ভারতে রপ্তানি না করার সিদ্ধান্তের পর সামাজিক মাধ্যমে ইলিশে দাম কমার তথ্য দেখে সম্প্রতি বাজারে গিয়ে অনেকেই বিভ্রান্ত হচ্ছেন। রপ্তানি না হওয়ার পরেও বাজারে মাছটির দাম নাগালের মধ্যে নেই বলে জানাচ্ছেন ক্রেতারা।
জেলের জালে ধরা পড়া ইলিশ তিন থেকে পাঁচ হাত ঘুরে ক্রেতার কাছে আসে বলে জানান সংশ্লিষ্টরা। এসব জায়গায় দামের তারতম্যের ওপর বাজারও ওঠানামা করে।
চাঁদপুরের আড়তগুলোতে দুদিন আগে তিন থেকে চারশো গ্রাম ওজনের প্রতি মণ ইলিশ বিক্রি হয়েছে ২৫ হাজার টাকার আশেপাশে। অন্য মাছের মতো ইলিশের ক্ষেত্রেও ওজনের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ে দাম। অর্থাৎ, মাছের আকার যত বড় হয়, কেজিপ্রতি দামও তত বেশি হয়ে থাকে।
এ ছাড়া, সমুদ্র-মোহনা থেকে ধরা মাছ আর নদীর উজানের মাছের ক্ষেত্রেও দামে বেশ কিছুটা পার্থক্য থাকে বলেও জানান মাছ বিক্রেতারা।
প্রায় এক কেজি ওজনের মাছের কেজিপ্রতি দাম উৎসে এক হাজার থেকে ১১০০ টাকা। আড়তে ওই আকৃতির মাছের দাম ওঠে ১৫০০ থেকে ১৬০০ টাকা।যা আরো দুই-তিনশো টাকা বেশি দামে কিনতে হয় ভোক্তাকে।
রাজধানীর হাতিরপুল বাজারে নয়শো গ্রাম থেকে এক কেজি ওজনের মাছের জন্য ১৮০০ টাকা পর্যন্ত হাঁকছেন বিক্রেতারা।
ইলিশের দাম না কমার পেছনে বেশ কিছু কারণ রয়েছে:
মৌসুমী সীমাবদ্ধতা: ইলিশ মাছের মৌসুম সাধারণত বর্ষাকালে, যখন নদীতে পর্যাপ্ত পানি থাকে। তবে বছরের অন্য সময়গুলোতে ইলিশের প্রাপ্যতা কম থাকে, যার ফলে দাম বৃদ্ধি পায়।
সরবরাহের ঘাটতি: ইলিশ মাছ প্রাকৃতিকভাবে নির্দিষ্ট কিছু এলাকায় পাওয়া যায়। যদি সেসব এলাকায় মাছের সরবরাহ কমে যায় বা মাছ ধরা বাধাগ্রস্ত হয়, তবে বাজারে এর প্রাপ্যতা কমে এবং দাম বেড়ে যায়।
জ্বালানি খরচ বৃদ্ধি: মাছ ধরার জন্য নৌকা বা ট্রলারে জ্বালানি ব্যবহৃত হয়। জ্বালানির দাম বৃদ্ধি পেলে তা মাছ ধরা এবং পরিবহনের খরচ বাড়িয়ে দেয়, যার ফলে ইলিশের দামও বাড়তে থাকে।
চাহিদা বেশি: ইলিশ মাছ বাংলাদেশসহ পশ্চিমবঙ্গের জনগণের মধ্যে অত্যন্ত জনপ্রিয়, তাই এর চাহিদা সবসময় বেশি থাকে। চাহিদা বেশি থাকলে সরবরাহ কম থাকায় দাম বেশি থাকে।
পরিবহন খরচ ও বাজার সিন্ডিকেট: মাছ বাজারে আসার আগে পরিবহন খরচ ও কিছু ক্ষেত্রে বাজার সিন্ডিকেটের মাধ্যমে দাম নিয়ন্ত্রিত হয়, যা দাম বাড়িয়ে দিতে পারে।
এই কারণগুলো মিলিয়ে ইলিশের দাম অনেক সময় কমে না এবং সাধারণ মানুষকে বেশি দামে ইলিশ কিনতে হয়।
Leave a Reply