকারের কাছে দাখিল করা বাধ্যতামুলক করেছে। তারা কোন ফরম্যাট বা অভিন্ন ফরমে সম্পদের তথ্য বা বিবরণী সরকারের কাছে দাখিল করবেন, তা ঠিক করতে একটি কমিটি গঠন করেছে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়।
এ বিষয়ে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মো. মোখলেস উর রহমান সাংবাদিকদের বলেন, দুর্নীতির বিরুদ্ধে এটি একটি বার্তা। আয়করের বিবরণী সবাই জমা দেন না। যাদের করযোগ্য আয় আছে, তারাই কেবল দেন। আর এখন যাদের কোনো সম্পদ নেই, তাদেরও তথ্য বা বিবরণী জমা দিতে হবে। এটি জনস্বার্থে দিতে হবে।
Leave a Reply