‘আমি আমার শ্বশুর আসাদুজ্জামান নূরের পাশে থাকব’!

কয়েক দিন আগে আটক করা হয়েছে সাবেক সংসদ সদস্য ও সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব আসাদুজ্জামান নূরকে। তিনি স্বৈরাচারী সরকার শেখ হাসিনার আমলের সংসদ সদস্য ও সংস্কৃতিমন্ত্রী ছিলেন। তাকে গ্রেপ্তার করায় নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছেন সংস্কৃতিকর্মীসহ সাধারণ মানুষের অনেকে।

এবার সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে শ্বশুর আসাদুজ্জামান নূরের পাশে থাকার কথা জানিয়েছেন পুত্রবধূ ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সহযোগী অধ্যাপক কাজলী শেহরিন ইসলাম।

ফেসবুকে কাজলী শেহরিন ইসলাম লিখেছেন, ‘আমি সাধারণত সোশ্যাল মিডিয়ায় ব্যক্তিগত বিষয়ে তেমন কিছু লিখি না। কিন্তু আমরা তো জানি, ব্যক্তিগত বিষয়টা রাজনৈতিক। আমরা ভালো করেই জানি, বাংলাদেশে সব কিছুই রাজনৈতিক। আমরা কি আসাদুজ্জামান নূরকে তার রাজনীতির জন্য, বিশেষ করে ২০১৪ সাল থেকে আওয়ামী লীগ সরকারের অংশ হিসেবে, তার দল ও সরকারকে প্রকাশ্যে প্রশ্ন, সমালোচনা, নিন্দা না করার জন্য এবং তারা যা করেছে তা স্পষ্টভাবে সমর্থন করার জন্য সমালোচনা করতে পারি? হ্যাঁ।


তিনি লেখেন, ‘আমাদের কি ভুল তথ্য, ভুল-বোঝাবুঝি, সন্দেহ অথবা তার বিরুদ্ধে ব্যক্তিগত এবং রাজনৈতিক প্রতিহিংসা থাকতে পারে, যার ফলে সোশ্যাল মিডিয়া এবং অন্য কোথাও ঘৃণামূলক প্রচারণার সৃষ্টি হয়? ঠিক নয়, তবে সম্ভবত হ্যাঁ। একটি ন্যায্যবিচার ব্যবস্থায় প্রমাণ এবং একটি ন্যায্য আইনি প্রক্রিয়ার ভিত্তিতে তিনি যে অপরাধ করেছেন তার জন্য কি তাকে অভিযুক্ত করা যেতে পারে? হ্যাঁ।’

‘তিনি একজন প্রতিভাবান এবং জনপ্রিয় সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব বলে কি তাকে ক্ষমা করা উচিত? না। তিনি এত লোকের জন্য এত ভালো কাজ করেছেন বলে কি তাকে ক্ষমা করা উচিত? দুঃখের বিষয় হলেও, না।

তাকে (বা অন্য কাউকে) কি এমন অপরাধের জন্য অভিযুক্ত করা যেতে পারে, যার সাথে তার দূরবর্তী সংযোগ নেই, কোনো প্রমাণও নেই? না। এটা খুবই সহজ হিসাব।’
তিনি লেখেন, ‘আমি আমার ছাত্র, আমার জনগণ, আমার দেশের পাশে দাঁড়িয়েছিলাম, জুলাই আন্দোলন এবং পরবর্তীতে গণহত্যায়। কারণ, আমি জানতাম যে এটি সঠিক ছিল (আমি আমার শ্বশুরবাড়ি থেকে, তার চোখের সামনেই এই সমর্থন করেছি। তিনি আমাকে বাধা দেননি।

শুধু তা-ই নয়, আমার অধিকার রক্ষা করার জন্য নিজের চেয়ে শক্তিশালীদের বাধা ঠেকিয়েছেন)। সেই নৈতিক শক্তি থেকেই আমি আজ এই পোস্ট করতে পারলাম।’
তিনি দাবি করে বলেন, ‘পরিবর্তনের প্রয়োজন ছিল। পরিবর্তনের প্রয়োজন আছে। আমাদের সেই পরিবর্তনের জন্য আরো ভালোর জন্য, নিহত, আহত, আঘাতপ্রাপ্ত এবং আমরা যারা বেঁচে আছি লড়াই করছি তাদের জন্য কাজ চালিয়ে যেতে হবে। আমি কখনোই দ্বিধায় পড়ব না আমার সিদ্ধান্ত নিয়ে। যতই লোকে বলুক, দেখুন আপনি কী করেছেন, এসবের জন্য লড়াই করেছিলেন? কিছুই পরিবর্তন হয়নি, পরিবারের এসব তার জন্যই হয়েছে।

আমি আমার শ্বশুর আসাদুজ্জামান নূরের পাশে থাকব, যতক্ষণ না তিনি নিরপেক্ষ আদালতে দোষী প্রমাণিত হচ্ছেন। আমি জুলাই-আগস্টে সরব ছিলাম, আমি এখন এটি নিয়ে বলছি, সব সময়েই চাইব ন্যায়বিচার হোক।’

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *